কিক অফ থেকে প্রতিপক্ষকে থ্রো-ইন উপহার, কিন্তু কেন?

ইউরোপ থেকে আগত এই কৌশল কিন্তু দু'ভাবেই ব্যবহারযোগ্য। খালিদ জামিল না পারলেও হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরার নিশ্চয়ই এনরিকেকে বলতে পারবেন, 'গ্রাসিয়াস'!

রেফারির বাশি। খেলার শুরু, আর ওমনি এক সজোরে কিক। বল চলে গেল, প্রতিপক্ষের ডি-বক্সের কাছাকাছি জায়গার সাইডলাইনের বাইরে। বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচেও জাতীয় স্টেডিয়াম দুইবার দেখল এমন ঘটনা। কিন্তু এমন অবান্তর শটের মানে কি? এমন প্রশ্ন যদি আপনার মাথায় এসে থাকে, তবে ধারণা বদলে ফেলুন- এটা পুরো ট্যাকটিক্যাল এবং এক প্রকার মাইন্ড গেম।

যেহেতু ফুটবল দুনিয়াতে ইউরোপীয়ান ফুটবলের প্রভাব বেশি। স্বাভাবিকভাবেই সেখান থেকেই অনুকরণের চেষ্টাও থাকে বেশি। আর এই ট্যাকটিসকে জনপ্রিয় করে তুলেছেন মূলত স্প্যানিশ কোচ লুই এনরিকে। তার অধীনে অধরা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ সহ ট্রেবল জিতেছে ফরাসি ক্লাব প্যারিস সেইন্ট জার্মেই।

তার খেলার ধরণের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ বলেই তিনি এই ট্যাকটিসকে সংযুক্ত করেছেন তার দল পিএসজি-এর গেমপ্লে-তে। মূলত বেশ হাই লাইন প্রেসিং করান লুই এনরিকে তার শীর্ষ্যদের দিয়ে। রীতিমত ডি বক্সের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকেন তার দুই অ্যাটাকার। এমন হাই লাইন প্রেসিং পজিশনে তার দল যেন শুরু থেকেই যেতে পারে, সে কারণে এমন পদ্ধতি অবলম্বন করেছেন স্প্যানিশ এই কোচ।

এতে তিনি সফলতাও পেয়েছেন। কিক অফ থেকে প্রতিপক্ষের ডি-বক্সের কাছাকাছি বল আউট করলে, প্রতিপক্ষে একটা থো-ইন পায় ঠিকই। কিন্তু গোটা দল পুরোপুরি মানসিক প্রস্তুতি ও ম্যাচের সাথে ধাতস্থ হওয়ার আগে ভুল করে বসতে পারে। আর যেহেতু এনরিকের শীর্ষ্যরা হাই প্রেসিংয়ের জন্য প্রস্তুত, তাই গোলের সম্ভাবনাও বেড়ে যেতে পারে। সে কারণেই এমন ট্যাকটিস অবলম্বন করা।

ভারতের কোচ খালিদ জামিলও খানিকটা প্রেসিং ফুটবল খেলতে পছন্দ করেন। সে কারণেই তার দল কিক অফের সাথে সাথে বাংলাদেশের অর্ধের দিকে শট চালায়। এনরিকের কাছাকাছি ভাবনার বাস্তবায়নই করতে চেয়েছিলেন খালিদ জামিলের শীর্ষ্যরা। অন্যদিকে বাংলাদেশ দল বিল্ডআপ গেম খেলার প্রচেষ্টাতে রয়েছে, সুতরাং তাদের তো বল ওভাবে বাইরে পাঠানোর কথা নয়। কিন্তু তবুও ক্যাবরেরার শীর্ষ্যরা কিক অফের পরই কেন শট চালালেন?

এর কারণও সহজ। বাংলাদেশ দল এগিয়ে। দল মাত্রই বিরতি কাটিয়ে ফিরেছে। মাঠের খেলার সাথে ধাতস্থ হওয়ার আগে, ভারতের প্রেসিং থেকে যেন অঘটন না ঘটে। সে কারণেই মূলত বাংলাদেশ দলও কিক-অফের পর বলকে এক লম্বা শটে মাঠের বাইরে পাঠিয়ে দিয়েছেন। ইউরোপ থেকে আগত এই কৌশল কিন্তু দু’ভাবেই ব্যবহারযোগ্য। খালিদ জামিল না পারলেও হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরার নিশ্চয়ই এনরিকেকে বলতে পারবেন, ‘গ্রাসিয়াস’!

লেখক পরিচিতি

রাকিব হোসেন রুম্মান

কর্পোরেট কেরানি না হয়ে, সৃষ্টি সুখের উল্লাসে ভাসতে চেয়েছিলাম..

Share via
Copy link