তারুণ্যের ফরাসি বিপ্লব

সম্প্রতি ফ্রান্স জাতীয় ক্রিকেট দলের ক্রিকেটার গুস্তাব ম্যাককিওন টি-টোয়েন্টি ঘরানায় কনিষ্ঠতম সেঞ্চুরিয়ান হিসেবে বিশ্বক্রিকেটে নতুন রেকর্ড গড়লেন!

রেকর্ড গড়া হয় ভাঙ্গার জন্যেই। ক্রিকেটের দুনিয়ায়ও প্রতিদিন কতোশতো রেকর্ডের ভাঙন গড়ন চলতেই থাকে। আজ কোন ক্রিকেটার বা দল একটি রেকর্ড করলো কাল এসে অন্য কেউ সেই রেকর্ডটি টপকে নতুন কোন রেকর্ড গড়বে, এটাই স্বাভাবিক।

সম্প্রতি ফ্রান্স জাতীয় ক্রিকেট দলের ক্রিকেটার গুস্তাভ ম্যাককিওন টি-টোয়েন্টি ঘরানায় সর্বকনিষ্ঠ সেঞ্চুরিয়ান হিসেবে বিশ্ব ক্রিকেটে নতুন রেকর্ড গড়লেন! মাত্র আঠারো বছর ২৮০ দিন বয়সে তিনি এই মাইলফলকটি স্পর্শ করলেন। তাঁর পূর্বে রেকর্ডটি ছিলো আফগানিস্তানের ক্রিকেটার হজরতুল্লাহ জাজাইয়ের দখলে।

২০১৯ সালে দেরাদুনে আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে একটি ম্যাচে ২০ বছর ৩৩৭ দিন বয়সে হজরতুল্লাহ জাজাই সবচেয়ে কম বয়সী হিসেবে টি- টোয়েন্টি সেঞ্চুরি করেছিলেন। সেই ম্যাচে মাত্র ৬২ বলে জাজাই অবিশ্বাস্য অপরাজিত ১৬২ রান করেছিলেন! অর্থাৎ হিসেবে গুস্তাভ ম্যাককিওন, জাজাইয়ের চেয়ে দুই বছরেরও বেশি ছোট!

সোমবার ফিনল্যান্ডের ভান্তায় সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে খেলতে নেমে ফ্রান্সের কিশোর ওপেনার এই কীর্তিটি গড়েন। ম্যাচটি ছিলো টিটোয়েন্টি বিশ্বকাপ ২০২৪ এর ইউরোপ উপআঞ্চলিক কোয়ালিফায়ার গ্রুপ ‘বি’ এর ম্যাচ। ফ্রান্স টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্বান্ত নেয়।

 ম্যাককিওনের ৬১ বলে ১০৯ রানের সৌজন্যে ফ্রান্স ৫ উইকেটে ১৫৭ রান করে। ম্যাককিওন মোট পাঁচটি চার এবং নয়টি ছক্কা মেরেছিল। দুর্ভাগ্যবশত সুইজারল্যান্ড লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে খেলার শেষ বলে এক উইকেটে জয় পায়। পরাজয় সত্ত্বেও ফ্রান্স গ্রুপ ‘বি’ এর টেবিলে নরওয়ের পরে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে।

এই প্রতিযোগিতার আসরেই চেক রিপাবলিকের বিপক্ষে ঠিক আগের ম্যাচেই গুস্তা ম্যাককিওনের অভিষেক ঘটেছিল। সেই অভিষেক ম্যাচটিতেও ৫৪ বলে ৭৬ রান করেছিলেন ম্যাককিওন। সেই ম্যাচটিতেও ফ্রান্স ৫১ রানের বিশাল ব্যবধানে জয় পেয়েছে।

২০০৫ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত শুধুমাত্র আইসিসির পূর্ণ সদস্য দেশ এবং কিছু সহযোগী দেশগুলির মধ্যে খেলা ম্যাচগুলিকে টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিক হিসেবে বিবেচনা করা হত। পরবর্তীতে এক জানুয়ারী, ২০১৯ থেকে, আইসিসি এর ২০৪ টি সদস্য দেশের মধ্যে খেলা সমস্ত টি-টোয়েন্টি ম্যাচগুলিকে টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিক মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। সেই হিসেবে ফ্রান্সের এই ম্যাচগুলিও আন্তর্জাতিক ম্যাচ হিসেবেই বিবেচিত হবে।

অনেক ক্রিকেট ঐতিহাসিকের মতে ক্রিকেটের জন্মই হয়েছে আসলে এই ফ্রান্সে। যদিও সেই ফ্রান্সই ক্রিকেট বিশ্বে এখনো নামজাদা কোন দল হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে পারেনি। তবে হয়তো হাঁটি হাঁটি পা পা করে একদিন গুস্তাব ম্যাককিওনদের মতো প্রতিভার ওপর ভর করে ফ্রান্স একদিন ক্রিকেটের আঙ্গিনায় অনেকদূর এগিয়ে যাবে। বিশ্ব ক্রিকেটের শক্তিশালী দল হিসেবে দ্যুতি ছড়াবে পৃথিবীজুড়ে। কিংবা এটা হয়তো কেবলই স্বপ্ন।

ফ্রান্স টিকতে পারুক কিংবা নাই পারুক, ক্রিকেট ইতিহাসের পাতায় টিকে গেলেন ম্যাককিওন। চাইলেই রেকর্ডবুকে নাম তুলে নিজেকে ও নিজ দেশের নাম আলোকিত করা গুস্তাব ম্যাককিওন পৃথিবীজুড়ে বাণী ছড়িয়ে দিক, ‘নাউ ইউ উইল সি মি রাইজিং।’

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...