প্রথম প্রশ্ন হলো, ইয়াসির আলী চৌধুরী রাব্বি কী খেলতে পারতেন?
এই প্রশ্নের উত্তর – হ্যাঁ। রাব্বি পুরোপুরি ফিট। তার শরীরে বা মনে কোনো ধরণের সমস্যা নেই। ফলে অনায়াসে তিনি খেলতে পারতেন। তাহলে খেললেন না কেনো? কেনো একাদশে সুযোগ হলো না?
পাল্টা প্রশ্ন, রাব্বিকে খেলাবেন কার জায়গায়?
সাকিব আল হাসানকে তো দলে নিতেই হবে। তাহলে রাব্বিকে খেলানোর উপায় কী? হ্যাঁ, একটা উপায় ছিলো। বাংলাদেশ যদি চিরায়ত মিরপুর টেস্টের মত করে এক পেসার নিয়ে খেলতো, তাহলে রাব্বির জায়গা হতো। সাকিবসহ ৮ ব্যাটসম্যান ও ৪ বোলার খেলানোর সুযোগ তো আছেই। ফলে এই কৌশলে রাব্বিকে একাদশে রাখা যেতো।
আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে মুমিনুল হক ধারণা দিয়েছিলেন, তারা চার বোলার নিয়ে খেলবেন। সে ক্ষেত্রে কম্বিনেশনটা কল্পনা করা খুব কঠিন ছিলো না। সাকিব, তাইজুল, মিরাজ এবং একজন পেসার; এই হতো চার বোলারের আক্রমণ। সে ক্ষেত্রে রাব্বি একাদশে থাকতেন।
এখন কথা হলো, আমরা তো এক পেসার এবং চার বোলারের দলের বিপক্ষেই বলি সবসময়। এটাকে আমরা নেতিবাচক একাদশ বলেই অবিহিত করি। তাহলে কী আমরা সেই এক পেসারের দল এবং চার পেসারের একাদশের পক্ষে ওকালতি করছি?
একদমই না।
আমরাও চাই দেশের মাটিতে বাংলাদেশ দুই বা তিন পেসার নিয়ে খেলুক। যাতে করে নিউজিল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে হঠাৎ করে দুই পেসার নামিয়ে আমাদের বিব্রত হতে না হয়। আমরাও চাই, সকাল বেলায় দুই প্রান্ত থেকে উইকেটে ঝড় তুলুন দুই ফাস্ট বোলার। আমরাও সকাল বেলায় উইকেটের ময়েশ্চার কাজে লাগিয়ে ফাস্ট বোলারদের সুইং দেখতে চাই।
কিন্তু প্রশ্ন হলো, এই পেসারদের দিয়ে কী আমরা সেসব পাচ্ছি? এই উইকেটে কী পেসারদের জন্য আদৌ কিছু রেখে খেলতে নেমেছি আমরা?
এবাদত হোসেন ও খালেদ আহমেদের প্রতি সর্বোচ্চ সম্মান দেখিয়েই বলা যায় যে, একটা টেস্টের দু জন ফ্রন্টলাইন বোলার হওয়ার মত ফাস্ট বোলার তারা নন। কেবল মিরপুরে প্রথম ঘন্টায় একেবারেই নির্বিষ বল করেছেন বলে নয়, তাদের আসলে এই পর্যায়ে সেই বিষ ছড়ানোর যোগ্যতা নিয়েই সন্দেহ করা যেতে পারে। খালেদ বা এবাদত, কেউ এই ম্যাচে ৫ উইকেট পেয়ে গেলেও এটা সত্যি কথাই থাকবে।
তাসকিন আহমেদ থাকলে হয়তো আলোচনা ভিন্ন হতে পারতো। কিন্তু ইনজুরি থেকে পুরোপুরি সেরে না ওঠায় তাকে একাদশে নেওয়া যায়নি। ফলে এবাদত ও খালেদের ওপরই ভরসা করতে হয়েছে। কিন্তু এমন দু জন অলঙ্কারসূলভ বোলারকে ৫ দিন ধরে বহন করার বিলাসিতা দেখানোর সুযোগ কী আছে আমাদের?
মনে হয় না।
তাই নিজেদের কথা নিজেরাই গিলে বলতে হচ্ছে, এই উইকেটে এর চেয়ে এক পেসার খেলানো ঢের ভালো ছিলো। দু জন ফাস্ট বোলার বল করে ব্যাটসম্যানদের সেট করে দেবেন। এরপর সেই স্পিনারদেরই সারাদিন ধরে বল করতে হবে। তাদেরই উইকেট নিতে হবে। এর চেয়ে ঢের ভালো একজন ব্যাটসম্যান বেশি নিয়ে খেলা।
বিশেষ করে আমাদের টপ অর্ডার যখন কিছুতেই ক্লিক করছে না, সে ক্ষেত্রে লেজটা একটু বড় করাটাই সেরা সমাধাণ হতে পারতো।
আগের টেস্টেই অভিষিক্ত রাব্বি যে দৃঢ়তা দেখিয়েছেন, তাতে আরেকটা সুযোগ তার প্রাপ্য ছিলো। তিন বছর ধরে পানি টানা ছেলেটিকে এভাবে ‘হায়ার-ফায়ার’ করাটা আর যাই হোক, ক্রিকেট নয়।