সুরিয়াকুমার, স্কাই ইজ দ্য লিমিট

ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ততম ফরম্যাটে চার চারটা সেঞ্চুরি – মোটেই ছেলের হাতের মোয়া নয়। এই অসাধ্য সাধন করতে রোহিত শর্মার লেগেছে ৭৯ ইনিংস আর গ্লেন ম্যাক্সওয়েল করেছেন ৯২ ইনিংসে। আরেকজনের ক্যারিয়ারেও আছে চারটা টি-টোয়েন্টি শতক, তবে স্রেফ ৫৭ ইনিংসেই সেটা করেছেন – তিনি সুরিয়াকুমার যাদব।

জোহানেসবার্গে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৫৬ বলে ১০০ রানের ইনিংস দিয়ে চতুর্থবারের মত তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগার ছুঁয়েছেন সুরিয়া। এর মধ্য দিয়ে তিনি ছাড়িয়ে গিয়েছেন রোহিত, ম্যাক্সওয়েলদের। যেভাবে ছুটছেন তাতে শীঘ্রই হয়তো সর্বোচ্চ সেঞ্চুরির মালিকও বনে যাবেন এই ডানহাতি।

জোফ্রা আর্চারকে লং লেগ দিয়ে ছক্কা মেরে শুরু, আর পিছনে ফিরে দেখতে হয়নি তাঁকে। মাত্র আড়াই বছরেই তিনি ছাড়িয়ে গিয়েছেন এই ফরম্যাটের বাঘা বাঘা ব্যাটারদের। টি-টোয়েন্টিতে তাঁর স্ট্রাইক রেট ১৭১.৫৫। অথচ রোহিতের ব্যাটিং গড় আর স্ট্রাইক রেটের যোগফল ১৭০.৫৬, ক্রিস গেইল ও এবি ডি ভিলিয়ার্সের ক্ষেত্রে সেটা যথাক্রমে ১৬৫.৪২ এবং ১৬১.২৮।

সুরিয়ার স্ট্রাইক রেট অনেক বেশি, সেজন্য আবার ভাববেন না তিনি কেবল ইনিংসের শেষে নেমে ঝড়ো ইনিংস খেলেন। অবিশ্বাস্য গতিতে রান তোলার পাশাপাশি বড় রান করার অভ্যাসও আছে তাঁর, অন্তত ৪৬ ছুঁই ছুঁই ব্যাটিং গড় সেই কথাই বলে। এমন ঈর্ষণীয় গড় আর স্ট্রাইক রেট থাকার পরও যদি এই ব্যাটার কেন নাম্বার ওয়ান সেই প্রশ্ন জাগে কারো মনে, তাহলে তাঁর ক্রিকেট বোঝা বাকি আছে এখনো।

ওয়ানডেতে ফ্লপ সুরিয়াকুমার যাদব টি-টোয়েন্টিতে সুপার ডুপার হিট – রহস্যময়ই বটে। তবে পিছনের কারণটা একেবারে পানির মত সরল। বিশ ওভারের খেলাটা তাঁর রক্তে মিশে গিয়েছে, তিনি জানেন কখন কি করতে হবে। তাই তো ইনিংসের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আত্মবিশ্বাসে টইটম্বুর থাকেন।

এই তারকাকে বর্তমান সময়ের মি. ৩৬০° বলা হয়। উইকেটের চারপাশে শট খেলতে পারদর্শী তিনি। কিন্তু কখনোই প্রি-প্ল্যানড শট খেলতে হয় তাঁকে, ডেলিভারির মিলিসেকেন্ডের মাঝেই শট সিলেকশন করেন। এভাবে ব্যাট করেই টি-টোয়েন্টির ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ছক্কা হাঁকিয়েছেন তিনি; তবে কি আন্দ্রে রাসেল, নিকোলাস পুরানদের মত পাওয়ার হিটার তিনি?

উত্তরটা নিশ্চিতভাবেই নেতিবাচক; পেশিশক্তিতে নয় বরং টাইমিং আর কবজির মোচড়েই বলকে বাউন্ডারি ছাড়া করেন সুরিয়া। হার্ড হিটিং ছাড়াই যে বিধ্বংসী হওয়া যায় সেটা তিনি না আসলে হয়তো জানাই হতো না। আর যেই ধারাবাহিক দেখাচ্ছেন তাতে মনে হচ্ছে আকাশ ছোঁয়ার আগে থামবেন না, কেননা তাঁর জন্য তো, স্কাই ইজ দ্য লিমিট।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link