রিয়াদ, তোমার পথ থামলো এখানেই!

‘নট এভ্রিথিং কামস টু অ্যান এন্ড ইন অ্যা পারফেক্ট ওয়ে বাট ইউ সে ইয়েস অ্যান্ড মুভ ফরোয়ার্ড’ - সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক ছোট্ট পোস্ট। সংক্ষিপ্ত, সংযত, নিখুঁত। তবু, এর আড়ালে লুকিয়ে আছে দীর্ঘ ১৭ বছরের গল্প—বাংলাদেশের জার্সিতে তার ওঠা, নামা, উড়ান, পতন, বেদনা আর তৃপ্তির এক মিশ্র অধ্যায়।

‘নট এভ্রিথিং কামস টু অ্যান এন্ড ইন অ্যা পারফেক্ট ওয়ে বাট ইউ সে ইয়েস অ্যান্ড মুভ ফরোয়ার্ড’ – সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক ছোট্ট পোস্ট। সংক্ষিপ্ত, সংযত, নিখুঁত। তবু, এর আড়ালে লুকিয়ে আছে দীর্ঘ ১৭ বছরের গল্প—বাংলাদেশের জার্সিতে তার ওঠা, নামা, উড়ান, পতন, বেদনা আর তৃপ্তির এক মিশ্র অধ্যায়।

রিয়াদ কখনো খুব বেশি শব্দের মানুষ ছিলেন না। মাঠেও না, মাঠের বাইরেও না। যখন ২০০৭-এ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওয়ানডে অভিষেক, তখন কেউ জানত না এই ছেলেটা একদিন বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের নীরব অথচ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়গুলোর একজন হয়ে উঠবে। ২০০৯-এ টেস্ট অভিষেকেই ৫ উইকেট, ২০১৫ বিশ্বকাপে দেশের প্রথম বিশ্বকাপ শতক, আর টানা দুই সেঞ্চুরি করে ইতিহাস লেখা—এগুলো তো ক্রিকেটপ্রেমীদের মুখস্থ!

২০১৭ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেই মহাকাব্যিক ইনিংসটা কে ভুলবে? ৩৩ রানে ৪ উইকেট পড়ার পর সাকিবের সঙ্গে ২২৪ রানের জুটি, বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে দু:স্বপ্নময় পরিস্থিতির এক মহিমান্বিত উত্তরণ!

কিন্তু ক্রিকেট কেবলই পরিসংখ্যান নয়, ক্রিকেট গল্পও। সেখানে সুখের গল্প যেমন আছে, আছে দু:খও। ২০১৬ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে সেই শেষ ওভারের ট্র্যাজেডি, ২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দলে জায়গা নিয়ে বিতর্ক, আর টেস্ট থেকে অবহেলিত হয়ে ধীরে ধীরে হারিয়ে যাওয়া—এগুলোও মাহমুদউল্লাহর ক্যারিয়ারেরই অংশ।

আর সমালোচনার দায় নিলেন না রিয়াদ। জানিয়ে দিলেন, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আর পারছিলেন না তিনি। বলে দিলেন, আর খেলবেন না, কোনো ফরম্যাটেই। তিনি এখন শুধুই সাবেক ক্রিকেটার।

ফেসবুক পোস্টে যখন লিখলেন, ‘বেস্ট উইশেস টু মাই টিম অ্যান্ড বাংলাদেশ ক্রিকেট’ তখন সেটাই ছিল তার নীরব বিদায়ের সেরা উপসংহার। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানিয়ে দিলেন সব শেষ। আর কখনও বাংলাদের জার্সি গায়ে চাপাবেন না। বিসিবি ঘটা করে বিদায় দিতে চেয়েছিল, সেই সুযোগও দিলেন না।

তবে সত্যি কি শেষ? না, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ শেষ হওয়ার নাম নয়। তিনি ছিলেন বাংলাদেশের ক্রিকেটের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য, সবচেয়ে ঠাণ্ডা মাথার ফিনিশার। যে ব্যাটসম্যান ৪ নম্বরে, ৫ নম্বরে, কখনো ৬ বা ৭ নম্বরে ব্যাট করতে নেমেও দলের জন্য শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত লড়ে গেছেন। কখনো চাপ নেননি, কখনো বাড়তি কথা বলেননি।

আজও বলছেন না। শুধু জানিয়ে দিলেন—বিদায়।

Share via
Copy link