‘স্টারকিড’ ব্যাপারটা কেবল সিনেমার জগতেই নয় – ক্রিকেটের দুনিয়াতেও খাটে। বিশেষ করে ভারতীয় ক্রিকেটেই এর ভুড়ি ভুড়ি নজীর পাওয়া যায়। সবচেয়ে আলোচিত স্টারকিড ছিলেন সুনীল গাভাস্কারের ছেলে রোহান গাভাস্কার। তবে, তিনি খুব বেশি এগোতে পারেননি। জাতীয় দলের হয়ে ওয়ানডে খেললেও আহামরী কোনো ক্যারিয়ার তাঁর ছিল না।
এদিকে, ভারতীয় ক্রিকেটে শচীন টেন্ডুলকার, রাহুল দ্রাবিড়দের মত তারকারা এসেছেন। গড়ে তুলেছেন এক ক্রিকেট সংস্কৃতি। যার ফলে তাদের সন্তানরাও আসছে ক্রিকেটে। ভারতীয় ক্রিকেটে এই রকম ক্রিকেট পরিবার বেশ কয়েকটিই আছে। যারা পারিবারিক ভাবেই ক্রিকেটের সাথে সংশ্লিষ্ট। আর ক্রিকেটেও আসতেও তাঁদের কোনো বাধা নেই।
- অর্জুন টেন্ডুলকার (শচীন টেন্ডুলকারের ছেলে)
শচীন টেন্ডুলকারের পুত্র অর্জুন টেন্ডুলকার। অনেকেই শচীনকে বিবেচনা করেন ক্রিকেট ঈশ্বর হিসেবে। বাবার পদাঙ্ক অনুসরণ করে ক্রিকেটে এসেছেন অর্জুন টেন্ডুলকার। তবে বাবার মত ব্যাটসম্যান হিসেবে আসেননি ক্রিকেটে।
হয়েছেন বাঁহাতি পেস বোলিং অলরাউন্ডার। তাঁর বাঁহাতি বোলিং এ আহত করেছিলেন ইংলিশ উইকেট রক্ষক ব্যাটসম্যান জনি বেয়ারস্টোকে। বাঁহাতি পেস বোলিং এর পাশাপাশি ব্যাটিংটা বেশ ভালোই করেন তিনি। বাবা শচীন টেন্ডুলকারের নামের প্রতি কতটা সুবিচার করতে পারবেন সেটা সময়ই বলে দিবে। যদিও, শচীন নিজে ছেলের ক্যারিয়ারের বিকাশের জন্য চেষ্টার কমতি রাখছেন না।
- সামিত দ্রাবিড় (রাহুল দ্রাবিড়ের ছেলে)
ভারতীয় ব্যাটিং গ্রেট রাহুল দ্রাবিড়ের পুত্র সামিত দ্রাবিড়। সে বয়সে অনেক ছোটো। কিন্তু এই ছোট্ট কাঁধে এখনই দেয়া হচ্ছে অনেক চাপ। স্কুল ক্রিকেটে দূর্দান্ত পারফর্ম করছেন সামিত। স্কুল ক্রিকেটে দুইটি দ্বিশতক হাঁকিয়ে নজরে আসেন সামিত।
বাবার মত ধীর গতির ক্রিকেটার নন সামিত। মারকাটারী ক্রিকেট খেলতে পছন্দ করেন সামিত। ব্যাটিং এর পাশাপাশি বেশ ভালো বোলিং করতে পারেন সামিত। স্কুল দলকে অনেকবারই একা হাতে ম্যাচ জিতিয়েছেন সামিত। সামিতের ক্রিকেট উন্নতি দেখতে মুখিয়ে আছে সবাই।
- আরমান জাফর (ওয়াসিম জাফরের ভাতিজা)
আরমান জাফরের বাবা বড় কোনো ক্রিকেটার ছিলেন না। আরমান জাফরের চাচা ওয়াসিম জাফর। ভারতের রঞ্জি ট্রফির সেরা ব্যাটসম্যান ওয়াসিম জাফর। ওয়াসিম জাফরের উঠে আসার পিছনে বড় অবদান আছে আরমান জাফরের বাবার। সেই সূত্রেই ক্রিকেটে হাতে খড়ি আরমান জাফরের।
এই ক্রিকেটার কোনো খারাপ খবরের শিরোনাম হননি কখনো। শিরোনাম হয়েছেন দূর্দান্ত ক্রিকেট পারফর্মেন্সের কারণে। এই মারকুটে ব্যাটসম্যান কোচবিহার ট্রফিতে টানা তিনটি দ্বিশতক হাঁকান। যেখানে গড় ছিলো ২২৩.৭৫। ২০১৬ সালে আইপিএলে খেলেছেন কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের হয়। বাংলাদেশের মাটিতে ইমার্জিং এশিয়া কাপও খেলেছেন। এই ক্রিকেটার যেভাবে প্রস্তুত হয়ে পেশাদার ক্রিকেটে এসেছেন তাতে মনে হয় খুব দ্রুতই হারিয়ে যাবেন তিনি।
- আরিয়ান ব্যাঙ্গার (সঞ্জয় ব্যাঙ্গারের ছেলে)
সাবেক ভারতীয় ব্যাটসম্যান এবং কোচ সঞ্জয় বাঙ্গারের পুত্র আরিয়ান ব্যাঙ্গার। ভারতীয় দলের বোলিং কোচ ভরত অরুণ ব্যাটসম্যানদেরকে পরামর্শ দিতে গিয়ে জানান আরিয়ান ব্যাঙ্গার প্রতিভাবান একজন ক্রিকেটার। আরিয়ান পুন্ডিচেরির হয়ে তাঁর প্রতিভার জানান দিয়েছেন।
কুচবিহার ট্রফিতে ৫ ম্যাচে করেন ৩০০ রান। ৫ ম্যাচে একটি ১৫০ রানের ইনিংস এবং দুইটি হাফ সেঞ্চুরি করেন আরিয়ান।ব্যাটিং এর পাশাপাশি বল হাতে নিয়েছিলেন ২০ উইকেট। আরিয়ান ব্যাঙ্গার বর্তমানে লিস্টারশায়ারের হয়ে খেলছেন জুনিয়র কাউন্টি। তাহলে কি ইংল্যান্ডের হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলতে চান তিনি? কে জানে!