কয়লা খনির উপেক্ষা

মোহাম্মদ সিরাজ, উমরান মালিকদের মত পেসাররাও উঠে আসছেন ঘরোয়া টুর্নামেন্টগুলো থেকে। বেশ কয়েক বছর ধরে ভারতীয় পেস আক্রমণের কাণ্ডারি ছিলেন উমেশ যাদব। কিন্তু নিয়মিত পারফর্ম করেও উমেশ সব সময় জাতীয় দলে উপেক্ষিত ছিলেন বলে মনে করেন উইকেটরক্ষক ব্যাটার দীনেশ কার্তিক।

স্পিন কোয়াট্রেটের জন্য বিখ্যাত ভারতের পেস আক্রমণের জাগরণটা শুরু হয়েছে ১০-১৫ বছর ধরে। মোহাম্মদ শামি, জাসপ্রিত বুমরাহদের পেস আক্রমণ দেশে, বিদেশে নিয়মিত ম্যাচ জেতাচ্ছে ভারতকে। তীব্র প্রতিযোগিতামূলক ভারতীয় পেস ইউনিটে টিকে থাকাটাও অনেকটাই কঠিন এখন।

মোহাম্মদ সিরাজ, উমরান মালিকদের মত পেসাররাও উঠে আসছেন ঘরোয়া টুর্নামেন্টগুলো থেকে। বেশ কয়েক বছর ধরে ভারতীয় পেস আক্রমণের কাণ্ডারি ছিলেন উমেশ যাদব। কিন্তু নিয়মিত পারফর্ম করেও উমেশ সব সময় জাতীয় দলে উপেক্ষিত ছিলেন বলে মনে করেন উইকেটরক্ষক ব্যাটার দীনেশ কার্তিক।

পারফরম্যান্স সব সময় জাতীয় দলে ঢোকার একমাত্র পথ না। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ভাগ্যও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বুমরাহ,শামি, ইশান্ত শর্মাদের নিয়ে গড়া ভারতের পেস আক্রমণ বেশ সফলও ছিল বটে। ক্রিকেট ভিত্তিক জনপ্রিয় ওয়েবসাইট ক্রিকবাজের একটু অনুষ্ঠানে কার্তিক তুলে আনেন তাঁর সাবেক সতীর্থ উমেশ যাদবের উঠে আসা এবং সংগ্রামের গল্প। উমেশের বাবা ছিলেন কয়লা খনির একজন শ্রমিক। এমন একটি পরিবার থেকে উমেশ উঠে আসেন যেখানে সংগ্রামের গল্পটাই থাকে বেশি। ছোটবেলায় হতে চেয়েছিলেন পুলিশ অফিসার। কিন্তু সেখান থেকে হয়ে উঠলেন একজন পেস বোলার।

কার্তিক বলেন, ‘আপনাকে বুঝতে হবে সে কোন জায়গা থেকে উঠে এসেছে। সে একজন কয়লা শ্রমিকের সন্তান। পুলিশ একাডেমিতে যোগ দেবার চেষ্টা করছিল সে। কিন্তু সেদিকে সফল না হওয়ায় সে পেস বোলিংয়ে মনোযোগ দেয়া শুরু করলো। সে অনেক দ্রুত এগিয়েছে সেই সময়টায়। ২০০৮ সালে সে প্রফেশনাল ক্রিকেট খেলা শুরু করে এবং ২০১০ সালেই সে জাতীয় দলে সুযোগ পায়। তাঁর উঠে আসার গতিটা ছিল দুর্দান্ত। কিন্তু একটা পর্যায়ে এসে সে পারফর্ম করলেও সেভাবে আর আলোচনায় আসতে পারলো না।’

কার্তিক আরো বলেন, ‘যখন আপনার পেস অ্যাটাকে বুমরাহ, শামিদের মত পেস বোলার থাকবে এবং তৃতীয় পেসারের জায়গাটির জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে ইশান্ত ও উমেশের মত বোলার তখন বিষয়টি কঠিন। বেশিরভাগ সময়ই বুমরাহ,শামি ও ইশান্তকে নিয়ে পেস আক্রমণ সাজানো হত।’

নিয়মিত উইকেট পেলেও উমেশের জন্য সেটি পর্যাপ্ত ছিল না বলেই মনে করেন কার্তিক। অন্য অনেক পেসারের ভিরে হারিয়ে যেত উমেশের পারফরম্যান্স। একটা সময় নিয়মিত পারফর্ম করলেও উমেশ বেশিরভাগ সময় ‘উপেক্ষিত’ ছিলেন বলেই মনে করেন কার্তিক।

কার্তিক বলেন, ‘অনেক সময়ই সে উপেক্ষিত ছিল এবং সেটি তাঁর জন্য অনেক কঠিন ছিল কারণ সে সব সময়ই দুই বা তিন উইকেট পেলেও সেটি কখনো নজরে আসত না এবং দলে জায়গা পাবার জন্য যথেষ্ট হত না। তাকে অনেকটা ছুঁড়ে ফেলে দেয়া হয়েছিল। উমেশের জন্য সবচেয়ে কঠিন সময় ছিল যখন সে একটি আইপিএলের নিলামে অবিক্রিত ছিল।’

সেই কঠিন সময়কে জয় করে ফিরে আসেন উমেশ যাদব। নিলামে অবিক্রিত থাকলেও পরে তাকে দলে ভেরায় কোলকাতা নাইট রাইডার্স। সেই মৌসুমে মাত্র ৭.০৬ ইকোনমিতে ১২ ম্যাচে ১৬ উইকেট পান উমেশ। এমন দুর্দান্ত পারফরম্যান্স উপেক্ষা করতে পারেননি ভারতীয় নির্বাচকরাও। সেই আইপিএলের পর ভারতের টি-টোয়েন্টি দলে প্রত্যাবর্তন ঘটে এই পেসারের।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...