ভারতে বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেত মিরপুরে রীতিমত মিরাকল ঘটিয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ক্রিকেট পাড়ায় এখন শুধু উচ্চারিত হচ্ছে একটাই নাম। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভেসে বেড়াচ্ছে সাকিবের মিরাজকে কাঁধে নেয়ার দৃশ্য। শেষ উইকেট জুটিতে মুস্তাফিজকে সাথে নিয়ে মিরাজের এমন ব্যাটিং মুগ্ধ করেছে গোটা ক্রিকেট দুনিয়াকে।
সব মিলিয়ে প্রথম ওয়ানডে ম্যাচ জিতে বাংলাদেশ দল এখন বেশ ফুরফুরে মেজাজে। আরেকটি ম্যাচ জিততে পারলেই আরেকবার ঘরের মাঠে সিরিজ হারানো যাবে শক্তিশালী ভারতকে। এমন সুদিনেও কিছু প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে বাংলাদেশের একাদশ নিয়ে। ভারতের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচের একাদশে জায়গা হয়নি মিডল অর্ডার ব্যাটার ইয়াসির আলী রাব্বির। কিন্তু কেন?
ওয়ানডে ফরম্যাটে ধীরে ধীরে নিজের খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসতে শুরু করেছিলেন চট্টগ্রামের এই ছেলে। পাঁচ নাম্বার পজিশনে নিজের দায়িত্বটা বুঝে নিতে শুরু করেছিলেন। ইনজুরিতে ছিটকে যাওয়ার আগে তিনি সর্বশেষ ওয়ানডে সিরিজ খেলেছেন দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। আর দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে প্রথম ম্যাচ জয়ে বড় ভূমিকা ছিল রাব্বির।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতেই তাঁর ব্যাট থেকে এসেছিল ৫০ রানের ইনিংস। ক্রাইসিস মোমেন্টে রাব্বির সেই ইনিংস নজর কেড়েছিল ক্রিকেট দুনিয়ার। বলা হয় সেই ম্যাচে বাংলাদেশকে ম্যাচে টিকিয়ে রেখেছিল রাব্বির ওই ইনিংসটাই। তবুও এবার ঘরের মাঠে ভারতের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে একাদশেই জায়গা হলো না তাঁর।
ভারতের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ থেকে আগেই ছিটকে গিয়েছেন অধিনায়ক তামিম ইকবাল। ফলে লিটন দাসের সাথে আরেকপ্রান্তে ওপেন করার কথা এনামুল হক বিজয়ের। তবে এখানেও ডান-বাম তত্ব বজায় রেখেছে বাংলাদেশ। লিটনের সাথে ওপেন করতে পাঠানো হয় নাজমুল হোসেন শান্তকে। যদিও তিনি প্রথম বলেই আউট হয়ে সাঝঘরে ফেরেন। এরপর তিন নাম্বার পজিশনে খেলেন এনামুল হক বিজয়।
অথচ লিটনের সাথে বিজয় ওপেন করলে সহজেই ব্যাটিং লাইন আপে জায়গা দেয়া যেত ইয়াসির আলী রাব্বিকে। এছাড়া পাঁচ ও ছয় নাম্বারে ব্যাট করে দুই অভিজ্ঞ ব্যাটার মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে নিয়েও হতে পারে সমালোচনা।
এই দুজনই প্রথম ম্যাচে পরপর দুই বলে আউট হয়ে দলকে বিপাকে ফেলেছেন। এছাড়া এই দুজন ডট বল খেলে দলকে চাপেও ফেলেছেন। অথচ মাত্র ১৮৭ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে তাদেরই ম্যাচটা শেষ করে আসার কথা। সব মিলিয়ে ওয়ানডে ফরম্যাটে তাঁদের ব্যাটিংটাও দলের জন্য বোঝা হয়ে যাচ্ছে। অথচ রাব্বির মত সম্ভাবনাময় তরুণ ক্রিকেটাররা একাদশে সুযোগ পাচ্ছেন না।
২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপের আর খুব বেশি বাকি নেই। সব দলই এখন বিশ্বকাপকে পরিকল্পনা করে দল সাজাচ্ছে। বিশ্বকাপে কারা দলের জন্য ভালো হবে সেটাই এখন দলগুলোর মূল ভাবনা। মুশফিক-রিয়াদরা বিশ্বকাপে আদৌ বাংলাদেশকে সেরা সার্ভিসটা দিতে পারবেন কিনা সেই প্রশ্ন থেকেই যায়। ফলে রাব্বির মত তরুণদের সুযোগ দিয়ে তৈরি করা উচিৎ বাংলাদেশ দলের।
ওদিকে ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই এই বাস্তবতা দেখে আসছেন ইয়াসির আলী রাব্বি। প্রথমদিকে লম্বা সময় দলের সাথে থেকেও ম্যাচ খেলারই সুযোগ পাননি। এরপর সুযোগ পেয়েছে সাকিবের বদলি হিসেবে কিংবা কারো ইনজুরির কারণে। এমনকি এখন নিজেকে যখন প্রমাণ করছেন তখনো দলে জায়গা পাওয়া মুশকিল হয়ে যাচ্ছে রাব্বির জন্য।