বিতর্ক শেষে ‘অবিতর্কিত’ সেরা ম্যাচ ফিনিশ

মেহেদি যখন আউট হলেন তখন রংপুর রাইডার্সের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ২৭ রান। বল ছিল আটটা। বাকিটা তো সোহানের সৌজন্যে লেখা হয়ে গেল ইতিহাসের পাতায়।

মিকি আর্থার-মোহাম্মদ রফিকদের বয়স কম হয়নি। তাঁরা এই বয়সে এসে যেভাবে পাগল প্রায় লাফ ঝাপ শুরু করলেন। কারণ একটাই, নুরুল হাসান সোহানের অবিশ্বাস্য, অসম্ভব আর প্রতাপশালী এক ইনিংস। সাত বলে ৩২ রানের এক স্পেশাল এক ইনিংস। বলে বলে চার আর ছক্কা হাঁকালেন। শেষ ওভারে জিততে দরকার ছিল ২৬ রান। সোহান করেছেন ৩০ রান। প্রতিটা বলেই হয় চার না হয় ছক্কা। ব্যস, লেখা হয়ে গেল রূপকথা। ছবির মত চোখ ধাঁধানো এক ম্যাচ ফিনিশ।

যদিও এর আগে ম্যাচটা যথেষ্ট নাটকের জন্ম দিল বিপিএলের সৌজন্যে সাধারণ ব্যাপার হয়ে দাঁড়াল অবস্ট্রাকটিং দ্য ফিল্ড। সিলেটের ১৯ তম ওভারে অবস্ট্রাকটিক দ্য ফিল্ডের শিকার হন শেখ মেহেদী হাসান। বিষয়টা আইনে আছে, তবুও অদ্ভুত। ফিল্ডিংয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির কারণে আউট হতে হয়েছে তাকে।

ঘটনাটা ম্যাচের ১৯ তম ওভারে। বোলিং প্রান্ত থেকে জাহানদাদ খান বল ছুড়েছে। মেহেদির ব্যাটে লেগে বল উঠে গেছে হাওয়ায়। জাহানদাদ এগিয়ে এসে ক্যাচ লুফে নেওয়ার ছুটে এসেছেন। কিন্তু নন স্ট্রাইকিং প্রান্তে থাকা নুরুল হাসান রান নেওয়ার জন্য দৌড় শুরু করেন। একটা পর্যায়ে জাহানদাদের শরীরের বেশ কাছাকাছি পৌঁছে যান তিনি।

জাহানদাদ ক্যাচ আর তালু-বন্দি করতে পারেননি। বলের লাইনে পৌঁছাতে পারলেন না। তখনই গোটা ফরচুন বরিশাল দল আবেদন করে বসে। আম্পায়ার চলে যায় থার্ড আম্পায়ারের কাছে। টেলিভিশন রিপ্লেতে আম্পায়ার দেখলেন নুরুল হাসান সোহানের গতিবিধি ও তার নজর।

সেখানে সোহানের চোখ ছিল বলের দিকে। আম্পায়ার ভেবে নিলেন ইচ্ছাকৃত ভাবেই ক্যাচ নেওয়ার পথে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করেছেন সোহান। অগত্যা তৃতীয় আম্পায়ার জানালেন এটা আউট। মেহেদি হাসান ও সোহান এমন সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারেননি। মাঠে তারা আম্পায়ারের কাছে জানতে চেয়েছেন দোষটা কোথায়।

তবে সিদ্ধান্ত যেহেতু তৃতীয় আম্পায়ার প্রযুক্তি সর্বোচ্চ ব্যবহারটাই করেছেন, সেহেতু তার সিদ্ধান্ত বদলের সুযোগ নেই। তাছাড়া এসব ক্ষেত্রে খেলোয়াড়ের উদ্দেশ্য বুঝতে চান। সোহানের গতিবিধি ইচ্ছাকৃত ছিল বলেই ধারণা ছিল আম্পায়ারের। খেলার অবশ্য তখন বেশ উত্তেজনাকর অবস্থা।

এর আগেও থার্ড আম্পায়ার তানভির আহমেদ বিতর্কিত সিদ্ধান্ত দিয়েছেন প্রচুর। এমনকি এই ম্যাচেও শাহীন আফ্রিদির বলে স্বদেশী ইফতিখার আহমেদ যে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিলেন সেটাতেও ছিল সন্দেহ। সবগুলো সিদ্ধান্তই ছিল রংপুরের বিপক্ষে। সম্ভবত বিষয়টাতে সবচেয়ে বেশি ক্ষোভ ছিল অধিনায়ক সোহানের।

মেহেদি যখন আউট হলেন তখন রংপুর রাইডার্সের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ২৭ রান। বল ছিল আটটা। বাকিটা তো সোহানের সৌজন্যে লেখা হয়ে গেল ইতিহাসের পাতায়।

Share via
Copy link