কলকাতার ব্যর্থতার তিন কারণ

এবারের আইপিএলে গ্রুপপর্ব থেকেই বিদায় নিতে হয়েছে কলকাতা নাইট রাইডার্সকে। নিজেদের ১৪ ম্যাচের মাঝে মাত্র ছয়টি ম্যাচে জয়ের দেখা পেয়েছে নিতীশ রানার দল। অথচ টুর্নামেন্টের শুরুর দুই ম্যাচ জিতে উড়ন্ত সূচনা করেছিল দলটি।

কিন্তু সময় গড়ানোর সাথে সাথে যেন খেই হারিয়েছে দলটি। আসুন দেখে নেয়া যাক এবারের মৌসুমে কলকাতার ব্যর্থতার তিন কারণ। 

  • দুর্বল উদ্বোধনী জুটি

এবারের আসরে শক্তিশালী উদ্বোধনী জুটির গুরুত্ব চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে সেমিতে উঠা দলগুলো। চেন্নাই সুপার কিংস, গুজরাট টাইটান্স কিংবা লখনৌ সুপার জায়ান্টসের ওপেনাররা প্রায় প্রতি ম্যাচেই উড়ন্ত সূচনা এনে দিয়েছেন দলকে। 

অন্যদিকে কলকাতা তাঁদের সেরা উদ্বোধনী জুটি খুঁযে পেতে হিমশিম খেয়েছে গোটা মৌসুমজুড়ে। সাতবার উদ্বোধনী জুটি বদল করেও আখেরে লাভ হয়নি দলটির। জেসন রয়ের সাথে কখনো লিটন দাস কিংবা রহমানউল্লাহ গুরবাজ, আবার কখনো গুরবাজের সাথে নারায়ণ জগদীশান, ভেংকটেশ আইয়ারকে বাজিয়ে দেখেছে দলটি। 

কিন্তু ভরসা জোগাতে পারেননি কোনো জুটি। প্রতি ম্যাচেই শুরুতে ফিরেছেন কলকাতার উদ্বোধনী ব্যাটাররা। চাপের মুখে মিডল অর্ডার ব্যাটাররা পারেননি দলকে লড়াকু সংগ্রহ এনে দিতে। 

  • অভিজ্ঞ আন্দ্রে রাসেল এবং সুনীল নারাইনের অফফর্ম

আইপিএল ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই কলকাতা নাইট রাইডার্সের অবিচ্ছেদ্য অংশ দুই ক্যারিবীয় তারকা সুনীল নারাইন এবং আন্দ্রে রাসেল। কলকাতাকে দুইবার আইপিএলের শিরোপা জেতালেও গত কয়েক মৌসুম ধরেই ফর্ম পড়তির দিকে এই দুই তারকার।

এবারের মৌসুমে ১৪ ম্যাচে মাঠে নেমে ৭.৯৭ ইকোনমিতে মাত্র ১১ উইকেট শিকার করেন নারাইন। অথচ মাঝের ওভারগুলোতে তাঁর বোলিংয়ের উপরই নির্ভরশীল ছিল দলটি। এছাড়া ব্যাট হাতেও কোনো ম্যাচে ঝড়ো ইনিংস খেলতে পারেননি এই তারকা। 

অলরাউন্ডার আন্দ্রে রাসেলও ব্যাট-বল দুজায়গাতেই কাটিয়েছেন বাজে এক মৌসুম। ১৪ ম্যাচে ১১ ছাড়ানো ইকোনমিতে মাত্র সাত উইকেট শিকারের পাশাপাশি ব্যাট হাতে তাঁর সংগ্রহ ২২৭ রান। স্ট্রাইকরেটটাও রাসেলসুলভ নয়, মাত্র ১৪৫। 

বেশ কয়েকটি ম্যাচে জয়ের সম্ভাবনা থাকলেও এই দুই তারকার বাজে ফর্ম ম্যাচ হারের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে কলকাতার জন্য। 

  • অতিরিক্ত রিঙ্কু সিং নির্ভরতা

নিঃসন্দেহে এবারের মৌসুমে কলকাতার সেরা তারকা রিঙ্কু সিং। টুর্নামেন্টের পুরোটা সময়জুড়ে কলকাতার মিডল অর্ডারকে টেনেছেন এই তরুণ তারকা। গুজরাটের বিপক্ষে তো অবিশ্বাস্য শেষ ওভারে পাঁচ ছক্কা হাঁকিয়ে জয় এনে দেন দলকে।

বেশিরভাগ ম্যাচেই ইনিংসের শেষ দিকে নেমেও দলের সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহক এই মিডল অর্ডার ব্যাটার। ১৪ ম্যাচে ৫৯ গড় এবং ১৪৯.৫২ স্ট্রাইকরেটে রিংকুর সংগ্রহ ৪৭৪ রান। প্রায় প্রতি ম্যাচেই দলকে বিপদের হাত থেকে একা হাতে টেনে তুলেছেন এই তারকা।

নিতীশ রানা কিংবা ভেংকটেশ আইয়াররা দুয়েক ম্যাচে ঝলক দেখালেও ধারাবাহিকভাবে পারফর্ম করতে পারেননি। অন্যদিকে টপ অর্ডারে নারায়ণ জগদীশান এবং রহমানউল্লাহ গুরবাজের মতো তারকারা ছিলেন পুরোপুরি ব্যর্থ।

কে জানে ব্যাটিং অর্ডারে রিঙ্কু যদি একজন সহযোগী পেতেন তবে হয়তো এত দ্রুত টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিতে হতো না কলকাতাকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link