প্রত্যাবর্তনের অপর নাম তাসকিন

‘ফিরে আসা’ শব্দজোড়া তাসকিন আহমেদের নামের সাথেই যেন জুড়ে গেছে। ইনজুরির ভয়াল থাবা পেরিয়ে তিনি প্রতিবার ফিরে আসছেন, ঠিক যেন গ্রিক রুপকথার ফিনিক্স পাখি। বিশ্বকাপের মঞ্চে দাঁড়িয়ে আবারও তিনি শুনিয়ে গেলেন নিজের জয়গান।

বিশ্বকাপের ঠিক আগ মুহূর্তে ইনজুরি এসে দিয়েছিল হানা। শঙ্কা জেগেছিল বিশ্বকাপে অংশ না নেওয়ার। বাংলাদেশ দলের নির্বাচকরা শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তার জন্য ছিলেন অপেক্ষায়। সেই অপেক্ষার প্রতিদান তিনি দিয়েছেন দারুণভাবে। গতির মিশেলে শ্রীলঙ্কাকে রীতিমত নাকানিচুবানি খাইয়েছেন।

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচের আগে তিনি খেলেননি কোন গা গরমের ম্যাচ। ফিরে তিনি কতটুকু ডেলিভার করতে পারবেন, সে সংশয় বোধহয় ছিল। কিন্তু সকল সংশয়কে কালবৈশাখি হয়ে উড়িয়ে দিয়েছেন তাসকিন নিজেই। কোন প্রকার অস্বস্তি চোখে পড়েনি তার বোলিংয়ে। একেবারে শুরু থেকেই তিনি প্রায় ১৪০ কিলো/ঘন্টায় বল করে গেছেন।

সফলতা পেতেও দেরি হয়নি খুব একটা। লংকানদের ওপেনিং জুটি ভেঙেছেন তিনি। দারুণ এক বলে পরাস্ত করেন কুশল মেন্ডিসকে। ব্যাটের খোঁচা লেগে বল আঘাত হানে স্ট্যাম্পে। ম্যাচের মোমেন্টাম তখন থেকেই যেন বাংলাদেশের পক্ষে আসতে শুরু করেছে।

এরপরও ক্রমাগত দুর্দান্ত লাইনলেন্থে বোলিং করে গেছেন তাসকিন। গতির হেরফের ঘটিয়ে বুদ্ধিমত্তার পরিচয়ও দিয়েছেন। তেমন এক মাইন্ড গেমে তুলে নেন দাসুন শানাকার উইকেট। অফ স্ট্যাম্প চ্যানেলের একটা বাউন্সারে উইকেটের পেছনে কাটা পড়েন শানাকা। ঠিক তার আগের বলেই স্লোয়ার বল করেছিলেন তাসকিন।

তাছাড়া শ্রীলঙ্কার ব্যাটারদের হাতখুলে খেলবার খুব বেশি সুযোগও দেননি। ৪ ওভারের বোলিং স্পেলে রান দিয়েছেন মাত্র ২৫টি। ৬.২৫ ইকোনমি রেটে বোলিং করেছেন, ডট দিয়েছেন ১২টি। অসাধারণ বোলিং করেছেন তা আর বলবার অপেক্ষা রাখে না। তাছাড়া তাসকিনের ওভারে মোটে ৩টি চার মারতে পেরেছেন লংকান ব্যাটাররা।

সামগ্রিক চিত্র বলে দেয় বল হাতে ঠিক কতটা উজ্জ্বল ছিলেন তাসকিন আহমেদ। প্রত্যাবর্তনের আরও একটি দুর্দান্ত অধ্যায় লিখে গেলেন তাসকিন। বাংলাদেশের এক্সপ্রেস পেসার পুরো আসর জুড়েই দিয়ে যাবে সার্ভিস, সেটাই এখন প্রত্যাশা সকলের। সময়ের ঘূর্ণিপাকে নতুন কোন ইনজুরি না দিক হানা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link