টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে সুরিয়াকুমার যাদবের স্ট্রাইকরেট প্রায় ১৭০। সেই তিনিই কিনা ব্যাট করে গেলেন মাত্র ১০২ স্ট্রাইকরেটে। এমন বিপরীতধর্মী সুরিয়ার দেখা পাওয়া যাবে সেটা কেউ কি ভেবেছিল? সম্ভবত কেউই ভাবেনি। তবে সুরিয়া দলের জন্যে নিজের চিরায়ত ধ্বংসাত্মক রূপকে পাশে সরিয়ে রেখেছেন। এরপর দলকে নিয়েই তরী ভিড়িয়েছেন জয়ের বন্দরে।
ঘরোয়া ক্রিকেট হোক কিংবা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট, সর্বক্ষেত্রে তেড়েফুঁড়ে ব্যাটিং করতেই পছন্দ করেন সুরিয়া। উইকেটের চারিপাশে শটের পসরা সাজিয়ে বসেন তিনি। কিন্তু বৈশ্বিক কোন টুর্নামেন্ট এলেই কেমন একটা বিমর্ষ সুরিয়াকুমারের দেখা মিলত। সেই ধারা অব্যাহত ছিল এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম দুই ম্যাচেও।
যথাক্রমে ৪ বলে ২ ও ৮ বলে ৭ করে আউট হয়েছেন ডান-হাতি এই ব্যাটার। প্রশ্ন আবার জাগ্রত হয়েছিল, আদোতে সুরিয়া ম্যাচ উইনার কি-না। সেই প্রশ্নের উত্তরটা তিনি দিয়ে দিলেন তৃতীয় ম্যাচে। জিতলেই দল চলে যাবে সুপার এইটে। এমন সমীকরণের ম্যাচে অভিজ্ঞ বিরাট কোহলি ও রোহিত শর্মা ফিরেছেন দ্রুতই। আগের দিনের জয়ের ভিত গড়ে দেওয়া ঋষাভ পান্তও বেশিক্ষণ সঙ্গ দিতে পারেননি।
স্বাভাবিকভাবেই সুরিয়ার কাঁধে এসে পড়ে দলকে জয়ের রাস্তা দেখানোর। সে কাজটা দারুণ দক্ষতার সাথে করে গেছেন ‘মিস্টার থ্রি সিক্সটি ডিগ্রি’। নিউ ইয়োর্কের নাসাউ কাউন্টি ক্রিকেট স্টেডিয়ামের উইকেট বেশ দুর্বোধ্য। সেই উইকেটে তিনি সময় নিলেন। নিজের ইনিংসকে বড় করলেন। একেবারেই নিজের ধরণের বিপরীত ভঙ্গিমায় ব্যাটিং করে গেছেন তিনি।
একটা পর্যায়ে ৩৮ বলে ৩১ রান ছিল তার নামের পাশে। তখন প্রায় জয় হাতের কাছেই করছিল অবস্থান। তবুও সতর্কতা অবলম্বন করেই শট চালিয়েছেন সুরিয়া। তিনবার ওভার শুরুর নির্ধারিত সময় পার করে ফেলে যুক্তরাষ্ট্র। তাতে করে ৫ রানের জরিমানা করা হয় অ্যারন জোন্সদের। এরপরই যেন সুরিয়া খানিকটা ভরসা পেয়ে যান। কেননা কোন কিছু করা ছাড়াই ৫ রান যে পাওয়া গেছে, সেটা তো রীতিমত উপহার।
এরপরই শট চালিয়েছেন। নিজের স্ট্রাইকরেটকে ১০০ ছাড়া করেছেন। পাশাপাশি অর্ধ-শতকও হাঁকিয়েছেন। জয়ের জন্য যে সুরিয়া নিজেকেও বদলে ফেলতে পারেন, তেমন একটি উদাহরণ সৃষ্টি করলেন। তাছাড়া তাকে ঘিরে মাথাচাড়া দেওয়া সংশয়কেও মাটিচাপা দিলেন। নিজের দিনে এখনও ‘দ্য স্কাই ইজ অ্যা ম্যাচ উইনার’।