এখনও রাজিন-অলকদের বিকল্পের খোঁজে সিলেট

২৪তম জাতীয় ক্রিকেট লিগে দুর্দান্ত শুরুর পর শেষদিকে এসেই সেই পুরোনো ছন্দে ফিরে গিয়েছিল সিলেট। ‘শেষ ভালো যার, সব ভালো তার’ এই প্রবাদটি যেন সিলেটের ক্রিকেটাররা ভুলেই গিয়েছিলেন। তাইতো শেষ দুই ম্যাচে এতো ছন্নছাড়া ব্যাটিং প্রদর্শন করেছেন ব্যাটাররা। ব্যাটিংয়ে সিলেটের দুর্বলতা বহুকাল ধরেই, সেই রাজিন-অলকদের সময় থেকেই।

বেশ কয়েক বছর ধরে সিলেট থেকে অনেক পেস বোলারই জাতীয় দলের অপরিহার্য সদস্য হয়ে ওঠেছেন, বিশেষ করে টেস্ট ক্রিকেটে। সেই তুলনায় এক জাকির হাসান ছাড়া রাজিন-অলকদের পর প্রতিভাবান কোনো ব্যাটার বের হয়নি সিলেট থেকে, যে কি-না জাতীয় দলে নিজের জায়গা পাকাপোক্ত করতে পারে।

গতবছর ছয় ম্যাচে ২১ পয়েন্ট নিয়ে ঢাকার সাথে ছিল সিলেটের রানারআপ লড়াই। সেখানেও ছিল যদি-কিন্তুর হিসাব-নিকাশ। শেষ ম্যাচে ঢাকা বিভাগ কোনো রকম চট্টগ্রামকে হারালেই সিলেটকে তৃতীয় হয়ে থাকতে হতো। কারণ চট্টগ্রামকে হারালে ঢাকার পয়েন্ট হতো ২৮, সিলেট থাকত সেই ২১ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে। এমন সমীকরণের ম্যাচে ঢাকাকে ২৭ রানে হারায় চট্টগ্রাম। ঢাকার হারেই ২১ পয়েন্ট নিয়েই লিগের রানার্সআপ ট্রফি আসে সিলেট শিবিরে।

রানারআপ ট্রফি বুঝে নেওয়ার দিনে ব্যাটিংয়ে আশার বাণী শুনিয়েছিলেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড পরিচালক ও সিলেট বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল। সংবাদ মাধ্যমকে ব্যাটিং সমস্যার কথা বলেছিলেন তিনি। সেটা কাটিয়ে উঠতে নতুন পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে জানিয়ে এসময় সিলেট বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক বলেছিলেন, আমাদের ব্যাটারদের কিছুটা সমস্যা আছে। যদিও এবার শীর্ষ ব্যাটাররা আমাদের সিলেটেরই। তবুও আমরা ভবিষ্যতে ব্যাটিংয়ে মনযোগী হবো। প্রয়োজনীয় পরিকল্পনা গ্রহণ করবো।

সিলেট থেকে পেসাররা জাতীয় পর্যায়ে যাচ্ছেন। ব্যাটসম্যান এবং স্পিনারদের সংখ্যাটা সে তুলনায় কম জানিয়ে শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল ভবিষ্যতের জন্য ব্যাটসম্যান ও স্পিনার তৈরিতে পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে উল্লেখ করে বলেছিলেন, ‘আমরা স্পিনার ও ব্যাটসম্যানদের আরও ভালোভাবে তৈরি করতে পরিকল্পনা নিচ্ছি। বিভাগীয়, জেলা কোচদের সাথে নিয়ে বিশেষ পরিকল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছে। এগুলো দীর্ঘমেয়াদী বিষয়। দ্রুত চাইলেই হবে না। অবস্থার আরও উন্নতির জন্য আমরা দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নিচ্ছি। অচিরেই সিলেট তথা দেশের ক্রিকেট এর সুফল পাবে।’

ব্যাটিংয়ে উন্নতি করার জন্য সিলেট আদৌ কোনো পরিকল্পনা নিয়েছিল কি-না তা অজানা। নিয়ে থাকলে হয়তো এবার জাতীয় ক্রিকেট লিগে ঢাকা মেট্রোর বিপক্ষের প্রথম ম্যাচটি ব্যাটারদের ব্যর্থতায় হারতে হতো না সিলেটকে। রবিবার সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম-২ এ ২০৫ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে সিলেট রান তুলেছে মাত্র ১১৬।

দলের বোলিং বিভাগ শক্তিশালী হলেও ব্যাটিংয়ের দুর্বলতা সেদিন ফুটে ওঠেছিল সিলেটের প্রধান রাজিন সালেহ’র কথায়। এক বছর পর সিলেটের কোচের দায়িত্ব ফিরে পাওয়া রাজিন সালেহ দলের বোলিং আক্রমণ নিয়ে বেশ সন্তুষ্ট মনে হলেও ব্যাটিং নিয়ে বেশ চিন্তিতই মনে হয়েছিল তাঁকে। রাজিন যেমনটা বলছিলেন, ‘আমাদের দলের শক্তির জায়গা হচ্ছে বোলিং। বোলিং বিভাগ অনেক শক্তিশালী তবে ব্যাটিংটা এভারেজ। কোচ হিসেবে আমাকে এই ঘাটতি নিয়েই দলের সাফল্য বের করতে হবে। আর আমি দলের সেরাটা বের করার চেষ্টা করে যাব ইনশাআল্লাহ। তবে ব্যাটিংয়ের দুর্বলতাটা মানতেই হবে।’

বোলারদের কল্যাণেই ২০৫ রানের সহজ লক্ষ্য পায় সিলেট। কিন্তু ব্যাটারদের ব্যর্থতায় ৮৮ রানের পরাজয় মেনেই মাঠ ছাড়তে হয়েছে স্বাগতিকদের। রাজিন-অলকদের পর একমাত্র জাকির হাসানই ব্যাটার হিসেবে লাল-সবুজের জার্সি গায়ে জড়িয়েছেন। পরে জাকির গত জাতীয় ক্রিকেট লিগে দলকে সামন থেকে নেতৃত্ব দেওয়ার পাশাপাশি হয়েছিলেন লীগের সেরা রান সংগ্রাহক (৪৪২)। সেই সুবাদে ডাক পান বাংলাদেশ ‘এ’ দলে।

সেখানে ভারত ‘এ’ দলের বিপক্ষে ম্যাচ বাঁচানো ১৭০ রানের ঝলমলে ইনিংসের সুবাদে ঢুকে যান বাংলাদেশ টেস্ট দলে। অভিষেক ম্যাচে সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে টেস্ট দলে জাকির এখন পাকাপোক্ত। বাংলাদেশের হয়ে ৩ টেস্ট খেলা জাকির এবারও আছেন সিলেটের অধিনায়কের দায়িত্বে। প্রথম ম্যাচে ঢাকা মেট্রোর বিপক্ষে ইনজুরি নিয়েও প্রথম ইনিংসে করেছেন সেঞ্চুরি (১০৪)। দ্বিতীয় ইনিংসে জাকির (০) ব্যর্থ হওয়াতে তার দল সিলেট ২০৫ রান তাড়ায় থেমেছে মাত্র ১১৬ রানে।

জাকিরের মতো জাতীয় দলের আশেপাশে আছেন জাকের আলী অনিকও। বাংলাদেশ ‘এ’ দলে খেলছেন এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার। ‘এ’ দলের সঙ্গে ভারত সফরে যাওয়ায় গত লীগের সব ম্যাচে অনিককে পায়নি সিলেট। লীগে মাত্র দুই ম্যাচ খেলেছেন অনিক। এবার অনিক প্রথম ম্যাচ খেলেছেন ঢাকা মেট্রোর বিপক্ষে। সেখানেও প্রথম ইনিংসে বেশ সফল অনিক। ফিফটি করে দলকে এনে দিয়েছেন লিড। দ্বিতীয় ইনিংসেও দলের বিপর্যয়ে করেছেন সর্বোচ্চ ২৯ রান।

এ দুজনের বাইরে গতবছর ব্যাট হাতে আলো ছড়িয়েছিলেন ওপেনার তৌফিক খান তুষার। সেরা রান সংগ্রাহকদের তালিকায় এই ব্যাটার ১০ ইনিংসে ৩৮৯ রানে নিয়েছিলেন তিনে। লীগে সর্বোচ্চ ৯২.৮৪ স্ট্রাইকরেটে রান করার পাশাপাশি হাঁকিয়েছেন সর্বোচ্চ ছক্কা (১৭) ও চার (৪৭)। একটা সময় ওপেনিংয়ে সিলেটের হালধরা অভিজ্ঞ ইমতিয়াজ হোসাইন তান্না গতবছর ছিলেন তুষারের ছায়া হয়ে। সেই তান্না গত জাতীয় লিগে ৬ ম্যাচে ৯ ইনিংসে এক ফিফটিতে (৫১) রান করেছেন মাত্র ১৪৬।

ওপেনিংয়ে তুষার প্রায় সেট বলা যায়, রানও পাচ্ছেন নিয়মিত। আর তুষারের সাথে এবার সংযোজন করা হয়েছে জাকির হাসানকে। জাতীয় দলে যেহেতু ওপেনিংয়ে খেলছেন জাকির, তাই হয়তো তাকে এই জায়গায় খেলানো হচ্ছে। যাতে করে শুরু থেকেই নতুন বলে খেলে অভ্যস্ত হতে পারেন। আর জাতীয় দলে খেলার সময় সেটা কাজে লাগবে।

অলক-রাজিনদের বিদায়ের পর সিলেটের মিডলঅর্ডার হয়েছে নড়বড়ে। মিডলঅর্ডারের শক্তি বাড়াতে হয়তো সিলেট এবার ইমতিয়াজ হোসাইন তান্নাকে নামিয়েছে চারে। সেখানেও বড় ইনিংস খেলতে ব্যর্থ সিলেটের অভিজ্ঞ এই ব্যাটার। প্রথম ইনিংসে ১৪ রান করলেও রান তাড়ায় তান্না ফিরেছেন ২৫ রানে। প্রথম ইনিংসের তুলনায় দ্বিতীয় ইনিংসে বেশ ভালো করলেও দলের হার এড়াতে ব্যর্থ হয়েছেন তান্না।

এই চারজনের বাইরে তেমন কোনো ভালো ব্যাটার এখনো পায়নি সিলেটের ক্রিকেট। নতুন ব্যাটার বের না হওয়ার পিছনে অনেকেই অনেক কারণ দেখেন। কারো চোখে সিলেটের প্রথম বিভাগ লিগ নিয়মিত না হওয়া। কেউ বা আবার দলে থাকা সিনিয়রদের দায় দেন। সিনিয়রদের কারণেই নাকি নতুন ব্যাটার পাচ্ছে না সিলেট। আর লীগে যারা ভালো করছে তাদেরকে জায়গা দেওয়া যাচ্ছে না সিনিয়রদের কারণে।

আর এবার তো সিলেট প্রথম বিভাগ লিগ হয়েছে দায়সারাভাবে, সিলেট বিভাগীয় দলে কোনো ক্রিকেটারই খেলেননি এবার লিগে। লিগে রেলিগেশন না থাকায় তান্না-জাকিরদের কাউকেই দেখা যায়নি লিগে। প্রতিযোগিতাহীন লিগে তাই নতুন ক্রিকেটারই উঠে আসেনি।

তবে সিনিয়রদের দায় দেওয়ার সুযোগ আর এখন নেই। কারণ দুই সিনিয়র রাজিন সালেহ ও অলক কাপালি এখন আছেন অবসরে। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে তারা এখন আর খেলছেন না। তরুণদের সুযোগ করে দিতেই তো অলক কাপালি গতবছর লীগ শুরুর মাসখানেক আগেই অবসর নিয়েছেন প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট থেকে। যেই তরুণদের জন্য জায়গা ছেড়ে দিলেন অলক, সেই তরুণরা তার জায়গায় ঠিকঠাক সুযোগ পেয়েছেন কি-না প্রশ্ন থেকেই যায়।

আর রাজিন সালেহতো খেলা ছেড়েছেন অলকের বহু আগে। খেলা ছাড়ার পর কোচ হয়েইতো সিলেটকে টেনে তুলেছেন জাতীয় লিগের প্রথম স্তরে। ২০১৯-২০ মৌসুমে সিলেট টায়ার-২ চ্যাম্পিয়ন হয় রাজিনের অধীনে। এরপর সিলেট বিভাগীয় দল নিয়ে অনেক পরিকল্পনা করলেও তা ভেস্তে যায় করোনা মহামারিতে। করোনা কাটিয়ে লিগ শুরু হলে ২০২১-২২ মৌসুমে কোনোরকম প্রথম স্তরে নিজেদের জায়গা ধরে রাখে সিলেট।

সেই সাফল্যের ধারাবাহিকতা ধরে নতুন উদ্যমে জাতীয় লিগের ২৪তম আসর শুরু করেছিল সিলেট। অলক-রাজিনবিহীন সিলেট নতুন কোচ নাজমুল হোসাইনের অধীনে তরুণদের নিয়ে দল সাজায়। চট্টগ্রামের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে অভিষেক হয় নাঈম আহমেদ ও আবু বক্কর জুনিয়রের। অভিষেক ইনিংসে পাঁচ উইকেট নিয়ে নিজের আগমন জানান দেওয়া নাঈম সেবার এক ম্যাচের বেশি খেলার সুযোগ পাননি।

অথচ তাকে বাদ দিয়ে যাকে খেলানো হল, সেই সাহানুর রহমান ৪ ম্যাচের ৭ ইনিংসে ৮ উইকেটের বেশি পাননি। আর নাঈম অভিষেক ম্যাচেই দুই ইনিংসে নিয়েছিলেন ৮ উইকেট। সাহানুর ব্যাটিংয়ে এগিয়ে ছিলেন নাঈম থেকে। তাই হয়তো স্পিনের পাশাপাশি ব্যাটিংটাও আশা করেছিলেন সাহানুরের কাছে। সেখানেও চরম ব্যর্থ হয়েছিলেন সাহানুর, ৬ ইনিংসে রান করেছেন মাত্র ৩২। তবে এবার বোলিংয়ে কিছুটা হলেও ঘুরে দাঁড়িয়েছেন সাহানুর। ঢাকা মেট্রোর বিপক্ষে দুই ইনিংসে নিয়েছেন ৫ উইকেট।

সে বছর ফলাফলের চাইতে ভবিষ্যতের দিকে থাকানো সিলেটের একাদশে এক ম্যাচের বেশি এই নাঈম ও বক্করকে দেখা যায়নি। তাদের না খেলার পিছনে কারণ ছিল, ভিসা জটিলতায় বাংলাদেশ ‘এ’ দলের ভারত সফর সাময়িক স্থগিত হয়। ফলে ‘এ’ দলে থাকা দুই ক্রিকেটার জাকের আলী অনিক ও খালেদ আহমেদ ফিরেন সিলেটের দলে। দ্বিতীয় ম্যাচে একাদশে তাই নবাগত দুই ক্রিকেটারের জায়গা হবে না সেটা ছিল নিশ্চিত।

কারণ আবু বক্করকে নেওয়া হয়েছিল অলক কাপালির শুন্যতা পূরণ করতে, যে জায়গায় প্রথম পছন্দ ছিলেন অনিক। কিন্তু ‘এ’ দলে থাকায় প্রথম ম্যাচে তাকে পাওয়া যায়নি তাই অভিষেক করাতে হয়েছিল তাকে। তবে এক ম্যাচ খেলিয়ে তাকে বাদ দেওয়াটা হয়তো টিম ম্যানেজমেন্টের মাথায় ছিল না, শেষ দুই ম্যাচে তো তাকে পাওয়া যায়নি এইচএসসি পরীক্ষা থাকায়। গত বছর বিকেএসপি থেকে এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েছিলেন বক্কর।

ভিসা জটিলতায় ভারত সফর স্থগিত হওয়ায় দ্বিতীয় ম্যাচে অনিক খেলায় সিলেট। বিকেএসপিতে খেলতে নেমে অপরাজিত ফিফটি হাকিয়ে ঢাকার বিপক্ষে সিলেটের ৪ উইকেটের জয়ে। ভিসা জটিলতা কাটিয়ে ‘এ’ দল ভারত সফরে যায়, সেই দলের সফর সঙ্গীও হন অনিক। ফলে তার জায়গায় ব্যাটার দরকার পড়ে সিলেটের, অনিকের জায়গায় বোর্ড পাঠায় আল আমীন জুনিয়রকে। বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ ও এইচপি দলের হয়ে খেলা এই অফস্পিন অলরাউন্ডার একটা সময় বরিশালের হয়ে জাতীয় ক্রিকেট লিগে খেলেছেন।

অভিজ্ঞ আল আমিনকে পেয়ে কিছুটা আশাবাদী ছিল সিলেটের টিম ম্যানেজমেন্ট। মাঠে ব্যাটে-বলে ভাল খেলার পাশাপাশি ড্রেসিংরুমে অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করলে উপকৃত হবে সিলেটের তরুণ ক্রিকেটাররা। ব্যাটে-বলে সিলেটের সেই আশা পূরণ করতে পারেননি আল আমীন। ব্যাট হাতে পুরোপুরি হতাশ করেছিলেন, সিলেটের হয়ে ৪ ম্যাচে ৫ ইনিংসে করেছেন মাত্র ৫৫ রান। তিন ইনিংসের হাত ঘুরিয়ে উইকেট নিয়েছেন মাত্র দুটি।

২০১৯-২০ সালে বাংলাদেশ জাতীয় দল ও এইচপি দলের খেলা থাকায় সিলেটের অনেক ক্রিকেটারই চলে গিয়েছিলেন জাতীয় দল ও এইচপি দলের হয়ে খেলতে। জাকির হাসান ও জাকের আলী অনিকও ছিলেন এই দলে, জাতীয় দলের খেলতে চলে যান খালেদ আহমেদ, এবাদত হোসাইন ও আবু জায়েদ রাহিরা। সেই সময় খেলোয়াড় সংকটে পড়েছিল সিলেট, তৎকালীন কোচ রাজিন সালেহ সেসময় দ্বারস্থ হয়েছিলেন বন্ধু হান্নান সরকার।

বন্ধু হান্নান তাকে দিয়েছিলেন অমিত হাসানকে, সেই অমিত প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে যাত্রা রাজিনের হাত ধরে। অভিষেকের পর থেকেই সিলেটকে টেনেছেন ক্লান্তিহীনভাবে। তবে গেল বছর তেমন রান দেখা যায়নি অমিতের ব্যাটে, ৬ ম্যাচের ৯ ইনিংসে দুই ফিফটিতে রান করেছেন ২৩৪। সর্বোচ্চ ইনিংস ৭৯ রানের।

এভাবেই ঘুরে ফিরে রাজিন-অলকদের উত্তরসূরি খুঁজতে হচ্ছে সিলেটকে। দুই সিনিয়র অবসরে যাওয়ার পর আরও যেন ছন্দ হারিয়েছে সিলেটের ব্যাটিং, আরেক সিনিয়র ইমতিয়াজ হোসাইন তান্নার ক্যারিয়ারও শেষের পথে। এবার যে রান করেছেন তান্না আর কতদিন খেলবেন তাও এখন ভাবনার বিষয়। অলক-রাজিন-তান্নার রিপ্লেস তৈরি আছে কি সিলেটের নাকি আবারও সেই ধার করে খেলোয়াড় এনে মাঠে নামাতে হবে?

সেই প্রশ্নের উত্তর হয়তো সময় বলে দিবে, কিন্তু ২৫তম জাতীয় ক্রিকেট লীগেও সিলেটের ব্যাটিংয়ে সেই পুরনো চিত্রই ফুটে উঠেছে। রাজিন-অলকদের বিকল্প এখনও খুঁজে পায়নি সিলেট।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link