অবশেষে স্বস্তির বৃষ্টি

প্রবল রোদে পুড়ছে সারা দেশ।

কোথাও একটু মেঘের দেখা নেই। এর মধ্যে পাল্লেকেলের আকাশে একটু মেঘ জমলো। স্বস্তি এলো হয়তো। তবে পাল্লেকেলেতে স্বস্তি না এলেও বাংলাদেশে অন্তত স্বস্তি এনে দিলো তামিম ইকবাল ও নাজমুল হোসেন শান্তর জুটিতে তৈরী হওয়া বৃষ্টি।

১৪৪ রানের একটা জুটি।

আর্ন্তজাতিক বিচারে এর তেমন বিরাট কোনো মূল্য নেই। বাংলাদেশের ক্রিকেটেই এর চেয়ে বড় জুটি আছে ভুরি ভুরি। তারপরও তামিম ইকবাল ও নাজমুল হোসেন শান্তর আজকের জুটিটা আলাদা একটু মূল্যায়নের দাবি রাখে। বাংলাদেশের টপ অর্ডার ইদানিং এতেটাই ভঙুর হয়ে উঠেছিলো যে, এরকম একটা জুটি অধুনা অবিশ্বাস্য ব্যাপারে পরিণত হয়েছিলো।

অবশেষে তামিম ও শান্ত একটু জুটি করে টপ অর্ডারে একটু হলেও স্থিতিশীলতা দিলেন।

একটু পরিসংখ্যানের কচকচি করা যাক।

বাংলাদেশ ২০১৪ সালের পর এই প্রথমবারের মত দ্বিতীয় উইকেটে শত রানের জুটি দেখলো। মানে, গত ৭ বছরে দ্বিতীয় উইকেটে কোনো শত রানের জুটি হয়নি। আচ্ছা, সাথে প্রথম উইকেট জুটিটাকেও হিসাবে নিন। ২০১৭ সালের পর সেখানেও কোনো শত রানের জুটি নেই। এবার তৃতীয় উইকেট বিচার করুন। ২০১৮ সালের পর সেখানেও শত রানের কোনো জুটি নেই।

মানে, গত তিন বছরে। আমরা প্রথম তিনটি উইকেট জুটি থেকে টেস্টে কোনো শত রানের জুটি পাইনি। টেস্টে আমাদের প্রথম তিন-চার ব্যাটসম্যানের উইকেট কত সস্তা হয়ে গেছে, সেটা তো এবার বুঝতে পারার কথা।

অবশেষে সেখানে প্রথম তিন উইকেটের কোথাও একটা শত রানের জুটি আসাটা নিশ্চয়ই একটু স্বস্তির ব্যাপার। বিশেষ করে নাজমুল হাসান শান্তর জন্য এটা বিরাট একটা হাফ ছেড়ে বাঁচার মত কাণ্ড।

তামিম ইকবাল খুব একটা রান থেকে দূরে নেই। যদিও ২০১৯ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্ট সেঞ্চুরি করেছিলেন। ফলে আরেকটা সেঞ্চুরি তার এই সময় খুব দরকার ছিলো। কিন্তু অল্পের জন্য সেটা মিস করলেন।

দারুন ছন্দে খেলছিলেন তামিম। বিশেষ করে প্রথম পঞ্চাশ রান করা পর্যন্ত তো টি-টোয়েন্টি মেজাজে ছিলেন। উইকেটের একটু ঘাস, শ্রীলঙ্কান ফাস্ট বোলারদের একটু মুভমেন্টকে একেবারে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিলেন তামিম। স্ট্রাইক রেট ছিলো এক শ পার করা।

কিন্তু নব্বই রানে এসে একেবারে বিসদৃশ্য একটা শত খেলে ফিরে গেলেন। সে জন্য তামিমই নিশ্চয়ই সবচেয়ে বেশি আক্ষেপে পুড়ছেন। এমন সুন্দর উইকেটে লম্বা একটা ইনিংস খেলতে না পারার আফসোসটা তারা সহজে যাওয়ার নয়।

বিপরীতে শান্তর জন্য এটা ছিলো নিজেকে রক্ষা করার শেষ সুযোগগুলোর একটা।

জাতীয় দলের হয়ে এর আগে ১৪টি ম্যাচে ২৩টি ইনিংস খেলেছেন। এর মধ্যে টেস্টে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একটা মাত্র ফিফটি (৭১) ছিলো। এ ছাড়া পঞ্চাশ পার করতে পারেননি একবারও। অথচ শান্তকে টানা সুযোগ দেওয়ার কোনো কমতি ছিলো না।

নানাভাবে শান্তর পেছনে বিনিয়োগ চলছিলো। তাকে ভবিষ্যত অধিনায়ক বলেও নানা ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছিলো। কিন্তু শান্তর ওপর আস্থা হারিয়ে ফেলার যথেষ্ট কারণও তৈরী হয়েছে এর মধ্যে। অবশেষে শান্ত আর কিছু না হোক, পরীক্ষা দেওয়ার আরেকটু সময় পেলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link