বুমরাহ-শামি, এই পেস জুটির সামনে দাঁড়ানোর সাধ্য কার?

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ফাইফারের পর সর্বশেষ ম্যাচে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে নিয়েছেন আরো ৪ উইকেট। সব মিলিয়ে ২ ম্যাচে ৯ উইকেট নিয়ে রীতিমত উড়ছেন এ পেসার। 

বিশ্বকাপের প্রথম চার ম্যাচে দর্শকের ভূমিকায় ছিলেন ভারতীয় পেসার মোহাম্মদ শামি। তবে হার্দিক পান্ডিয়ার চোটে কপাল খুলে গিয়েছে তাঁর। ‘ফেরারি’ শামি একাদশে ফিরেই দেখাচ্ছেন ঝলক। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ফাইফারের পর সর্বশেষ ম্যাচে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে নিয়েছেন আরো ৪ উইকেট। সব মিলিয়ে ২ ম্যাচে ৯ উইকেট নিয়ে রীতিমত উড়ছেন এ পেসার।

অবশ্য বিশ্বকাপের মঞ্চ মানেই বল হাতে মোহাম্মদ শামির রুদ্রমূর্তি। ভারতের হয়ে বিশ্বকাপে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেট তাঁর। তবে এই বিশ্বকাপেই ছাড়িয়ে যেতে পারেন যুগ্মভাবে শীর্ষে থাকা জাভাগাল শ্রীনাথ আর জহির খানকে। ভারতের সাবেক এই দুই সাবেক পেসারেরই ঝুলিতে আছে ৪৪ টি উইকেট। সেখানে ১৩ ম্যাচেই ৪০ উইকেট নিয়েছেন শামি।

শ্রীনাথ, জহির খানদের টপকে যাওয়া যে এখন শামির জন্য সময়ের ব্যাপার মাত্র তার পক্ষে স্বাক্ষ্য দিচ্ছে দুর্দান্ত এক পরিসংখ্যান। বিশ্বকাপে খেলা সর্বশেষ ৫ ম্যাচে শামি নিয়েছেন ২৩ উইকেট। এখনও নিশ্চিতভাবেই ৪ ম্যাচ খেলার সুযোগ পাবেন শামি। ভারত ফাইনালে পা রাখলে সেই সংখ্যাটা হতে পারে ৫। বাকি ৪ বা ৫ ম্যাচে তাই শামির জন্য ৫ উইকেট পাওয়াটা এখন সহজ সাধ্যই বটে।

বিশ্ব ক্রিকেট কোর্টনি ওয়ালস-কার্টলি অ্যামব্রোসের বোলিং জুটি দেখেছে, স্বাক্ষী হয়েছে ওয়াসিম আকরাম-ওয়াকার ইউনিসের বিধ্বংসী পেস জুটিরও। গ্লেন ম্যাকগ্রা-ব্রেট লি জুটির কথাই বা ভোলা সম্ভব কীভাবে?

তো সেই যাত্রায় এবারের বিশ্বকাপে যেন আরেকটা জুটি হয়ে উঠেছেন বুমরাহ-শামি জুটি। মাত্র দুই ম্যাচেই কিংবদন্তি পেস জুটির পাশে বসানো অতিরঞ্জিতই মনে হতে পারে। তবে, এবারের বিশ্বকাপে এ দুই পেসার যেন প্রতিপক্ষের কাছে ক্রমেই হয়ে উঠছেন মূল ত্রাসের কারণ।

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে মাত্র ২২৯ রান তুলেও সেই ম্যাচ ১০০ রানে জেতা সম্ভব হয়েছে এ দুই পেসারের বোলিং তাণ্ডবে। ২ ম্যাচে ৮.৪৪ বোলিং গড় আর ১১.৩৩ স্ট্রাইক রেটে শামির নিজের নামের পাশে যোগ করেছেন ৯ উইকেট। যেখানে তার বোলিং ইকোনমি ৪.৪৭।

এবারের বিশ্বকাপ শীর্ষ ১৫ উইকেটশিকারীদের মধ্যে শামির মতো বোলিং গড় আর স্ট্রাইকরেট নেই আর কোনো বোলারদের। শুধু ৩.৯৭ বোলিং ইকোনমিতে মিতব্যায়ী বোলার হিসেবে শামির চেয়ে এগিয়ে আছেন জাসপ্রিত বুমরাহ। অর্থাৎ বোলিংয়ের এক প্রান্ত দিয়ে বুমরাহ যেমন প্রতিপক্ষকে চেপে ধরেছেন, অপরপ্রান্তে নিজের সুইং দিয়ে উইকেট তুলে নিয়ে প্রতিপক্ষকে ধরাশায়ী করছেন শামি।

শামি-বুমরাহ এর আগেও একসাথে বোলিং করেছেন। তবে এখনকার মতো এই জুটি আগে কখনো কি চোখে পড়েছে? খুব সম্ভবত না। এবারের বিশ্বকাপের কথাই ধরা যাক। পাকিস্তানে আছে শাহীন-রউফ জুটি, অস্ট্রেলিয়া স্টার্ক-হ্যাজলউড, নিউজিল্যান্ডে বোল্ট-হেনরি। পেস জুটি হিসেব করলে, এই তিনটি দলেরই পেস বোলিং লাইনআপ সামনে চলে আসবে।

সেই তুলনায় ভারতীয় পেসাররা যেভাবে পারফর্ম করে, তা নিয়ে আলোচনা হয় কম। মাত্র দুই ম্যাচের বিবেচনায় হয়তো, কোনো বোলিং জুটিকেই সেরা বলে গণ্য করা যায় না। তবে এখন পর্যন্ত বিশ্বকাপ যতদূর গড়িয়েছে, তাতে সবচেয়ে ভয়ংকর পেস জুটির নামটা বোধহয় বুমরাহ-শামি জুটি।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...