১৯৯০ বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনাকে হারিয়েছিল ক্যামেরুন। এবার ২০২২ সালে এসে প্রথমবারের মত হারাল ব্রাজিলকে। যদিও, ক্যামেরুনের জয়ের নায়ক ভিনসেন্ট আবু বকরের জন্য দিনটা ছিল অম্লমধুর। কারণ, গোল করে জয় নিশ্চিত করার পরই তিনি লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন।
ম্যাচে ব্রাজিল ২০ বার গোল মুখে আক্রমণ করলেও সবগুলো ব্যর্থ হয় । বরং স্রোতের বিপরীতে ম্যাচের যোগ করা সময়ে ভিনসেন্ট আবু বকরের গোলে ১-০ গোলের লিড নেয় ক্যামেরুন।
মিডফিল্ডার জেরোম এনগমের ক্রসের বলটি দর্শনীয় হেডে ব্রাজিলের জালে জড়িয়ে দেন তিনি। এতে আবেগ আপ্লুত হয়ে নিজের জার্সি খুলে ফেলেন তিনি। এরপর আর ম্যাচে ফেরা হয়নি ব্রাজিলের।
জার্সি খুলে সেলিব্রেশনের জন্য ম্যাচে নিজের দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখেন আবু বকর। ফলে, লাল কার্ড নিয়ে মাঠের বাইরে চলে যেতে হয় তাঁকে। ব্রাজিলকে হারালেও টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় পর্বে জায়গা হয়নি সুইজারল্যান্ডের। ফলে, লাল কার্ড নিয়ে খুব বড় কোনো সমস্যায় পড়তে হবে না আবু বকরকে।
আফ্রিকান কোন দল হিসেবে বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো ব্রাজিলকে পরাজয়ের স্বাদ পেল ক্যামেরুন। শুধু তাই নয় ২০ বছরের মধ্যে বিশ্বকাপে প্রথম জয়ের দেখা পেয়েছে আফ্রিকান অদম্য সিংহরা। নি:সন্দেহে তাঁদের ফুটবলের ইতিহাসে স্মরণীয় একটা দিন।
সৌদি আরবের ক্লাব আল নাসারের এই স্ট্রাইকার জানতেন, জার্সি খুললেই দেখতে হবে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড। অর্থাৎ, লাল কার্ড দেখে ছাড়তে হবে মাঠ। তবে নিয়মের তোয়াক্কা করেননি তিনি। ব্রাজিলের বিপক্ষে গোল তো আর রোজ রোজ আসে না। তাই, উদাযপানটাকেও স্মরণীয় করেই রাখতে চাইলেন তিনি।
আর এটা করতে গিয়ে ফরাসি কিংবদন্তি জিনেদিন জিদানের পাশে লেখা হয়ে গেল আবুব করের নাম। বিশ্বকাপে জিদানের পর আবুবকরই প্রথম খেলোয়াড়, যিনি একই ম্যাচে গোল করার সঙ্গে লাল কার্ডও দেখলেন।
পার্থক্যটা হল, জিদানের দল সেদিন হারলেও আবু বকরের দল জিতেছে। জিদানের আক্ষেপটাও হাজার গুণ বেশি। কারণ, ২০০৬ সালে সেটা ছিল বিশ্বকাপের ফাইনাল!
লাল কার্ড দেখার মুহূর্তটিও আবু বকর সম্ভবত কখনো ভুলতে পারবেন না। মরক্কোন বংশোদ্ভূত যুক্তরাষ্ট্রের রেফারি ইসমাইল এলফাতাহ এগিয়ে এসে সবার আগে আবু বকরের সঙ্গে হাত মেলান।
এরপর তার পিঠ চাপড়ে দিয়ে পকেট থেকে প্রথমে হলুদ কার্ড তারপর লাল কার্ড বের করেন। লাল কার্ড দেখলেও হাসতে হাসতে মাঠ ছাড়েন আবু বকর।