সিলেটে বেজায় বাজে একটা দিন কাটল নাহিদ রানার। চার ওভারে ৪৭ রান হজম করেছেন। একজন বোলারের বাজে দিন যেতেই পারে। কিন্তু সমস্যাটা ভিন্ন জায়গায়। বোলিং প্রান্তে খুব একটা প্রাণবন্ত দেখা যাচ্ছে না নাহিদকে। বলের গতিতেও তারতম্য করতে হচ্ছে। তিনি সম্ভবত হাঁপিয়ে উঠেছেন।
বাংলাদেশের পেস ইউনিটে একটা বাড়তি মাত্রা যুক্ত করেছেন নাহিদ। তার গতি ভয় ধরিয়েছে তাবড় তাবড় সব ব্যাটারদের। কিন্তু ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে ছন্নছাড়া এক নাহিদের দেখা মিলল। ২২ বছর বয়সী এই পেসারের শক্তিমত্তার জায়গা তার গতি। সেই গতিতেই কম্প্রোমাইজ করছেন নাহিদ।
স্লোয়ার বল ছুড়ছেন। বলের গতির তারতম্য নতুন কিছু নয়। পেসারদের অন্যতম পছন্দের অস্ত্র স্লোয়ার। কিন্তু নাহিদের গড় গতিতেও বেশ পরিবর্তন পরিলক্ষিত হচ্ছে বটে খালি চোখে। হওয়াও স্বাভাবিক। তিনি যে একটানা ম্যাচ খেলে যাচ্ছেন।
সিলেটে ফরচুন বরিশালে বিপক্ষে নাহিদ টানা ষষ্ঠ ম্যাচ খেলতে নেমেছেন, মাত্র ১১ দিনের ব্যবধানে। এর আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজেও তিনি দু’টো ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছেন। টেস্টও খেলেছেন। পেসারদের জন্য মাঠে ধকলের পরিমাণটাও বেশি। আর তাদের ইনজুরি প্রবণতাও বেশি।
নাহিদ রানার মত প্রিমিয়াম পেসারকে একটু কেয়ারফুলি হ্যান্ডেল করা উচিত। ওয়ার্কলোড ম্যানেজমেন্টের দিকেও বাড়তি নজর রাখা উচিত। নাহিদের ক্ষেত্রে তেমনটি অনুপস্থিত। এখানে রংপুর রাইডার্স ফ্রাঞ্চাইজিকে দোষারোপ করবারও উপায় সামান্যই। কেননা ফ্রাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টে একজন খেলোয়াড়ের পূর্ণ ফায়দা শুষে নিতে চাইবে ফ্রাঞ্চাইজি। রংপুর ঠিক সেটাই করছে।
যদিও পয়েন্ট টেবিলে বেশ ভাল অবস্থানে রয়েছে দলটি। টেবিলে রয়েছে সবার উপরে। তাইতো চাইলে বরিশালের বিপক্ষে নাহিদকে বিশ্রাম দিতে পারত রংপুর রাইডার্সের টিম ম্যানেজমেন্ট। কিন্তু তেমনটি না করে নাহিদের ক্লান্তির পরিমাণ বাড়িয়ে তার সক্ষমতার সর্বোচ্চটুকু নিঙরে নিতে চাইছে দলটি।
এখানেই বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের হয়ত হস্তক্ষেপ করবার সুযোগ থাকে। প্রায়শই আমরা শুনি, ওয়ার্কলোড ম্যানেজমেন্টের জন্য ভিনদেশি ফ্রাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টের জন্য বাংলাদেশি খেলোয়াড়দের ছাড়পত্র দেওয়া হয় না। দিলেও সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়। নিজেদের ফ্রাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টে নাহিদ রানার মত একজন প্রতিভাকে প্রতিরক্ষা করাও নিশ্চয়ই বিসিবির দায়িত্ব। গাফিলতি তাদের পক্ষ থেকেও রয়েছে নিশ্চয়ই।
অনেকেই হয়ত বলে বসবেন টি-টোয়েন্টি ম্যাচে তো ততটাও ধকল যায় না। বাস্তবতা হচ্ছে শুধু ম্যাচ চলাকালীন বোলাররা বোলিং করেন তা কিন্তু নয়। ম্যাচের জন্য তাদেরকে পূর্ব প্রস্তুতিও নিতে হয়। অনুশীলনে নিদেনপক্ষে ঘন্টা খানেক একটানা বল করে যেতে হয়। সবকিছু মিলিয়ে নাহিদের প্রতি সহানুভূতি দেখানো উচিত রংপুর ফ্রাঞ্চাইজির। সেই সাথে তাকে সুস্থ রাখার পক্ষে পদক্ষেপ নেওয়া উচিত বিসিবির। সামনেই তো চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি।