ক্রিকেট নিয়ে বিশ্বজুড়ে উন্মাদনা নেহাত কম নয়, সেরা ক্রিকেটারদের নিয়েও হয় মাতামাতি। তবে এসবের মাঝে আড়ালে পড়ে যান কেউ কেউ, যারা নিজেদের দায়িত্ব ঠিকঠাক পালনের পরেও পাননি যথার্থ স্বীকৃতি। লাইমলাইটের একটু বাইরে থাকা এমন ক্রিকেটারদের নিয়েই খেলা ৭১ এর আজকের আয়োজন।
- রঙ্গনা হেরাথ (শ্রীলঙ্কা)
অবিশ্বাস্য প্রতিভা নিয়ে জাতীয় দলে আসলেও রঙ্গনা হেরাথকে বড় একটা সময় থাকতে হয়েছে নীরবে। কিংবদন্তি মুত্তিয়া মুরালিধরন থাকায় দলের প্রধান বোলার হতে পারেননি তিনি, উইকেট তোলার মূল দায়িত্বও দেয়া হয়নি তাঁকে। তবে মুরালির বিদায়ের পরে নিজের সামর্থ্য দেখিয়েছেন এই বাঁ-হাতি। ২০১৪ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান ছিল তাঁর। কিন্তু শ্রীলঙ্কার কিংবদন্তি ক্রিকেটারদের আলোচনায় হেরাথের নামটা সহসা মনে আসে না, সেজন্য নিজেকে দুর্ভাগা ভাবলে ভাবতেই পারেন তিনি।
- মার্টিন গাপটিল (নিউজিল্যান্ড)
২০১৫ বিশ্বকাপের সেই অপরাজিত ২৩৭ রানের ইনিংস কেউ ভোলার কথা নয়, কিন্তু ভুলে গিয়েছে অনেকেই। স্বয়ং মার্টিন গাপটিলকেই মনে রাখেননি তাঁরা, অথচ ২০০৯ সাল থেকে ২০২২ পর্যন্ত নিউজিল্যান্ডের জন্য সর্বস্ব উজাড় করে দিয়েছেন তিনি। এই প্রজন্মের সেরাদের একজন না হলেও ১৩,০০০ এর বেশি আন্তর্জাতিক রান করা এই ব্যাটার হয়তো আরেকটু ভালবাসা পেতেই পারতেন।
- অজিত আগারকার (ভারত)
ভারতীয় পেস আক্রমণ ভাগের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন তিনি; নিজের সময়ে দ্রুততম পঞ্চাশ ওয়ানডে উইকেটের রেকর্ডও গড়েছিলেন, টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের প্রথম বলেই পেয়েছেন উইকেটের দেখা। ব্যাট হাতেও কম যাননি তিনি; লর্ডসে সেঞ্চুরি করেছিলেন, ওয়ানডেতে ভারতের হয়ে দ্রুততম ফিফটির কীর্তি এখনো তাঁর দখলে। কিন্তু জাভাগাল শ্রীনাথ, জহির খানদের ভীড়ে কেউই মনে রাখেনি আগারকারের অর্জন।
- ইউনুস খান (পাকিস্তান)
২০০৩ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেকের পর থেকে পাকিস্তানের ক্রাইসিস ম্যান হয়ে উঠেছিলেন ইউনুস খান। দলের বিপর্যয়ে সবার আগে এগিয়ে আসতেন তিনি, যখন যে পজিশনে ব্যাট করার দরকার হয়েছিল সেখানেই ব্যাট করেছিলেন – নিজেকে ভেঙেচুরে নিংড়ে দিয়েছিলেন। ২০০৯ সালে তাঁর নেতৃত্বেই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতেছিল পাকিস্তান, যদিও টেস্টে দশ হাজার রান করা এই তারকার নাম ভক্ত-সমর্থকদের মুখে শোনা যায় না তেমন।
- ডেমিয়েন মার্টিন (অস্ট্রেলিয়া)
২০০৩ বিশ্বকাপের ফাইনালে ভাঙা আঙুল নিয়ে ৮৮ রানের অনবদ্য এক ইনিংস খেলেছিলেন ডেমিয়েন মার্টিন। কিন্তু তাঁর বীরত্ব আড়ালে পড়ে গিয়েছিল রিকি পন্টিংয়ের অতিমানবীয় ব্যাটিংয়ের কারণে। মার্টিনের পুরো ক্যারিয়ার আসলে এমনই ছিল, পুরোটা সময় জুড়ে দারুণ পারফর্ম করেও তিনি পন্টিং, গিলক্রিস্টদের ছায়া হয়ে।