অনেক চেষ্টা করেও তামিম-সাকিব বিরোধের সূরাহা হয়নি

পুরো বাংলাদেশ যখন বিশ্বকাপ স্কোয়াড জানার অপেক্ষায় ছিল, তখন হঠাৎ করেই খবরের শিরোনাম দখল করেন সাকিব আল হাসান আর তামিম ইকবাল। দেশের ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় দুই তারকার মাঝে সৃষ্টি হয়েছে দ্বন্দ্ব এমন খবর ছড়িয়ে পড়েছিল গণমাধ্যমে; প্রায় মাঝরাতে এই দুইজনকে নিয়ে আলোচনায় বসেছেন বিসিবি সভাপতি এমনটাও শোনা গিয়েছিল।

যদিও পরবর্তীতে জানা গিয়েছে তথ্যটি ভুল, তবে সাকিব-তামিমের মুখোমুখি অবস্থান অবশ্য মিথ্যে নয়। একসময় একে অপরের সেরা বন্ধু হলেও গত কয়েক বছর ধরেই দুজনের মাঝে অভিমানের প্রাচীর জমা হয়েছে। তাঁদের ব্যক্তিগত সম্পর্কের কথা এখন ‘ওপেন সিক্রেট’। খালেদ মাহমুদ সুজনও স্বীকার করেছেন সেটা, তিনি স্থানীয় এক গণমাধ্যমকে বলেন, ‘সাকিব তামিমের দ্বন্দ্ব সবাই জানে।’

দুই ফ্যান ফেভারিট ক্রিকেটারের সমস্যাগুলো সমাধান করার চেষ্টাও করেছিলেন খালেদ মাহমুদ সুজন। তিনি জানান যে, ‘আমিও চেষ্টা করেছি। কিন্তু একটা সময় মনে হয়েছে তাঁরা এখন আর বাচ্চা নয়, বাচ্চার বাপ। আমি খালি দেখেছি ড্রেসিংরুমের পরিবেশ কেমন, টিমের পারফরম্যান্সে প্রভাব পড়ে কি না।’

কিন্তু সে-সব ক্ষেত্রে কোন সমস্যা দেখা যায়নি বলেই মনে করেন এই বিসিবি কর্তা। তাঁর মতে, খেলার মাঠে সবকিছু ভালভাবেই চলছে। সাকিব তামিম মাঠে কথা বলছে, দক্ষিণ আফ্রিকায় গিয়ে তাঁদের নেতৃত্বে অ্যাওয়ে সিরিজ জিতেছি। এজন্য আমার আর কোন কমপ্লেইন নেই।’

তবে সাকিব, তামিমের জন্য দলের সমস্যা হলে অবশ্যই হস্তক্ষেপ করতেন খালেদ মাহমুদ সুজন। কিন্তু তেমনটা না হওয়ায় তাদেরকে তাঁদের মত থাকতে দিয়েছেন। একইসাথে তিনি আশা করছেন সময়ের সাথে সাথে আবারো সব ভুলে এক হবেন সাকিব, তামিম; আরো কয়েক বছর পর হয়তো পুরনো বন্ধুত্ব ফিরে আসবে দুজনের মনে।

এসবের পাশাপাশি তামিম ইকবালের অবসর নিয়েও মন্তব্য করেছেন খালেদ মাহমুদ সুজন। তিনি বলেন, ‘তামিম যদি বলে সে চান্দিকার জন্য অবসর গ্রহণ করেছে, তাহলে আমার মনে হয় না সেটা রাইট ডিসিশন ছিল। আপনি কোচের জন্য এমন ডিসিশন নিতে পারেন না, কোচ তো আসবে যাবে। কিন্তু ও তো আমাদের সম্পদ, আমাদের প্লেয়ার। এখন সে কেন ক্যাপ্টেন্সি ছেড়েছে সেটা ওই বলতে পারে, আমাদের কারো সাথেই সে আলাপ করে নাই।’

তামিম ইকবালের ইনজুরির কথা মাথায় রেখে সাকিবকে অধিনায়ক করা বোর্ডের সেরা সিদ্ধান্ত, এমনটাই বিশ্বাস খালেদ মাহমুদ সুজনের। বিশ্বকাপে তামিমের সব ম্যাচ খেলা নিয়ে এখনো সংশয় রয়েছে, এমতাবস্থায় লিটন বা আফিফকে ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক হিসেবে দেখতে চাইবে না কেউই। সেজন্য হয়তো অধিনায়কত্ব নিয়ে তামিমের সঙ্গে কোন কথা হয়েছে কোচের যা তাঁর মনে কষ্ট দিয়েছে।

তামিম ইকবাল কারো সাথে কিছু না বলায় কিছুটা মন:ক্ষূণ্ন হয়েছেন খালেদ মাহমুদ সুজন। তিনি জানান, ‘এত বছর ধরে সবার সাথে সম্পর্ক, সো সময়ে আমাদের সাথে একবার হলেও কথা বলতে পারতো তামিম। আমরা চেষ্টা করেছি কথা বলার, কিন্তু পারিনি।’

তবে এসব অতীতকে ভুলে এখন সামনের দিকে নজর দিতে চান খালেদ মাহমুদ সুজন। দর্শকরাও তাই চাইবেন। তামিম ইকবাল বিশ্বকাপ দলে না থাকলেও সাকিব আল হাসানের নেতৃত্বে সেরা সাফল্য দেখারই অপেক্ষায় আছে বাংলাদেশের ক্রিকেট।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link