আমি অন্য কারও হাতের ভেতর একমুঠো ছাই
আমি অন্য কিছু নই, আমি সবাই
কিছু মানুষের চাহনিতেই ট্র্যাজেডি থাকে, জীবনের পাতায় পাতায় মোড়ানো সব গল্প, না পাওয়ার আর হারানোর। এসব নিয়েই তাদের জীবন, রুপালি আলোর মাঝে কৃষ্ণগহ্বর তার মাঝে উচ্ছাস এবং কষ্ট।
এইতো এক মাস হলো, তার ১৮ বছর বয়সী সন্তান মারা গিয়েছেন বাইক এক্সিডেন্টে আর তার জীবনের ৪৫ পূর্ণ হলো।
নাম মাইকেল বালাক, পেশা ফুটবলার। ফুটবলার হিসেবে তাকে অপূর্ণ বলাটা অপরাধ হবে বৈকি।
মধ্যমাঠে থেকে মাঠ পরিচালনা করতেন, ফুটবলের মাঠে যাদের চোখে মুখে কর্মঠ রাগী মানুষের প্রতিবিম্ব ফুঁটে উঠতো তাদের একজন বালাক।
অবাক করা সব কাজ করেছেন তিনি, বেয়ার লেভারকুজেনকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনাল খেলিয়েছেন তিনি, জিদানের কাছে হেরে গিয়েছেন। সেই থেকে শুরু, সেই মৌসুমে লেভারকুজেন জার্মান লীগে দ্বিতীয় হয়, সেই মৌসুমে জার্মান কাপে হেরে যায় শালকের সাথে!
এই বোধহয় শুরু, দ্বিতীয় হওয়ার শুরু। বালাক এরপর জার্মানির অবশ্যম্ভাবী গন্তব্যে যান, বায়ার্ন মিউনিখ!
চার বছর সেখানে কাটিয়ে যান চেলসিতে।
সেখানেও দ্বিতীয় হওয়ার হিড়িক পড়ে যায়, তবু জয়ও কম নেই বালাকের, বালাক চেলসির প্রিমিয়ার লীগ জয়ের শুরুর নায়ক, চারটি বুন্দেসলিগা শিরোপা আছে তার, তিনটি জার্মান কাপ, তিনটি এফএ কাপ।
জার্মানিতে তবু তাঁকে বলা হয় ‘অপূর্ণ’ – একই সাথে অপ্রত্যাশিত! ২০০৮ সালে জন টেরির পেনাল্টি মিস মস্কোতে তাঁকে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ পেতে দেয়নি। দুর্দমনীয় স্পেন তাকে জিততে দেয়নি ইউরো।
কেভিন প্রিন্স বোয়েটাং-এর ট্যাকল তাকে ২০১০ বিশ্বকাপে খেলতে দেয়নি! অধিনায়ককে ছাড়া বিশ্বকাপে যেতে হয় জার্মানীর জাতীয় দলকে। বালাক হারিয়ে যাচ্ছিলেন ধীরে ধীরে, ফিলিপ লামের হাতে অধিনায়কের ব্যান্ড, জোয়াকিম লো’র পরিকল্পনায় ছিলেন না বালাক!
জার্মানি চেয়েছিল তাদের অধিনায়ককে আনুষ্ঠানিক বিদায় দিতে ব্রাজিলের সাথে, কিন্তু এই অফার বালাকের পছন্দ হয়নি! বিদায়টাও অপূর্ণ থেকে গেল ফুটবলের ট্র্যাজিক হিরোর। বিদায়ের আগে জার্মানীর জার্সি পড়ে তার মাঠে নামা হয়েছে ৯৮ বার।
১০০ হয়নি বালাকের, হয়নি পাওয়া অনেক হাতের মুঠোয় থাকা প্রাপ্তি! কিন্তু বালাক থাকবেন! বড় বড় নামের পাশেই।
বালাক বলতেই পারেন আপন সুরে-
আমি অন্য কিছু গাইবো বলে তোমার কাছে এসে
সবাই, কেবল সবাই হয়ে যাই