এলেন, দেখলেন, খেললেন, সময় নিয়ে বুঝে শুনে দেখে খেললেন, এবং হেরে গেলেন – এই যেন এখন মহেন্দ্র সিং ধোনির নিয়তি। চেন্নাই সুপার কিংসের অধিনায়ক তিনি আর নন। তিনি এখন আর দলের সেরা ফিনিশার নন। বরং, হাতের মুঠোয় থাকা ম্যাচ ফিনিশ করে দিয়ে আসেন তিনি। দল বিপদে থাকলে তিনি আরও বিপদ বাড়ান। উইকেটের পেছনে তিনি এখনও সেরা, কিন্তু একটা ভূমিকা দিয়ে তো আর চিড়ে ভিজবে না। তাহলে কেন তাঁকে বয়ে বেড়ানো?
ধোনি এখন আর চেন্নাইয়ের পরিকল্পনার সাথে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারছেন না। চেন্নাইয়ের ‘ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি’ অবস্থা। না তাঁরা পারছে ধোনিকে সইতে, না পারছে গিলতে। এ এক লেজেগোবড়ে অবস্থা। চার ম্যাচ খেলে তিনটিতেই হেরেছে এমএস ধোনির দল। এখানে ধোনির ‘অবদান’ই যে সবচেয়ে বেশি – সে আর বলে না দিলেও চলে।
দিল্লীর বিপক্ষে সর্বশেষ ম্যাচে ধোনি একাদশতম ওভারে মাঠে নামেন, দলের স্কোর তখন ৭৪। নয় ওভার দুই বল থেকে তখন জয়ের জন্য দরকার ১১০ রান। ধোনি শেষ পর্যন্ত থাকলেন, ২৬ বলে ৩০ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকলেন। জয়ের সামান্যতম ক্ষুধা তাঁর মধ্যে ছিল না।
মারকাটারি ব্যাটিং বলতে ১৮ তম ওভারে একটা ছক্কা আর শেষ ওভারে গিয়ে একটা চার। হ্যাঁ, ধোনিকে সাথে নিয়ে হয়তো বানিজ্যে বসতিটা গড়তে পারছে সিএসকে। ধোনি থাকার মানেই হল অসংখ্য স্পন্সরকে পাশে পাওয়া। কিন্তু, সেটা পেতে গিয়ে শিরোপার সান্নিধ্য থেকে দূরে সরে যাচ্ছে ইন্ডিয়া সিমেন্টের দলটি। এই অবস্থায়, এই মূহূর্তে ধোনিকে বাদ দেওয়ার কোনো বিকল্প নেই।
চেন্নাই দলে ধোনির এই নেতিবাচক অবদান নতুন কোনো ঘটনা নয়। এর সূত্রপাত সেই ২০২৩ সালের আইপিএল থেকে। ২০২৩ থেকে এখন পযন্ত সিএসকের জয় পাওয়া ১৩ ম্যাচে ব্যাটিং করেছেন ধোনি। রান ৬৯। গড় ১৩.৮০। আর হেরে যাওয়া ১৪ টি ম্যাচে থালার ব্যাট থেকে এসেছে ২৭২ রান, গড় ৯০.৬৬। মানে, ধোনির ব্যাটে রান আসছে ঠিকই। কিন্তু, সেটা দলের পরাজয়ের কারণ হচ্ছে।
প্রশ্ন হল, ধোনির মত একজন মহারথী কেন বারবার এই সমালোচনার ভাগিদার হবেন? তিনি নিজে চাইলেই এবার ছেড়ে দিতে পারেন। বয়স এখন প্রায় ৪৪। তাঁর বয়সী কেউ এখন নেই আইপিএলে। বাকিরা বাস্তবতা মেনে নিয়েছেন, ধোনিকেও মানতে হবে। ক্রিকেটের মত পারফরমিং আর্টের বাস্তবতা সবাইকেই মানতে হয়। না মানলে, তাঁর পরিণতি হতে পারে খুবই করুণ। ধোনি যেচে পড়ে নিজের করুণ ইতি টানবেনই বা কেন!