ইসুরু উদানার বলে স্কোয়ার লেগের উপর দিয়ে ছক্কা হাঁকালেন। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের সেটাই সম্ভবত রোশনাই ছড়ানো হাইলাইট। দীর্ঘদিনের ক্যারিয়ার তার। তবুও কার্যকর ও সেই সাথে ধুন্ধুমার ব্যাটিংয়ের মিশেল, মাহমুদউল্লাহর ক্যারিয়ারের এমন পাঁচটি ইনিংসও খুঁজে পাওয়া দায়।
১৩৯টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন। বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের মধ্যে সর্বোচ্চ। তবুও স্মরণ করবার মত ইনিংস একেবারেই হাতে গোনা। ৮টি হাফ-সেঞ্চুরি তিনি করেছেন টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে। তাতেও রয়েছে সংশয়। তবে একেবারেই যে দারুণ কিছু ইনিংস রিয়াদ খেলেননি, তা নয়।
এই যেমন নিদাহাস ট্রফির সেমিফাইনালে তার খেলা ইনিংসটিই বাংলাদেশকে তুলেছিল ফাইনালে। শেষ ওভারে জয়ের জন্যে প্রয়োজন ছিল ১২ রান। শেষ দুই বলে দরকার ছিল ৬ রান। শেষ ওভারের পঞ্চম বলে ছক্কা হাঁকিয়ে সেদিন তিনি গোটা বাংলাদেশকে আনন্দে ভাসিয়েছিলেন।
দায়িত্ব নিয়ে দলের জয়ে অবদান রেখেছিলেন স্বাগতিক শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। ১৮ বলে ৪৩ রানের ঝকঝকে এক ইনিংস খেলেছিলেন মাহমুদউল্লাহ। প্রায় ২৩৯ স্ট্রাইক রেটের সেই ইনিংসটি যেমন ছিল কার্যকর, তেমনি টি-টোয়েন্টি সুলভ।
এমন আরেকটি ইনিংস তিনি খেলেছিলেন ২০১৬ সালের এশিয়া কাপে। পাকিস্তানের বিপক্ষে সেমিফাইনাল ম্যাচ। ১৫ বলে ২২ রান করেছিলেন তিনি। সেই ইনিংসের প্রভাবে ফাইনালে উঠেছিল বাংলাদেশ। দুই ওভারে ১৮ রান প্রয়োজন ছিল জয়ের জন্য। ১৯তম ওভারে নো-বলে বাউন্ডারি সহ দশ রান নিয়ে ম্যাচ জয়কে সহজ করে দিয়েছিলেন মাহমুদউল্লাহ। তাছাড়া শেষ ওভারের প্রথম বলে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে জয় নিশ্চিত করেন তিনি।
এই দুই সেমিফাইনাল ছাড়াও একটা বেশ গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস তিনি খেলেছিলেন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। মিরপুর হোম অব ক্রিকেটে, রিয়াদের খেলা ইনিংসের সুবাদে অজিদের হারিয়েছিল বাংলাদেশ। সেদিনের উইকেট ছিল ভীষণ কঠিন। অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটাররাও একশ স্ট্রাইক রেটে ব্যাট চালাতে হিমশিম খেয়েছিলেন। তেমন এক উইকেটে দাঁড়িয়ে অর্ধ-শতক করেন মাহমুদউল্লাহ।
দলীয় তিন রানে দুই উইকেট হারায় বাংলাদেশ। সেখান থেকে দায়িত্বশীল ব্যাটিং করে দলের সংগ্রহকে ১২৭ রান অবধি নিয়ে গিয়েছিলেন ডান-হাতি মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। চার নম্বরে ব্যাট করতে নেমে সপ্তম ব্যাটার হিসেবে মাঠ ছেড়েছিলেন তিনি। তার আগে নামের পাশে যুক্ত করেন ৫২ রান। ৫৩ বলের সেই ইনিংসটি বাংলাদেশকে লড়াই করবার সুযোগ করে দিয়েছিল।
মিরপুরের বৈরি উইকেটে অজিদের চেপে ধরেছিল বাংলাদেশ। শেষ অবধি দশ রানের জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছিল স্বাগতিকরা। এছাড়াও বেশ কিছু ইনিংসে বল হাতে ছোট ছোট, কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন মাহমুদউল্লাহ। তবে উল্লেখযোগ্য ছিল পাকিস্তানের বিপক্ষে এক ওভারে তিন উইকেট শিকার করা।
সময়ের ব্যাসার্ধে যতটা বিস্তৃত ছিল মাহমুদউল্লাহর টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ার, ততটা কার্যকারিতা ছিল না তাতে। বরং বরাবরই গড়পড়তা মানের ইনিংস উপহার দিয়েছেন তিনি। তাই তো সেরা পাঁচ ইনিংসও খুঁজে পাওয়া বিশাল এক চ্যালেঞ্জের কাজ। অবশেষে মাহমুদউল্লাহ নিজের উপর থেকে চাপ কমালেন যেন। হাঁফ ছেড়ে বাঁচল বাংলাদেশও।