চাপ, উইকেট ও পাওয়ার হিটার

‘ব্যাটিংটাই ছিল মূল সংকট। কিন্তু আমাদের ব্যাটাররা পুরো বিশ্বকাপেই সেটা দেখাতে ব্যর্থ। আমরা প্রত্যাশা অনুযায়ী ভালো খেলতে পারিনি। আমাদেরকে অবশ্যই পাওয়ারপ্লেতে ব্যাটিংয়ে আরো উন্নতি করতে হবে যদি আপনি এমন একটা মেগা ইভেন্টে ভালো ফল আশা করেন। আমরা ডেথ ওভারেই দ্রুত রান তুলতে ব্যর্থ হয়েছি। শেষের দিকে আমাদের কিছু পাওয়ার হিটার প্রয়োজন। আমাদেরকে পাওয়ার হিটিং নিয়ে কাজ করতে হবে যাতে ডেথ ওভারে গড়ে ১০-১২ রান করে নেওয়া যায় ওভার প্রতি।’

চলছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সপ্তম আসর। টুর্নামেন্টে সবাই নিজের সেরাটা উজাড় করে লড়াই করলেও টানা হার আর বাজে পারফরম্যান্সে বেশ পিছিয়ে বাংলাদেশ দল। টুর্নামেন্ট থেকে বিদায়টাও প্রায় নিশ্চিত। জয়ের আশা জাগিয়েও কয়েক ম্যাচে হেরেছে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল। আর বিশ্বকাপের ভরডুবির পর প্রশ্ন উঠছে মিরপুরের উইকেট ও ঘরোয়া ক্রিকেটের মান নিয়েও। অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ জিতলেও সেটা কতটা ফলপ্রসু সেটা দৃশ্যমান বিশ্বকাপের পারফরম্যান্সেই।

বাংলাদেশের ভরাডুবিতে সাবেক অধিনায়ক ও বর্তমান নির্বাচক কমিটির সদস্য হাবিবুল বাশার জানান বার বার স্লো উইকেটে খেলার কারণেই এমন অবস্থা ব্যাটারদের। একই সাথে পাওয়ার হিটার না বের করতে পারার কারণ হিসেবে তুলে ধরেন ঘরোয়া ক্রিকেটে ব্যাটিং উইকেটে না খেলতে পারা।

তিনি বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড সিরিজের উইকেট নিয়ে অনেক কথা হয়েছে। তবে এটাও মনে রাখতে হবে যে জয়টা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। যদি টি-টোয়েন্টিতে আমাদের ভালো করতে হয় অবশ্যই আমাদেরকে ব্যাটিং উইকেটে খেলতে হবে। ঘরোয়া ক্রিকেটে আমরা ভালো ব্যাটিং উইকেট পাইনা কারণ একই উইকেটে বার বার খেলা হয়। যার কারণে আমরা পাওয়ার হিটার তৈরিতে ব্যর্থ হই। যদি আমরা এই জায়গায় উন্নতি করতে চাই তাহলে আমাদেরকে ঘরোয়া ক্রিকেটে অবশ্যই ব্যাটিং উইকেট বানাতে হবে।’

বিশ্বকাপে বাংলাদেশি ব্যাটাররা দেখিয়েছে হতাশাজনক পারফরম্যান্স। পাওয়ারপ্লে এবং ডেথ ওভারে তুলতে পারেননি সন্তোষজনক রান। এ নিয়েও আক্ষেপ ছিলো বাশারের কণ্ঠে।

বাশার বলেন, ‘ব্যাটিংটাই ছিল মূল সংকট। কিন্তু আমাদের ব্যাটাররা পুরো বিশ্বকাপেই সেটা দেখাতে ব্যর্থ। আমরা প্রত্যাশা অনুযায়ী ভালো খেলতে পারিনি। আমাদেরকে অবশ্যই পাওয়ারপ্লেতে ব্যাটিংয়ে আরো উন্নতি করতে হবে যদি আপনি এমন একটা মেগা ইভেন্টে ভালো ফল আশা করেন। আমরা ডেথ ওভারেই দ্রুত রান তুলতে ব্যর্থ হয়েছি। শেষের দিকে আমাদের কিছু পাওয়ার হিটার প্রয়োজন। আমাদেরকে পাওয়ার হিটিং নিয়ে কাজ করতে হবে যাতে ডেথ ওভারে গড়ে ১০-১২ রান করে নেওয়া যায় ওভার প্রতি।’

এখন পর্যন্ত ৬ ম্যাচে ১২ টি ক্যাচ মিস করেছে বাংলাদেশি ফিল্ডাররা। ফিল্ডিংয়ে এমন বাজে প্রদর্শনী যে ম্যাচে প্রভাব পড়েছে সেটা আর আলাদা করে বলার প্রয়োজন নেই। তবে বাশারের মতে মনস্তাত্তিক চাপ থেকেই এমন ভুল করছে ফিল্ডাররা। সেই সাথে তিনি মনে করেন চাপের মূহুর্তে নার্ভ ধরে রাখাটাও জরুরি।

তিনি বলেন, ‘আমরা যথেষ্ট ফিল্ডিং অনুশীলন করি। আমি মনে করি সাইকোলজিক্যাল স্ট্রেসটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। সেটা হোক ঘরের মাঠে কিংবা বড় কোনো ইভেন্টে। আমি মনে করি ক্যাচ মিস বা ফিল্ডিং মিসটা মানসিক চাপ থেকেই হয়েছে। কিন্তু যারা মিস করেছে তারা আমাদের সেরা ফিল্ডারদেরই একজন। তাই আমার মতে আমাদের শেখা উচিত এমন চাপের পরিস্থিতিতে কিভাবে সবকিছু মোকাবেলা করতে হবে। এই ব্যাপারে আরো কাজ করতে হবে আমাদের।’

বিশ্বকাপের পরেই ঘরের মাটিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ। তবে সাবেক এই অধিনায়ক মনে করেন আপাতত তাদের লক্ষ্য বিশ্বকাপের বাকি দুই ম্যাচ। বিশ্বকাপ শেষে পাকিস্তান সফর নিয়ে ভাববে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।

বাশার বলেন, ‘আমরা এখনো আছি বিশ্বকাপে এবং আমাদের দুইটা ম্যাচ আছে এখনো। অবশ্যই আমাদের ভবিষ্যতে কিছু পরিকল্পনা আছে তবে আপাতত পরের দুই ম্যাচটাতেই আমাদের মনযোগ। বিশ্বকাপের পরে পাকিস্তান সিরিজের আগে আমরা বেশ কিছু সময় পাবো এসব নিয়ে ভাবার জন্য। আপাতত আমরা বর্তমান বিশ্বকাপ স্কোয়াড নিয়েই ভাবছি।’

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...