আইপিএল নিলাম: সাকিবের দল না পাওয়ার ৫ কারণ

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এর আগে আর কোন ক্রিকেটার টানা ৫ ম্যাচে ম্যান অব দ্য ম্যাচ হননি। রেকর্ডটা আগের রাতেই করলেন মাত্র। ফলে পরের দিন আইপিএলের নিলামে সাকিব আল হাসানকে নিয়ে কাড়াকাড়ি করবে ফ্র্যাঞ্চাইজি গুলো সেই আশাই ছিল।

তবে এই সবকিছুই রইলো কল্পনাতে। বাস্তবতার নানা গোড়াকলে পড়ে দুইবার নিলামে নাম উঠার পরেও আগ্রহ দেখায়নি কোন ফ্র্যাঞ্চাইজি। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বিশ্বের অন্যতম সেরা এই অলরাউন্ডার আইপিএলে কেন দল পেলেননা তা নিয়ে ক্রিকেটপাড়া তোলপাড়। তবে সাকিবের এই দল না পাওয়ার কারণ হিসেবে আছে কাজ করেছে ৫ টি ফ্যাক্টর।

  • আইপিএল পারফর্মেন্স ও ইমপ্যাক্ট

সাকিব আল হাসান লম্বা সময় ধরে আইপিএলের নিয়মিত মুখ। তবে দুই একটা আসর বাদে আইপিএলে অলরাউন্ডার সাকিবকে খুঁজে পাওয়া গিয়েছে খুব কমই। ফ্র্যাঞ্চাইজি গুলো তাঁদের ব্যাটিং লাইন আপে বিধ্বংসী ব্যাটসম্যান চায়। সাকিবকে দিয়ে সেই চাহিদা না মেটায় দলগুলো সাকিবকে ব্যবহার করেছে স্পিন বোলিং অলরাউন্ডার হিসেবেই।

আর গত কয়েক বছরে ভারতের লোকাল ক্রিকেটে একটা জাগরণ ঘটেছে। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে তাঁদের দেশেই স্পিনারের সংখ্যা অনেক। আর বিদেশি স্পিনার যাদের নিচ্ছে তাঁদের হতে হয়ে খুব বেশি রহস্যময়। ফলে বিদেশি কোটা থেকে সাকিবের দল পাওয়া হয়ে গিয়েছে ভীষণ কঠিন।

  • গতবারের স্লান মৌসুম

এই মুহূর্তে দারুণ ফর্মে থাকলেও সাকিব সেটা প্রমাণ করছেন বিপিএলে। বিপিএলে আর আইপিএলের ক্রিকেটে মানে বিস্তর পার্থক্য থাকায় দলগুলো সেটাকে কতটা গুরুত্ব দিচ্ছে এটাও ভাববার বিষয়।

ফলে আইপিএলে শেষ মৌসুমের পারফর্মেন্স এখানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কিন্তু গত আইপিএলে সাকিব ছিলেন একেবারেই মলিন। ৮ ম্যাচ খেলে নিয়েছিলেন মাত্র ৪ উইকেট। এছাড়া ব্যাট হাতে করেছিলেন মাত্র ৪৭ রান।

  • প্রাপ্যতা

উপরের দুটি ফ্যাক্টরের পরেও একটা কিন্তু থেকে যায়। যতযাইহোক, ক্রিকেটারটা তো সাকিব আল হাসান। ব্যাট কিংবা বল যেকোন একটা দিয়ে তিনি ভূমিকা রাখবেনই।

ফলে অন্তত একটা দল তো তাঁকে নেয়ার ব্যাপারে আগ্রহ দেখানোরই কথা। এখানেই বাঁধা হয়ে দাড়িয়েছিল সাকিবকে পুরো মৌসুমে পাওয়ার ব্যাপারটা। আইপিএলের সময় সাকিব বাংলাদেশের হয়ে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচ খেলবেন। ফলে তাঁকে নিয়ে পুরো মৌসুম কোন ফ্র্যাঞ্চাইজি পরিকল্পনা করতে পারেনি।

  • ভিত্তিমূল্য

আইপিএলের নিলামে এবার সাকিব ছিলেন সর্বোচ্চ ভিত্তিমূল্যে। অর্থাৎ তাঁকে দলে ভেড়াতে হলে কোন ফ্র্যাঞ্চাইজিকে কমপক্ষে খরচ করতে হতো ২ কোটি রূপি। আর নিলামে তো দাম বাড়ার সম্ভাবনা ছিল।

ফলে এই চড়ামূল্যের কারণেও ফ্র্যাঞ্চাইজি গুলো তাঁকে পরিকল্পনার বাইরে রেখেছে। ওদিকে নিলামের দ্বিতীয় দিনেও তাঁর ভিত্তিমূল্য পরিবর্তন করা হয়নি। অথচ ডেভিড মিলারের ভিত্তিমূল্য কমিয়ে আবার নিলামে তোলা হলে ঠিকই দল পেয়েছেন।

  • বয়স

এই মুহূর্তে সাকিব  আল হাসানের বয়স ৩৪ বছর। ফলে বয়সের কারণে তাঁর শরীরে এবং মাঠের খেলায় একটা ইমপ্যাক্ট পড়ছে। তবে সেটাও বড় সমস্যা হতো।

এটা ফ্যাক্টর হয়েছে কারণ এবারের আইপিএলের মেগা নিলামের মেয়াদ ছিল তিন বছর। ফলে ফ্র্যাঞ্চাইজি গুলো দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা করেছে। সেখানে তিন বছর পরে ৩৭ বছর বয়সী সাকিব স্বাভাবিক ভাবেই খানিকটা পিছিয়ে থাকবেন।

লেখক পরিচিতি

আমার ডায়েরির প্রতিটা পৃষ্ঠাই আমার বাইশ গজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link