অন্যরকম বাংলাদেশের জয়

জয় নিশ্চিত হয়েছে মূলত ব্যাটিং লাইন আপে ভর করে। সেই লাইন আপটাও অন্যরকম। যে চারজন ব্যাটসম্যান নেমেছেন তারা হলেন যথাক্রমে নাইম, সৌম্য, অধিনায়ক রিয়াদ ও নুরুল হাসান সোহান।

জিম্বাবুয়ের দেওয়া লক্ষ্যটা বেশি বড় না হলেও বেশ চ্যালেঞ্জিং ছিল। তবে দুই ওপেনার নাঈম শেখ ও সৌম্য সরকারের উদ্বোধনী জুটিতেই কেটে যায় চাপ; ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেয় বাংলাদেশ। তাদের গড়ে দেওয়া ভীতের উপর ভর করেই সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে জিম্বাবুয়েকে ৮ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে বাংলাদেশ।

জয় নিশ্চিত হয়েছে মূলত ব্যাটিং লাইন আপে ভর করে। সেই লাইন আপটাও অন্যরকম। যে চারজন ব্যাটসম্যান নেমেছেন তারা হলেন যথাক্রমে নাইম, সৌম্য, অধিনায়ক রিয়াদ ও নুরুল হাসান সোহান।

৪৫ বলে ৫০ রান করে সৌম্য সরকার আউট হয়ে গেলেও টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় হাফ সেঞ্চুরি তুলে নিয়ে ৫১ বলে ৬৬ রান করে অপরাজিত থাকেন নাইম শেখ। আর বল হাতে দলের জয়ে অবদান রেখেছেন মুস্তাফিজুর রহমান ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। দু’জনেই তিনটি করে উইকেট শিকার করেন।

তবে বড় জয় পেলেও রান তাড়া করতে নেমে সাবধানী শুরু করেছিলেন দুই ওপেনার সৌম্য সরকার ও নাইম শেখ। ইনিংসের প্রথম তিন ওভারে মাত্র ১০ রান সংগ্রহ করেন দুই ওপেনার। তবে এর পরেই হাত খোলেন নাইম। চতুর্থ ওভারে এই ওপেনার চওড়া হলেও আবার মন্থর ব্যাটিংয়ে ফিরে যান তিনি। ৪৪ বলে পঞ্চাশ রান পূরণ করে তাঁদের জুটি। প্রথম আট ওভারে ১৯ টি ডট বলেন খেলেন দুই ওপেনার।

তবে রানরেট বাড়তে দেননি কেউই। আলগা বলে ঠিকই বাউন্ডারি আদায় করে নিয়েছেন দুজন। এই জুটির পরের পঞ্চাশ আসে ৩৫ বলে। ৭৭ বলে উদ্বোধনী জুটি শতরান পার করার পর আর বেশি দূর যেতে পারেনি এই জুটি। হাফ সেঞ্চুরি করে সৌম্য রান আউটের ফাঁদে পড়লে ভাঙে ১০২ রানের উদ্বোধনী জুটি। ৪৫ বলে ৫০ রান করে বিদায় নেন সৌম্য।

সৌম্য আউট হওয়ার পর ৪০ বলে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে দ্বিতীয় হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন নাঈম। এরপর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ রান আউটের ফাঁদে পড়ে ১৫ রান করে বিদায় নিলেও জয় পেতে সমস্য হয়নি বাংলাদেশের। ৭ বল হাতে রেখেই জয়ের লক্ষ্য পৌছে যায় সফরকারীরা। নাইম ৫১ বলে ৬৬ রান করে ও নুরুল হাসান সোহান ৮ বলে ১৬ রান করে অপরাজিত থাকেন।

এর আগে টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নামা জিম্বাবুয়ের শুরুটাই ভালো হয়নি। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই প্রথম সাফল্য পায় বাংলাদেশ। মুস্তাফিজুর রহমানের অফ স্টাম্পের বাইরের বল টেনে এনে খেলার চেষ্টা করে মিড উইকেটে সৌম্য সরকারের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান তাদিওয়ানাশে মারুমানি।

৭ বলে ৭ রান করে মারুমানি ফিরে যাওয়ার পর দ্বিতীয় উইকেটে দলের হাল ধরেন রেগিস চাকাভা ও ওয়েসলি মাধেভেরে। ওয়ানডে সিরিজে দারুণ ব্যাট করা চাকাভার বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ে দ্রুত রান তুলতে থাকে জিম্বাবুয়ে। পাওয়ার প্লেতে চার বোলার ব্যবহার করেও জিম্বাবুয়ের রানের গতি থামাতে পারেননি অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।

ছয় ওভারে এক উইকেট হারিয়ে ৫০ রান সংগ্রহ করে স্বাগতিকরা। পাওয়ার প্লের পরেও এই জুটি দ্রুত গতিতে রান তুলতে থাকে। এই জুটির পঞ্চাশ এসেছে মাত্র ৩২ বলে।

ক্রমেই বিপজ্জনক হতে যাওয়া এই জুটি ভেঙে বাংলাদেশ শিবিরে স্বস্তি এনে দেন সাকিব আল হাসান। লং অফ দিয়ে এই স্পিনারকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে সাকিবের হাতেই ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান মাধাভারে। ২৩ বলে ২৩ রান করে মাধাভারে ফিরে গেলে ভাঙে ৬৪ রানের জুটি। এই জুটি ভাঙ্গার পরে দারুণ খেলতে থাকা চাকাভা রান আউটের ফাঁদে পড়ে বিদায় নিলে রানের গতি থেমে যায় জিম্বাবুয়ের।

২২ বলে ৪৩ রান করে চাকাভা ফিরে যাওয়ার পর শরিফুল ইসলামের জোড়া আঘাতে ডিয়ন মেয়ার্স ও সিকান্দার রাজা ফিরে গেলে চাপে পড়ে জিম্বাবুয়ে। ২২ বলে ৩৫ রান করেন ডিয়ন মেয়ার্স আর রানের খাতায় খুলতে পারেননি রাজা। এরপর মুস্তাফিজুর রহমান ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের বোলিং তোপে এক ওভার বাকি থাকতেই ১৫২ রানে অলআউট হয়ে যায় জিম্বাবুয়ে।

শেষের দিকে ১৬ বলে ১৮ রান করেন লুক জঙ্গে। বাংলাদেশের বোলারদের ভিতর সবচেয়ে সফল ছিলেন মুস্তাফিজুর রহমান। তিন উইকেট শিকার করেন এই পেসার। এছাড়া মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ও শরিফুল ইসলাম দুটি করে এবং সাকিব আল হাসান ও সৌম্য সরকার একটি করে উইকেট শিকার করেন।

  • সংক্ষিপ্ত স্কোর

জিম্বাবুয়ে: ১৫২/১০ (ওভার: ১৯; মাধাভারে- ২৩, চাকাভা- ৪৩, মেয়ার্স- ৩৫, জঙ্গে- ১৮) (সাইফউদ্দিন- ৪-০-২৩-১, মুস্তাফিজুর- ৪-০-২৮-৩, শরিফুল- ৩-০-১৭-২, সাকিব- ৪-০-২৮-১, সৌম্য- ২-০-১৮-১)

বাংলাদেশ: ১৫৩/২ (ওভার: ১৮.৫; নাইম- ৬৬*, সৌম্য- ৫০, মাহমুদউল্লাহ- ১৫, সোহান- ১৬*)

ফলাফল: বাংলাদেশ ৮ উইকেটে জয়ী।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...