১২ উইকেটের পতন ঘটেছে দ্বিতীয় দিনে। প্রথম দিন ১৩ উইকেট গিয়েছিল সিলেট টেস্টে। যার অধিকাংশই গিয়েছে পেসারদের পকেটে। তবে দ্বিতীয় দিনে উইকেট শিকারের ট্যালি ছাপিয়ে গেছে তাইজুল ইসলামের বীরত্বে। বাংলাদেশের ব্যাটারদের ব্যর্থতার দিনে, একা হাতেই এগিয়ে নিয়েছেন তিনি দলের ব্যাটিং।
দ্বিতীয় দিনের শুরুতে বাংলাদেশের হাতে ছিল সাত উইকেট। তবে আগের দিনের মতই সিলেটের আকাশ ছিল মেঘলা। সেটাই ছিল ভয়ের কারণ। শেষ অবধি ভয়টাই হয়েছে সত্যি। বাংলাদেশের ব্যাটারদের ব্যাটাররা আগের দিনের আসা-যাওয়ার মিছিলেই হয়েছিলেন শামিল।
একটা প্রান্ত থেকে স্রেফ দাঁড়িয়ে থেকেছিলেন নাইট ওয়াচম্যান তাইজুল ইসলাম। বাংলাদেশের ইনিংসের সর্বোচ্চ রানই এসেছে তার ব্যাট থেকে। ৪৭ রানের একটি লড়াকু ইনিংস খেলে বিদায় নিয়েছেন তাইজুল। মধ্যাহ্ন বিরতির আগে স্কোরবোর্ডে ১৩২ রান তুলতে সক্ষম হয়। তাইজুলের সাথে মেহেদী হাসান মিরাজের জুটি ছিল অপরাজিত।
লাঞ্চের পর স্রেফ ১৩ ওভার স্থায়ী হয় বাংলাদেশের ইনিংস। লঙ্কান পেসারদের একের পর এক বাউন্সারে নাভিশ্বাস উঠে যায় বাংলাদেশের লেজের দিকের ব্যাটারদের। তবুও শরিফুল ইসলাম ও খালেদ আহমেদরা পাল্টা আক্রমণ চালিয়ে রানের চাকা রেখেছিলেন সচল। তাতে করে অলআউট হওয়ার আগে ১৮৮ রানে জড়ো করে বাংলাদেশ।
এমনকি লিটন দাস, মেহেদী হাসান মিরাজরা দারুণ শুরু পাওয়ার পরও ইনিংস বড় করতে হয়েছেন ব্যর্থ। সেটাই কাল হয়ে দাঁড়ায় বাংলাদেশের জন্যে। বিপরীতে ৯২ রানের লিড নিয়ে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে শ্রীলঙ্কা। সিলেটের ‘ট্রিকি’ উইকেটে শ্রীলঙ্কার জন্যেও দূর্বিষহই ছিল ব্যাটিং করা।
চা বিরতির আগে কোনরকম উইকেট না হারানোর ব্রত নিয়েই নেমেছিল শ্রীলঙ্কা। তবে সে পরিকল্পনায় পানি ঢেলে দেন নাহিদ রানা। চার বিরতির ঠিক আগের ওভারেই উইকেট তুলে নেন তরুণ এই পেসার। নিশান মাদুশকা উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি।
চার বিরতির পর নাহিদ রানা আবার আঘাত করেন শ্রীলঙ্কার ব্যাটিং অর্ডারে। কুশল মেন্ডিসকে শিকারে পরিণত করেন নাহিদ। অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুসকে নিয়ে দ্রুত দুই উইকেট হারিয়ে ফেলার বিপর্যয় সামাল দেন দিমুথ করুণারত্নে। তবে সেই জুটিও বেশিদূর এগোতে পারেনি। জুটির দৈর্ঘ্য ২৮ রান হতেই তাইজুলের শিকারে পরিণত হন ম্যাথুস।
এরপর কিছুক্ষণ বাদেই দীনেশ চান্ডিমালকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। যদিও তা প্রথমে আম্পায়ার নটআউট বলেই সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন। দুইটি ব্যর্থ রিভিউয়ের পর নিজেদের হাতে থাকা শেষ রিভিউ-তে সফলতা পায় বাংলাদেশ।
৬৪ রানে চার উইকেট হারিয়ে পূর্বের দশার দ্বারপ্রান্তে তখন শ্রীলঙ্কা। যদিও এরপর সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়ায় লঙ্কানরা। করুণারত্নে দেন যার নেতৃত্ব। ফিফটি তুলে নেন তিনি। ৫২ রানের মাথায় আউট হন শরিফুলের বলে। বহুক্ষণ ধরে চালিয়ে যাওয়া শর্ট বলের মধুর ফল হয়ে ধরা দেয় করুণারত্নের উইকেট। তবে ততক্ষণে শ্রীলঙ্কার লিড ছাড়িয়ে যায় ২০০ রান।
স্কোরবোর্ডে ১১৯ রান নিয়ে দিন শেষ করে শ্রীলঙ্কা। তৃতীয় দিনের শুরুতে লঙ্কানদের হাতে থাকবে পাঁচ উইকেট। নিজেদের লিডকে আরও খানিকটা বড় করতে চাইবে নিশ্চয়ই। তবে বাংলাদেশের পেসারদের তোপ অব্যাহত থাকলে হয়ত থেমে যেতে হবে আগেভাগেই।