১৩৯ বছর ধরে ক্রিকেটের ইতিহাসকে ধারণ করা লর্ডসে আন্তর্জাতিক ম্যাচ হয়েছে ২২১ টি। আর মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় স্টেডিয়াম আজ তাঁর বুকে ধারণ করছে ২০০ তম ম্যাচ। বাংলাদেশের জন্য, মিরপুর স্টেডিয়ামের জন্য গর্বের বটে।
তবে এই পরিসংখ্যানে ফুটে ওঠে গত ১৭ বছরে কী ধকলটাই না গেছে এই স্টেডিয়ামের উপর দিয়ে। কিংবা বাংলাদেশের ক্রিকেট কত বেশি নির্ভরশীল হোম অব ক্রিকেটের উপর।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ, মিরপুর স্টেডিয়ামের ২০০ তম আন্তর্জাতিক ম্যাচ। শুধু এখানেই শেষ হয় না। মিরপুরের এই মাঠে এটি বাংলাদেশ একশোতম ওয়ানডে ম্যাচও। এসব তো কেবলই হোম অব ক্রিকেটের অর্জন। এই ম্যাচে আছে ব্যক্তিগত মাইলফলক।
যেমন এই ম্যাচেই দ্বিতীয় বাংলাদেশি ক্রিকেটার হিসেবে সাকিব আল হাসান খেলতে নেমেছেন নিজের চারশোতম আন্তর্জাতিক ম্যাচ। আবার মিরপুর স্টেডিয়ামের সাথে জড়িয়ে নতুন মাইলফলক ছুঁয়েছেন মুশফিকুর রহিমও। এই মাঠে আজ তাঁর ১৫০ তম আন্তর্জাতিক ম্যাচ। পুরো বিশ্বের আর কোন ক্রিকেটারই একটা নির্দিষ্ট মাঠে ১৫০ টা আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেননি।
এই সবগুলো রেকর্ডই বাংলাদেশকে ঘিরে, মিরপুর স্টেডিয়ামকে ঘিরে। তবে পরিসংখ্যানের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আজকে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচটা। কেননা ইংল্যান্ডকে সিরিজ হারানোর স্বপ্ন পূরণ করতে হলে, সিরিজে টিকে থাকতে হলে আজকের ম্যাচটা জিততেই হবে বাংলাদেশকে।
এমন ভাবনা মাথায় নিয়েই নিশ্চয়ই মাঠে নেমেছিল বাংলাদেশ। তবে ইংলিশ ব্যাটাররা সেই স্বপ্নে বারবার বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে চেয়েছেন। রানের বিশাল পাহাড় গড়েছেন দলটার ওপেনার জেসন রয়। ১২৪ বল থেকে এই ব্যাটার করেছেন ১৩২ রান। ১০৬ স্ট্রাইকরেট নিয়ে ব্যাট করা জেসন রয় নিজের ইনিংসটা সাজিয়েছেন ১৯ টা বাউন্ডারি দিয়ে।
ফলে ম্যাচের শুরু থেকেই এই ব্যাটারকে সামলাতে হিমশিম খেয়েছেন বাংলাদেশের বোলাররা। শেষ পর্যন্ত ভয়ংকর হয়ে ওঠা এই ব্যাটারকে আজও ফিরিয়েছেন সাকিব আল হাসানই। তবে ততক্ষণে ক্ষতি যা হবার হয়েই গিয়েছিল।
জেসন রয়কে যোগ্য সঙ্গ দিয়েছিলেন দলটার অধিনায়ক জস বাটলার। দুজনে মিলে ৯৩ বল থেকে করেছেন ১০৯ রানের বিশাল জুটি। আর সেখানেই ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ হারায় বাংলাদেশ। বাটলার নিজেও খেলেছেন ৬৪ বলে ৭৬ রানের ইনিংস।
এই দুজনের ব্যাটে চড়ে বড় সংগ্রহের পথেই হাঁটতে থাকে ইংল্যান্ড। মিরপুরে ৩০০ রানের মাইলফলক ছুঁয়ে ফেলাটা সময়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায় তাঁদের জন্য। তবে জেসন রয় ও জস বাটলার আউট হয়ে গেলে আবার ম্যাচে কিছুটা প্রাণ ফিরে পায় বাংলাদেশ।
শেষ বেলায় আবার বাংলাদেশের বোলারদের ওপর চড়াও হন মঈন আলী। বাটলার, রয়রা ফিরে গেলেও মিরপুরে রীতিমত ঝড় তুলেছেন মঈন আলী। তাঁর এমন ইনিংসে সহজেই ৩০০ রানের মাইলফলক পেড়িয়ে গিয়েছে ইংল্যান্ড।
ফলে ম্যাচ জিততে হলে কিংবা সিরিজে টিকে থাকতে হলে ৩০০ রান তাড়া করার রেকর্ড করতে হবে লিটন, শান্তদের। যদিও এই কীর্তি এর আগে কখনোই করতে পারেনি বাংলাদেশ। তবে এত এত রেকর্ডের দিনে আরেকটা পলক তো যুক্ত হতেই পারে। পুরোটাই এখন নির্ভর করছে বাংলাদেশের ব্যাটারদের উপর।