ছন্দময় ফুটবলের ২৮ পাস: আর্জেন্টিনার অনন্য রেকর্ড!

জোগো বোনিতো কখনো বিশ্বকাপ ফুটবল খেলেননি। কিন্তু ফুটবলকে শৈল্পিক রূপ দেওয়ার ক্ষেত্রে তাঁর অবদান ছিল অনেক। বর্তমান সময়ের আধুনিক ফুটবলের একদম শুরুর গল্পের স্রষ্টা ছিলেন তিনি। আর তাঁর গল্পগাঁথায় আবিষ্ট হয়েছিল পুরো লাতিন আমেরিকার ফুটবল। ব্রাজিল থেকে শুরু করে আর্জেন্টিনাতেও চলে গিয়েছিল জোগো বোনিতোর চিরায়ত দীক্ষা।

জোগো বোনিতো কখনো বিশ্বকাপ ফুটবল খেলেননি। কিন্তু ফুটবলকে শৈল্পিক রূপ দেওয়ার ক্ষেত্রে তাঁর অবদান ছিল অনেক। বর্তমান সময়ের আধুনিক ফুটবলের একদম শুরুর গল্পের স্রষ্টা ছিলেন তিনি। আর তাঁর গল্পগাঁথায় আবিষ্ট হয়েছিল পুরো লাতিন আমেরিকার ফুটবল। ব্রাজিল থেকে শুরু করে আর্জেন্টিনাতেও চলে গিয়েছিল জোগো বোনিতোর চিরায়ত দীক্ষা।

সেই থেকে আর্জেন্টিনা তাদের ফুটবলে নিজস্ব একটা ধরণ তৈরি করতে পেরেছিল। পাসের পর পাস দিয়ে প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডারদের বিভ্রান্ত করে গোল দেওয়াই ছিল আর্জেন্টিনার রণকৌশল। তবে সেই কৌশল থেকে পরে আর্জেন্টিনা বেরিয়েও এসেছিল। বেশ কিছু বছর ধরেই আর্জেন্টিনা এখন ডিরেক্ট ফুটবল খেলে। ছন্দময় পাসের চেয়ে বড় পাসকে কেন্দ্র করেই তারা নিজেদের কৌশল সাজায়।  তবে পোল্যান্ড ম্যাচে দেখা মিলল অন্য এক আর্জেন্টিনার। পাসের পর পাসে রীতিমত নাভিশ্বাস করে তুলেছিল পোলিশ ডিফেন্ডারদের।

আর এই পাস নিয়ে অনন্য এক রেকর্ড গড়েছে আর্জেন্টিনা। পোলিশদের বিপক্ষে তাদের দ্বিতীয় গোল এসেছিল ম্যাচের ৬৭ মিনিটে। আর জুলিয়ান আলভারেজের সেই গোলটি এসেছিল ২৮ টি পাসের সমন্বয়ে। যা বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা দলের সবচেয়ে বেশিসংখ্যক পাসে করা গোলের রেকর্ড।

এর আগের রেকর্ডটি ছিল, ২০০৬ বিশ্বকাপে সার্বিয়া ও মন্টেনিগ্রোর বিপক্ষে এস্তেবান ক্যাম্বিয়াসোর করা একটি গোল। যে গোলটি হয়েছিল ২৫ টি পাসের সমন্বয়ে। অনেকে সেটিকে ২৬ পাসের গোল বলেও দাবি করে। তবে সেই গোলের আগে আলভারেজের এই গোলটিতেই আপাতত থাকা যাক।

মূলত আলভারেজের সেই গোলের যাত্রা শুরু হয়েছিল তাগ্লিয়াফিকোর ফ্রি-কিক নেওয়ার মধ্যে দিয়ে। এরপরে বল আসে মেসির কাছে। তারপর সেই বল বদল করে মলিনা হয়ে আসে ডি পল আর এনজোর কাছে। তারপর আবার তাগ্লিয়াফিকোর কাছে যায়।

এরপর ডি বক্সের আশেপাশে আবার গোটা বিশেক পাসের পর বল যায় আলভারেজের কাছে। আর সেই ২৭ পাসে আসা বলটিতেই দারুণ এক শটে পোলিশদের জালে বল জড়ান আর্জেন্টাইন এ নতুন সেনসেশন। আরেকটা চমকপ্রদ তথ্য হলো, এই ২৮ পাসের গোলে আর্জেন্টিনার গোলরক্ষক বাদের এমিলিয়ানো মার্টিনেজ বাদে বাকি ১০ খেলোয়াড়েরই পায়ের স্পর্শ ছিল।

আলভারেজের গোলে ১৬ বছর আগে করা ক্যাম্বিয়াসের সেই গোলটিও সামনে এসেছে। তবে এখানে কাকতালীয় ব্যাপার হলো, আলভারেজের মতো ক্যাম্বিয়াসও ছিলেন রিভারপ্লেটের ফুটবলার। যদিও আলভারেজ এখন ইংলিশ ক্লাব ম্যানসিটির ফুটবলার। যাই হোক, ২০০৬ এর সে বিশ্বকাপে ২৫ পাসের গোলটির সাক্ষী ছিলেন স্বয়ং মেসিও। এমনকি সে ম্যাচে তিনি একটি গোলও পেয়েছিলেন। আর মেসির মতো ক্যাম্বিয়াসও সেদিন বদলি নেমে সেই ২৫ পাসের গোলটি করেছিলেন।

ফুটবল পরিসংখ্যান নিয়ে কাজ করা ‘অপটা’ অবশ্য জুলিয়ান আলভারেজের করা গোলটিকে ২৭ পাসের গোল দাবি করেছে। তবে তারা এটাও জানিয়েছে যে, ১৯৬৬ এর পর এটাই আর্জেন্টিনার সর্বাধিক পাসের সমন্বয়ে করা গোল।

যাহোক, ২৮ পাসের গোলের চেয়ে আর্জেন্টিনার শিবিরে স্বস্তির বিষয় হলো, প্রথম ম্যাচ হেরে পরের দুই ম্যাচ জিতে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে পরের রাউন্ড নিশ্চিত করা। গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার বদৌলতে রাউন্ড অফ সিক্সটিনে আর্জেন্টিনা শক্তির বিচারে সহজ প্রতিপক্ষই পাচ্ছে। যদিও এশিয়ার মাটিতে এশিয়ান দলগুলোর দৌরাত্ম্য এবারের বিশ্বকাপ জুড়েই দেখা যাচ্ছে। তাই লিওনেল মেসিদেরও থাকতে হচ্ছে সাবধানী।

নিশ্চিতভাবেই পঁচা শামুকে পা কাটতে চাইবেন না তারা। বরং আগের ম্যাচের মতো পাসিং ফুটবলের পসরা সাজালে পোলিশ বধের মতো অজি বাঁধাও তারা সহজেই টপকে যাবে। আর পুরো টুর্নামেন্ট জুড়ে সেটির ধারা অব্যাহত থাকলে প্রতিপক্ষ সব দলগুলোর জন্য ভীতি জাগানিয়া এক দলের নাম হতে পারে আর্জেন্টিনা।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...