তবুও কুলদ্বীপের কপালে জোটেনি টুর্নামেন্ট সেরার পুরষ্কার

ফাইনালে অভিষেক ব্যর্থ হয়েছেন, কিন্তু কুলদ্বীপ ঠিকই পারফরম করে শিরোপা জেতালেন। তবে ক্রিকেট বিশ্ব কি বোলার বিমুখ হয়ে যাচ্ছে ক্রমশ? 

আর কি করলে কুলদ্বীপ যাদব হতে পারতেন টুর্নামেন্ট সেরা খেলোয়াড়? ১৭ খানা উইকেট তিনি শিকার করেছেন এক টুর্নামেন্টে। এটাই যে সর্বাধিক। এর আগে এক টুর্নামেন্টে ১৭ উইকেট নিয়েছিলেন আফগানিস্তানের ফজল হক ফারুকি। তবে ২০২৪ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ফারুকি খেলেছিলেন এক ম্যাচ বেশি। তবুও দিনশেষে কুলদ্বীপের কপালে জোটেনি টুর্নামেন্ট সেরার সেই সুদর্শন গাড়িটি।

শুধু কি সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি হয়েছেন কুলদ্বীপ? মোটেও না, তিনি ছিলেন ভারতের নবম এশিয়া কাপ জয়ের সম্মুখ সারির সেনানী। প্রায় প্রতিটা ম্যাচে মোমেন্টাম ঘুরিয়েছেন তিনি। ফাইনালের মঞ্চেই তো পাকিস্তানের সংগ্রহকে ছোট করার অন্যতম কাণ্ডারি ছিলেন কুলদ্বীপ। ১২ ওভারে ১০৭ রান তুলে ফেলা দলটা শেষ অবধি থেমেছে ১৪৬ রানে। এর সিংহভাগ কৃতীত্ব কুলদ্বীপের প্রাপ্য।

কেননা পরবর্তী আট ওভারের দু’টো করেছেন কুলদ্বীপ। রান বিলিয়েছেন মাত্র সাতটি। উইকেট নিয়েছেন চারটি। এমনকি পাকিস্তান যখন হাত খুলে রানের জন্যে যাবে, তখনই এক ওভারে তিন খানা উইকেট বাগিয়েছেন স্রেফ এক রানের বিনিময়ে। সেটি ছিল ইনিংসের ১৭তম ওভার।

এছাড়াও সুপার ফোরের শেষ ম্যাচে শ্রীলঙ্কা প্রায় জিতেই নিয়েছিল ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ। ভারতের দেওয়া ২০২ রানের সমান রান করেছিল লঙ্কানরা। সেই ম্যাচে আরও বহু আগে ম্যাচ জিতে নিতে পারতেন পাথুম নিসাঙ্কারা। কিন্তু তা হতে দেননি মূলত ওই কুলদ্বীপ। দশ ওভারের পরে দুই ওভার বল করেছিলেন ভারতীয় চায়নাম্যান।

দুই ওভারে সেদিন মোটে আট রান খরচা করেছিলেন কুলদ্বীপ। চারিথ আসালাঙ্কার উইকেট তুলে নিয়ে শ্রীলঙ্কার জয়ের স্বপ্নের জোরাল ধাক্কা দেন বা-হাতি এই স্পিনার। সেখানেই শেষ নয়, ফাইনাল নিশ্চিতের ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে স্রেফ ১৮ রানের বিনিময়ে তিনি নিয়েছিলেন তিনটি উইকেট।

সেদিন একটাও বাউন্ডারি হজম করেননি কুলদ্বীপ। ঠিক এভাবে এবারের এশিয়া কাপের আদ্যোপান্ত পারফরম করে গেছেন কুলদ্বীপ। তবুও টুর্নামেন্ট সেরার পুষ্কার জোটেনি। সেই স্বীকৃতি গিয়েছে অভিষেক শর্মার ঝুলিতে। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট ব্যাটারদের ক্রিকেট। ব্যাটাররা ভুড়ি ভুড়ি রান করবেন। বিনোদিত করবেন। আর তাদের নিয়েই হবে সমস্ত উচ্ছ্বাস। এমন ধ্যান-ধারণা যেন ক্রমশ প্রতিষ্ঠিত হতে চলেছে সর্বত্র।

যদিও একেবারে খালি হাতে ফেরত পাঠানো হয়নি কুলদ্বীপকে। মোস্ট ভ্যালুয়েবল খেলোয়াড়ের স্বীকৃতি মিলেছে তার। তবে কোন অংশে তার অবদান, ভারতের শিরোপা জয়ের জন্যেও কম কিছু কি? ফাইনালে অভিষেক ব্যর্থ হয়েছেন, কিন্তু কুলদ্বীপ ঠিকই পারফরম করে শিরোপা জেতালেন। তবে ক্রিকেট বিশ্ব কি বোলার বিমুখ হয়ে যাচ্ছে ক্রমশ?

লেখক পরিচিতি

রাকিব হোসেন রুম্মান

কর্পোরেট কেরানি না হয়ে, সৃষ্টি সুখের উল্লাসে ভাসতে চেয়েছিলাম..

Share via
Copy link