১৯৮৩ থেকে ২০১১ এর সাহসী যাত্রা

সময়টা ১৯৮৩। বিশ্বকাপ বসেছে ইংল্যান্ডে। আট দলের মধ্যে ভারত এক দল। ক্যারিবিয় জোয়ারে অভ্যস্ত ক্রিকেট বিশ্বে তখনও ভারত পারেনি নিজেদের রাজত্ব প্রতিষ্ঠা করতে।

কিন্তু ভারতের ছিল একজন কপিল দেব। যিনি স্বপ্ন দেখেছিলেন ভারতের ক্রিকেটকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার। তাই তো একা হাতেই খেলতে পেরেছিলেন ১৭৫ রানের সেই অতিমানবীয় ইনিংস। শেষমেষ বিশ্বকাপটাই তো জিতে নিল ভারত।

২০১১ সালের প্রেক্ষাপটটা অবশ্য বেশ ভিন্ন। ততদিনে ভারত একটা প্রতিষ্ঠিত শক্তি বিশ্ব ক্রিকেটে। কপিল দেব থেকে মহেন্দ্র সিং ধোনি- ক্রিকেটে নিজেদের উপস্থিতি জানান দেওয়া থেকে এক পরাশক্তি হওয়ারই সমার্থক।

কিন্তু এই দুটো ঐতিহাসিক অর্জনের মাঝের সময়টায় ভারতের ক্রিকেটের পরিবর্তনটা কিভাবে হয়েছে? এই প্রজন্মের ক্রিকেটপ্রেমীরা সেটা নিশ্চয়ই জানতে চাইবে। তাদের সেই জানার পিপাসা মিটিয়েছে সাবেক ভারতীয় খেলোয়াড় এবং কোচ ডব্লিউ ভি রমন আর বিশিষ্ট ক্রিকেট লেখক আর কৌশিক তাদের বই ‘দ্য লর্ডস অফ ওয়াংখেড়ে’ বইতে।

ফিক্সিংয়ের মতো বিতর্কিত বিষয়কেও বাদ না দেওয়াটা এই বইয়ের বড় বিশেষত্ব। “ভারতের মানুষের জন্য স্পষ্টতই এরকম কিছু প্রাপ্য ছিলনা। সবসময়েই তাঁরা সমর্থন দিয়ে গেছে তাদের খেলোয়াড়দের এই আশা করে যে পরবর্তী জয়টা দূরে না। তাঁরা কখনোই খেলোয়াড়দের সততা নিয়ে সন্দেহ করেনি”, লেখকদ্বয়ের উপলব্ধি।

ফিক্সিংয়ের বাইরেও এই বইয়ে আছে দারুণ সব কাহিনি। দারুণ সব প্রতিভার কাহিনি যারা উপরে উঠতে পারেনি খুব একটা। ১৯৮৩ থেকে শুরু করে এগিয়েছে গল্প ধীরে ধীরে ওয়ার্ল্ড সিরিজ জয়ের দিকে। চিপকে টেস্ট ড্র থেকে শুরু করে সুনীল গাভাস্কারের অবসর- এর মাঝে রয়েছে কিভাবে এশিয়া এক হয়ে ১৯৮৭ বিশ্বকাপ আয়োজন করল। সেখান থেকে যাত্রাটা মোটামুটি মসৃণ ছিল, তবে একই সাথে তাঁরা ক্রিকেটে রাজনীতির ব্যাপারটাতেও আলোকপাত করেছেন।

সবচেয়ে ভালো হতো যদি একে একে সব ঘটনাকেই তুলে ধরা হত। তবে লেখকদ্বয় বইটাকে বিরক্তিকর না করে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময়গুলো নিয়ে বলেছেন। এইসব ঘটনার মাঝে যেমন গাঙ্গুলি-চ্যাপেল দন্দও উঠে এসেছে। ভারতীয় দর্শকদের জন্য ভারতীয় আ্যকাডেমি কিভাবে কাজ করে সেটারও একটা ধারণা রেখেছেন বইয়ে রমন।

হয়তো লেখকদ্ববয় বইয়ে ঘরোয়া ক্রিকেট নিয়ে আরেকটু বেশি বলতেই পারতেন যেহেতু তাদের একটা ভালো অভিজ্ঞতা আছে সেখানে। তারপরেও বইটি ভারতের ক্রিকেটের পরিবর্তন সম্পর্কে আপনাকে ধারণা দেবে অনেকটাই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link