গত কয়েক দিন ধরে মিরপুরের আবহাওয়া ভাল যাচ্ছে না। আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দল ঘোষণা করা হয়েছে। নিন্দুকেরা বলছেন, শ্রীধরন শ্রীরাম স্কুল ক্রিকেটের মত জাতীয় দলের বাছাই করেছেন। তিন দিনের ক্যাম্প বা ট্রায়ালের আয়োজন করেছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট(বিসিবি)। সেখানে শ্রীরাম ক্রিকেটারদের পরখ করে বেছে বেছে দল সাজিয়েছেন।
সাম্প্রতিক সময়ে শেষ হওয়া এশিয়া কাপ ছিলো তাঁর প্রথম অ্যাসাইনমেন্ট। হুট করে শ্রীরামকে ডাক দেওয়ায় এশিয়া কাপের আগে সময় পাননি তিনি। টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন গণমাধ্যমে বলেছিলেন, ‘ডোমিঙ্গো আর শ্রীরামের ফিলোসোফি ভিন্ন। শ্রীরামের দলকে নিয়ে করা পরিকল্পনা হয়তো অনেকদূর এগিয়ে নিয়ে যাবে।’ তারই ধারাবাহিকতায় টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে দলকে নিয়ে কাজ করছেন শ্রীরাম।
বিসিবির প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু প্রেস কনফারেন্সে বিশ্বকাপের দল ঘোষণা করেন। দল থেকে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ বাদ পরায় আবহাওয়া একটু বেগতিক হয়ে যায়। স্বাভাবিক, একজন সিনিয়র ক্রিকেটার কে এভাবে বাদ দেওয়া, মুখের কথা নয়। তবে অবাক করা ব্যাপার ছিলো, বিশ্বকাপ দলে নাজমুল হোসেন শান্তকে যুক্ত করা।
নাজমুল হোসেন শান্তর পারফর্মেন্স জাতীয় দলে ডাক পাওয়ার মত নয় বলে দাবি করেন ক্রিকেট সমর্থকেরা। মিনহাজুল আবেদীন নান্নু বলেন, ‘বিপিএলে যে কয়টা সেঞ্চুরি আছে লোকাল প্লেয়ারদের, বেশী কিন্তু শান্তরই করা। সেই হিসেবে যদি চিন্তাভাবনা করেন, তাহলে কিন্তু শান্তর ঘরোয়া রেকর্ড খুব একটা খারাপ নয়। আন্তর্জাতিকে তো এই ফরম্যাটে আমরা সবাই স্ট্রাগল করছি। টিম ম্যানেজমেন্ট এর একটা মতামত আছে, আমাদেরো একটা মতামত আছে। সবার সম্মতিক্রমেই ওকে নেওয়া।’
নাজমুল হোসেন শান্ত এই বছরে টেস্ট, ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি এই তিন ফরম্যাট মিলিয়ে সর্বোচ্চ রান করেছেন ৪২। তার পেছনে কোন ভাল পারফর্মেন্স দেখা যায় না। অর্থাৎ, তাকে কোন ভাবেই বিশ্বকাপের জন্য প্রস্তুত বলে মনে করা যায় না।
শান্তকে নিয়ে শ্রীরাম বলেন, ‘আমি যেটা খুঁজছি, সেটা হলো ইমপ্যাক্ট। আমি এখানে পারফরম্যান্স খুঁজছি না। আমি মনে করি শান্ত অনেক ভালো খেলোয়াড়। যে ইমপ্যাক্ট খুঁজছি, তা ওর মধ্যে রয়েছে।’
এশিয়া কাপ শুরুর আগে নাঈম শেখকে তিনি বলেছিলেন ন্যাচারাল স্ট্রোক মেকার। নাঈম যদি ন্যাচারাল স্ট্রোকমেকার হয়, তাহলে শান্তকেও ইমপ্যাক্ট ক্রিকেটার বলাই যায়।
বাংলাদেশের ক্রিকেটে ওপেনিং ক্রাইসিস চলছে। বিসিবি এত এত ক্যাম্প করছে, তারা ক্রিকেটার তৈরি করছে। এখন আবার কনক্রিটের উইকেট তৈরি করছে। তাহলে, এগুলা কি লোক দেখানো? নাহলে সিস্টেমের বাইরে থেকে, কোন পারফরম্যান্স ছাড়াই শান্ত দলে ফেরে কিভাবে?
টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে আসলেই বাংলাদেশ খেলতে পারছে না। তবে, চেষ্টা কমতি নেই কারোর। এসময়ে যদি যোগ্য ক্রিকেটারদের দলে ডাকা না হয় তবে সেখানে জ্বলন্ত শিখায় পানি ঢেলে দেওয়া ছাড়া আর কিছুই করা হচ্ছে না। শান্ত বিশ্বকাপের যোগ্য কি না – সেটা সময়ই বলে দেবে।
তবে, যেহেতু দল ঘোষণা করা হয়ে গেছে, এখন আর আলোচনা-সমালোচনা, তর্ক-বিতর্ক করে কোন ফায়দা নেই। বিশ্বকাপে এই দলই খেলবে, এরাই আমাদের প্রতিনিধি হয়ে মাঠে নামবে। শান্ত মাঠে নামলেও যেন অতিতের গ্লানি মুছে ফেলতে পারেন, সেটাই প্রত্যাশা।