আন্তর্জাতিক মঞ্চে দেশকে বাইশ গজের লড়াইয়ে প্রতিনিধিত্ব করার স্বপ্নটা সব ক্রিকেটারেরই থাকে। তবে সেই সাধ, ইচ্ছা কিংবা স্বপ্ন দূর আকাশের তারার মতো থেকে যায় সিংহভাগ ক্রিকেটারের জন্যই। ঘরোয়া ক্রিকেটের গণ্ডিতেই শেষ হয় অনেকের বাইশ গজের পথচলা।
ভারতীয় ক্রিকেটে এমন বহু প্রতিভাবান ক্রিকেটার রয়েছেন, যারা দারুণ সম্ভাবনা জাগিয়েও শেষ পর্যন্ত জাতীয় দলের দ্বার ভেদ করতে পারেননি। শুরুর আগেই শেষ হয়ে গিয়েছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা রাখার সুযোগ। চলুন দেখে নেওয়া যাক সেই সব ক্রিকেটারকেই।
- অভিমন্যু ঈশ্বরন
প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে তার গড়টা ৪৭ এর উপরে। লিস্ট এ আর টি-টোয়েন্টিতেও দেখিয়েছেন একই ব্যাটিং ধারাবাহিকতার প্রতিচ্ছবি। গড়টা ৪৬ এর উপরে। ঘরোয়া ক্রিকেটে দারুণ পারফর্ম করার পুরস্কার হিসেবে ভারত এ দল হয়ে ভারতের মূল টেস্ট দলেও সুযোগ পেয়েছিলেন।
কিন্তু, গত বছরের বাংলাদেশের বিপক্ষে সে টেস্ট সিরিজে একটি ম্যাচেও সুযোগ পাননি। আর ঐ সিরিজের পরই দল থেকে বাদ পড়ে যান ঈশ্বরন। ফলত, জাতীয় দলের দোরগড়ায় গিয়েও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেকের স্বাদটা শেষ পর্যন্ত পাননি এ ব্যাটার।
বেঙ্গলের হয়ে রঞ্জি খেলা এ ব্যাটারের বয়স এখন ২৮। একদম বাতিলের খাতায় ফেলে দেওয়ার মতো বয়স এটি না। তবে ভারতের ক্রিকেট সংস্কৃতি বলে, এই বয়সে নতুন করে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ক্যারিয়ার শুরু করেছেন হাতেগোনা কয়েকজন। সুরিয়াকুমার যাদব যাদের মধ্যে একজন। এখন অভিমন্যু ঈশ্বরন একজন সুরিয়া হয়ে উঠবেন কিনা, তা সময়ই বলে দিবে।
- শচীন বেবি
ভারতের ঘরোয়া ক্রিকেটে পরীক্ষিত এক নাম। সর্বশেষ রঞ্জি ট্রফিতে হয়েছেন পঞ্চম সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহক ব্যাটার। তবে বাঁহাতি এ ব্যাটারের এই সময়ে এসে জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়াটা কঠিনই বটে। কারণটা তাঁর বয়স। ৩৪ বছর বয়সী কোনো ব্যাটারকে যে এখন ভারতের টিম ম্যানেজমেন্ট বিবেচনা করবে না, তা অপ্রকাশিত সত্যই বটে।
- অর্জুন টেন্ডুলকার
বাবা শচীন টেন্ডুলকা ক্রিকেট ইতিহাসেরই সর্বকালের সেরাদের একজন। তাঁর পদচ্ছাপ একে পুত্র অর্জুন টেন্ডুলকারও এখন পুরোদস্তুর ক্রিকেটার। সর্বশেষ আইপিএলে খেলেছেন মুম্বাই ইন্ডিয়ানসের হয়ে। তার আগে রঞ্জি ট্রফিতে অভিষেকও হয়েছে। তারপরও শচীন পুত্রের ভারতের জার্সিতে মাঠে নামার সম্ভাবনা কমই।
এর প্রথম কারণটা ভারতীয় স্কোয়াডে জায়গা পাওয়ার মতো পারফর্ম এখন পর্যন্ত করে দেখাতে পারেননি অর্জুন টেন্ডুলকার। আর দ্বিতীয় কারণটা হলো, পেশাদার ক্রিকেটে নিজের জায়গা করে নিতে গিয়েই অর্জুনের বয়সটা ২৩ পেরিয়ে গেছে।
এরপরও এখনও ক্যারিয়ারে থিতু হতে পারেননি। রঞ্জি ট্রফিতে যদিও ব্যাট হাতে একটি সেঞ্চুরি করেছিলেন, তবে বল হাতে তিনি ছিলেন একদম নির্বিষ। মূলত এসব কারণেই শচীন পুত্রকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট দেখার সম্ভাবনা ক্ষীণ।
- জিতেশ শর্মা
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে তাঁর ব্যাটিং সক্ষমতা আগেই দেখেছে আইপিএল। এখন পর্যন্ত ২ মৌসুমে প্রায় ২৬ গড়ে ব্যাট করেছেন। তবে তাঁর স্ট্রাইক রেট টা ছিল দেখার মতো, ১৬০ এর কাছাকাছি। কিন্তু মহারাষ্ট্র থেকে উঠে আসা এ ক্রিকেটারের জন্য জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়াটা কঠিনই।
কারণ ২০১৫ সালে স্বীকৃত ক্রিকেটে অভিষেক হওয়া এ ক্রিকেটারের বয়স এখন ৩০ ছুঁইছুঁই। এই বয়সে ভারতের জার্সি গায়ে চাপানো শুধু কঠিনই নয়, অনেকটা দু:সাধ্যও বটে।