লম্বা সময় ইনজুরির সঙ্গে লড়াই করে বাইশ গজে ফিরেছিলেন শ্রেয়াস আইয়ার, কিন্তু ছন্দ খুঁজে পাননি ঠিকঠাক। বিশ্বকাপে শুরুটা করেছিলেন কোন রান না করেই, ইংল্যান্ডের বিপক্ষেও রান পাননি। বাকি ম্যাচে অবশ্য টুকটাক রান করেছেন, এমনকি পাকিস্তান ম্যাচে হাফসেঞ্চুরির দেখাও পেয়েছিলেন।
কিন্তু বড় মঞ্চে বড় ইনিংস খেলতেই পারছিলেন না তিনি। সেই আক্ষেপ এবার মিটিয়েছেন শ্রীলঙ্কা ম্যাচে। চার নম্বরে নেমে মাত্র ৫৬ বলে করেছেন ৮২ রান। এতদিন ড্রেসিংরুম থেকে যে ভরসা পেয়েছিলেন আইয়ার সেটারই প্রতিদান দিয়েছেন এমন ব্যাটিংয়ে।
দুই টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান বিরাট কোহলি এবং শুভমান গিলের গড়ে দেয়া মঞ্চের ওপর দাঁড়িয়ে টি-টোয়েন্টি মেজাজে ব্যাটিং করেছেন তিনি; হাঁকিয়েছেন ছয়টি বিশাল ছক্কা, আর তিনটি চার। এরই মধ্য দিয়ে ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ২০০০ রান পূর্ণ করলেন তিনি।
কাজটা অবশ্য এত সহজ ছিল না। মাত্র কয়েক বলের ব্যবধানে দুই সেট ব্যাটারকে তুলে নিয়ে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের করে নিয়েছিল লঙ্কান বোলাররা। সেই আত্মবিশ্বাস থেকেই এই তরুণের ধৈর্যের পরীক্ষা নিতে চেয়েছে তাঁরা; কিন্তু চাপকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে শুরু থেকেই আগ্রাসী ক্রিকেট খেলতে থাকেন তিনি।
টানা তিন ওভারে তিনটা ছয় হাঁকিয়ে প্রথমেই বুঝিয়ে দিয়েছিলেন আজ দারুণ কিছু করে দেখাবেন। মাঝে রাহুল, সুরিয়াকুমাররা আউট হলেও থামানো যায়নি তাঁকে। মাত্র ৩৬ বলেই তুলে নেন বিশ্বকাপে নিজের দ্বিতীয় ফিফটি।
ফিফটি করলেও নিজের কাজ শেষ হয়নি, জানতেন এই ডানহাতি। তাই তো ইনিংস বড় করেছেন, ডেথ ওভারে দলকে বড় সংগ্রহ এনে দিয়েছেন। আউট হওয়ার আগে রবীন্দ্র জাদেজার সঙ্গে গড়েছেন ৩৬ বলে ৫৭ রানের জুটি; যেখানে তাঁর অবদান ২২ বলে ৪৩। এই বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ের কল্যাণেই শেষপর্যন্ত ৩৫০ রান পার করতে পেরেছে ভারত।
ঘরের মাঠে নেমে মুম্বাইবাসীকে মনে রাখার মতই পারফরম্যান্স উপহার দিলেন এই ব্যাটার। যেভাবে লং অন আর লং অফ দিয়ে একের পর এক ছক্কা হাঁকিয়েছেন তাতে খুশি না হয়ে উপায় ছিল না দর্শকদের। শর্ট বলের বিরুদ্ধে শ্রেয়াসের দুর্বলতার কথা জানা আছে সবারি। তবে এই ম্যাচে শর্ট বলকেও আছড়ে ফেলেছেন গ্যালারিতে।
হার্দিক পান্ডিয়া না থাকায় ভারতকে বাড়তি একজন বোলার খেলাতে হচ্ছে। সেজন্য বাড়তি দায়িত্ব পালন করতে হতো মিডল অর্ডার ব্যাটারদের – সেটাই করেছেন এই তারকা। হার্দিক ফিরলে কাকে বাদ দিবে সেটা নিয়ে তাই মধুর সমস্যাতেই পড়তে হবে টিম ম্যানেজম্যান্টকে।