চলছে দেশের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটের সর্বোচ্চ আসর জাতীয় ক্রিকেট লিগ। প্রথম রাউন্ড পেরিয়ে এখন মাঠে গড়িয়েছে দ্বিতীয় রাউন্ডের খেলা। লঙ্গার ভার্শনের এ ক্রিকেট টুর্নামেন্টে খেলেছে বাংলাদেশের টেস্ট দলে চুক্তিবদ্ধ সিংহভাগ ক্রিকেটারই। তবে বিস্ময় জাগিয়েছে, চট্টগ্রাম দলে তামিম ইকবালের না থাকার বিষয়টি।
বিশ্বকাপের পরেই ঘরের মাটিতে বাংলাদেশ দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলবে। সে সিরিজের জন্য নিজেকে ঝালিয়ে নিতে এটিই ছিল বড় প্রস্তুতির মঞ্চ। কিন্তু আপাতদৃষ্টিতে যা মনে হচ্ছে–তামিম নিজেই কিউইদের বিপক্ষে সে সিরিজ খেলতে প্রস্তুত নন।
তামিম অবশ্য বেশ কিছু দিন ধরেই কোমরের ব্যথায় ভুগছেন। আর এই ইনজুরিতে তাঁর বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্ন শেষ হয়ে গিয়েছে। যদিও তা নিয়ে জলঘোলা অনেক। তার আগে তামিমের অবসর কাণ্ড নিয়ে অবশ্য কম বিতর্কের জন্ম দেয়নি। তবে সব কিছুর অবসান ঘটিয়ে তামিম ঠিকই অবসর ভেঙে ফিরেছেন।
কিন্তু অবসর ভেঙে ফিরলেও তামিমকে কবে নাগাদ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দেখা যাবে, তা নিয়ে এখনো রয়েছে ব্যাপক অনিশ্চয়তা। অনেক ক্রিকেট বিশ্লেষক তো মনেই করেন, সাকিব-তামিম বৈরিতায় তামিম আদৌতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরবেন কিনা, তা নিয়েও রয়েছে অনেক ‘যদি’, ‘কিন্তু’র মতো ব্যাপার।
এ দিকে বিসিবি চিকিৎসক দেবাশীষ চৌধুরির মতে, তামিমের যে ধরনের ইনজুরি তাতে এখন সব ফরম্যাটে তাঁর জন্য খেলাটা কঠিনই। আর তাতে আভাস মিলেছে, টেস্ট ফরম্যাটে খেলা কমিয়ে দেওয়া কিংবা ছেড়ে দেওয়ার সম্ভাবনাও। দেবাশীষ চৌধুরির ভাষ্যমতে, তামিম এখন চোখ রাখছেন বিপিএলে। তাতে করে আপাতত এই টুর্নামেন্টের আগে তামিমের কোনো ম্যাচ খেলার সম্ভাবনা বেশ কমই।
সব মিলিয়ে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট থেকে অবসর নিলেও এই ফরম্যাটটাই এখন তামিমের ক্রিকেট ক্যারিয়ার সচল রাখার হতে যাচ্ছে। যদিও এমনিতেও ঘরোয়া ক্রিকেটের জাতীয় লিগে তামিম ইকবালের মাঠে নামা কমই হয়।
গত মৌসুমে এনসিএলে খেলেছিলেন ২ ম্যাচ। আর সেই ৪ ইনিংসে মোট ৯১ রান এসেছিল তাঁর ব্যাট থেকে। আর চলতি বছরে বাংলাদেশের হয়ে একটি মাত্র টেস্টই খেলা হয়েছে তাঁর। ফলত, নিউজিল্যান্ড সিরিজে না খেললে ১ টেস্টেই বছর পার করবেন তামিম। চুক্তিভূক্ত ক্রিকেটার বিবেচনায় যে সংখ্যাটা নগণ্যই বটে।
বিপিএল আবারো ক্রিকেটে ফেরার সম্ভাব্যতায় তামিম এবার খেলবেন ফরচুন বরিশালের হয়ে। আগের মৌসুমে খেলেছিলেন খুলনা টাইটান্সের জার্সি গায়ে। তবে সে মৌসুমটা মোটেই ভাল কাটেনি তাঁর। নিজেও তেমন রাত করতে পারেননি। আর দলও ডুব দিয়েছিল ব্যর্থতার সাগরে। সেরা চারের দৌড়ে আগেই ছিটকে যায় তাঁর দল।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, তামিম কি জাতীয় দলে আবারো ফিরবেন? অবসরের ঘোষণা দেওয়ার পর ১ ম্যাচ খেলেই আবারো কেন তামিমের ভাবনায় জাতীয় দল সরে গেল? তবে কি তামিমের নিরব প্রস্থান হতে চলেছে? কে জানে, এমন সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। বছর জুড়ে বাংলাদেশে ক্রিকেটে খেলার চেয়ে ধুলায় বেশি উড়েছে।