তিন সেঞ্চুরির এক অতিমানবীয় ব্যাটিং কীর্তি

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ব্যাট হাতে রীতিমত রানের উৎসবই করেছে দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটাররা। শুরুতে কুইন্টন ডি কক, এরপর রাসি ভ্যান ডার ডুসেন এবং সবশেষ এইডেন মারক্রাম— তিন প্রোটিয়া ব্যাটারের সেঞ্চুরিতে ৪২৮ রানের রান পাহাড়ে বসেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। যা ওয়ানডে বিশ্বকাপ ইতিহাসের এখন সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহের নতুন রেকর্ড।

ধর্মশালায় বাংলাদেশ-আফগানিস্তান ম্যাচটা এগিয়েছিল অনেকটা ধীরলয়ে। তবে দিনের অন্য ম্যাচটার চিত্র আবার একদম বৈপরীত্যে পূর্ণ। দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ব্যাট হাতে রীতিমত রানের উৎসবই করেছে দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটাররা।

শুরুতে কুইন্টন ডি কক, এরপর রাসি ভ্যান ডার ডুসেন এবং সবশেষ এইডেন মারক্রাম— তিন প্রোটিয়া ব্যাটারের সেঞ্চুরিতে ৪২৮ রানের রান পাহাড়ে বসেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। যা ওয়ানডে বিশ্বকাপ ইতিহাসের এখন সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহের নতুন রেকর্ড।

অথচ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এ দিন টসে হেরে ব্যাটিং নেমে একরকম ধাক্কা দিয়েই শুরু হয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস। দুই চারে দারুণ শুরু করেও প্রোটিয়া অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা দ্বিতীয় ওভারেই ফেরেন দিলশান মাদুশঙ্কার বলে এলবিডব্লিউ হয়ে। ডুসেনকে নিয়ে ডি কক এরপর এগিয়েছেন রয়েসয়েই। তবে উইকেটে থিতু হওয়ার পরই ভয়ংকর হতে থাকে এ জুটি।

প্রথম দশ ওভারে ৪৮ রান তোলা দক্ষিণ আফ্রিকা ২০ ওভার শেষে পৌঁছে যায় ১১৮ রানে। দশ ওভারের ব্যবধানে ৩০ ওভার শেষে সেটি গিয়ে দাঁড়ায় ২০৬-এ। আফ্রিকার ইনিংসের এ গতিময়তার শুরুটা হয়েছিল কুইন্টন ডি কককে দিয়ে। শুরুতে সময় নিয়েছেন।

তবে খোলস বদলে আক্রমণাত্বক ভূমিকায় আবর্তিত হয়েছেন মোক্ষম সময়ে। ব্যক্তিগত অর্ধশতক তুলে নেওয়ার পর হাটেন সেঞ্চুরির পথে। ইনিংসের ৩১তম ওভারে সেই উপলক্ষ্যটা চলেও আসে। ৮৪ বলে তুলে  এরপর ডি ককের পথে এগিয়ে সেঞ্চুরি তুলে নেন রাসি ভ্যান ডার ডুসেনও।

তবে নতুন এক বিশ্বরেকর্ড গড়ে এ দুই সেঞ্চুরিয়ানকে ছাপিয়ে গিয়েছেন এইডেন মার্করাম। মাত্র ৪৯ বলে সেঞ্চুরি তুলে নিয়ে বিশ্বকাপে দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড নিজের করে নিয়েছেন এই প্রোটিয়া ব্যাটার।এর আগে বিশ্বকাপের দ্রুততম সেঞ্চুরির মালিক ছিলেন আয়ারল্যান্ডের কেভিন ও’ব্রায়েন। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ২০১১ বিশ্বকাপে ৫০ বলে শতরান করেছিলেন এই আইরিশ ব্যাটার। এক যুগ বাদে, এবার সেই রেকর্ডটাই নিজের করে নিলেন এইডেন মার্করাম।

তবে মারক্রামের দক্ষিণ আফ্রিকা এ দিন বেশ কয়েকটা দলগত রেকর্ডেও শীর্ষে উঠে এসেছে। এতদিন বিশ্বকাপের দলীয় সংগ্রহে শীর্ষে ছিল অস্ট্রেলিয়া। নিজ দেশের মাটিতে ২০১৫ সালে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৪১৭ রান করেছিল তাঁরা। স্কোরবোর্ডে ৪২৮ রান তুলে এবার রেকর্ডটাই নিজেদের করে নিল দক্ষিণ আফ্রিকা।

এখানেই শেষ নয়। এ নিয়ে বিশ্বকাপের মঞ্চে ৩ বার চার শতাধিক দলীয় সংগ্রহের রেকর্ড করলো প্রোটিয়ারা। যেখানে কোনো দলের একাধিক বারও এ কীর্তি নেই। ওয়ানডে ক্রিকেট ইতিহাসে সর্বাধিক বার ৪০০+ দলীয় সংগ্রহের রেকর্ডটা দক্ষিণ আফ্রিকার। এখন পর্যন্ত তাঁরা ৮ বার ৪০০-র বেশি রান করতে পেরেছে। সর্বাধিকবার ৪০০+ দলীয় সংগ্রহের দিক দিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার পরেই আছে ভারত। এখন পর্যন্ত তাঁরা ৪০০-বেশি সংগ্রহ পেয়েছে ৬ বার।

দক্ষিণ আফ্রিকা-শ্রীলঙ্কা ম্যাচে এত গুলো রেকর্ড গড়ার দিনে বিব্রতকর কিছু রেকর্ডে নাম লিখিয়েছে শ্রীলঙ্কাও। ২০০৯ সালে রাজকোটে লঙ্কানদের বিপক্ষে ৪১৪ রান তুলেছিল ভারত। যা এতদিন পর্যন্ত ছিল শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহের রেকর্ড। ১৪ বছর আগের ভারতের করা সেই সংগ্রহকে এবার ছাপিয়ে গেল দক্ষিণ আফ্রিকা।

লঙ্কানদের হয়ে এ দিন বল হাতে একদম নির্বিষ ছিলেন মাথিশা পাথিরানা। ১ উইকেট নিয়েছেন। তবে ১০ ওভারে হজম করেছেন ৯৫ রান। আর এখানেই বিব্রত এক রেকর্ড নাম লিখিয়েছেন এ তরুণ পেসার। বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার হয়ে এক ইনিংসে সবচেয়ে বেশি রান হজম করা বোলার এখন তিনিই। এর আগে ১৯৮৭ বিশ্বকাপে করাচিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৯১ রান হজম করেছিলেন আসান্থা ডি মেল।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...