স্টোকস ইজ ব্যাক

ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপ জয়ের পথে স্টোকসের কোনো সেঞ্চুরি ছিল না। তবুও পেয়েছিলেন অমরত্ব। ওয়ানডে ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণাটাও দিয়েছিলেন বিশ্বকাপের মঞ্চে সেঞ্চুরির অপূর্ণতাকে সঙ্গী করেই। 

তবে ৪ বছর বাদে আবার যখন বিশ্বকাপের বৈশ্বিক মঞ্চ প্রস্তুত, তখন সে মঞ্চে পা রাখার আর লোভ সংবরণ করতে পারেননি স্টোকস। অবসর ভেঙে ফিরে আসেন বিশ্বকাপের আগেই। তবে সেই ‘ফেরা’ টা আর রঙিন হয়নি। 

চোটের কারণে মাঠে নেমেছেন ৪ ম্যাচ পর। যখন ফিরেছেন তখন আবার দল খেই হারিয়ে ছন্নছাড়া, দিশেহারা৷ বিপর্যস্ত ইংল্যান্ড স্টোকসের ছোঁয়ায় বদলে যাবে, ভাবা হচ্ছিল এমনটাই। তবে অনুমেয় সেই ভাবনা কিংবা প্রত্যাশাকে ছুঁতে পারেননি স্টোকস। স্টোকসও পারফর্ম করেননি, ইংল্যান্ড আর একটি ম্যাচও জেতেনি।

টানা হারার বৃত্তে বন্দী ইংল্যান্ডের এরপর চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে অংশ নেওয়াটাই পড়ে যায় শঙ্কার জালে। সেই জাল ছিঁড়ে বের হওয়ার পথে নেদারল্যান্ডসকে হারাতেই হবে। ডাচদের বিপক্ষে এমন সমীকরণের ম্যাচেই জ্বলে উঠলেন চেনা রূপের স্টোকস। বিশ্বকাপের মঞ্চে এতদিন যা ছিল অপূর্ণতা, সেই ‘শতক’ আসলো স্টোকসের ব্যাট থেকে। ৮৪ বলে খেললেন ১০৮ রানের ইনিংস।

ডেভিড মালানের ব্যাটে দারুণ সংগ্রহের পথেই এগিয়েছিল ইংল্যান্ড। তবে ইংলিশ এ ওপেনার ফিরে যেতেই শুরু হয় ছন্দপতন। ২০০ রান না পেরোতেই একে একে ফিরে যান হ্যারি ব্রুক, জশ বাটলার, মঈন আলী। সতীর্থদের এমন যাওয়া আসার মিছিলে একাই উইকেট কামড়ে পড়েছিলেন স্টোকস। 

সঙ্গ পেয়েছিলেন ক্রিস ওকসের। আর সেই সঙ্গতেই রক্ষণাত্মক স্টোকস ফিরে আসেন আগ্রাসী রূপে। ৫০ পেরিয়েছিলেন ৫৮ বলে। সেখান থেকে শতকে পৌঁছেছেন ৭৮ বলে। অর্থাৎ পরের ৫০ ছুঁতে খেলেছেন ২০ টা বল! 

স্টোকসের ব্যাটিং তাণ্ডবে ইংল্যান্ড পেরিয়ে যায় ৩০০ রানের সংগ্রহ। তবে সেই সংগ্রহটা শেষ পর্যন্ত পৌছে যা ৩৩৯ রান অবধি। অথচ ২১ থেকে ৪০ ওভারের মাঝে ৮১ রান ৫ উইকেট হারানো ইংল্যান্ড পড়েছিল মধ্যম সংগ্রহের শঙ্কার। কিন্তু সেই শঙ্কা একাই মুছে দিয়েছেন স্টোকস। তাঁর ঝড়ো ব্যাটিং শেষ ১০ ওভারে ১৩২ রান তোলে ইংল্যান্ড।

দুঃস্বপ্নের মতো কাটানো বিশ্বকাপে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড ছিটকে গেছে আগেই। আসন্ন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আশা বাঁচিয়ে রাখতে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ম্যাচটা জিততেই হবে ইংল্যান্ডকে।

ইংল্যান্ডের এমন ডু অর ডাই পরিস্থিতিতে ফিরে এলেন চেনা রূপের সেই স্টোকস। অবসর ভেঙে ফিরে এসে প্রাপ্তির খাতটা হয়তো আসর শেষে শূন্যই থেকে যাবে। তবে তাঁর বিশ্বকাপে সেঞ্চুরিশূন্যতার পূর্ণতা ঘটলো এ ম্যাচ দিয়েই। শত আক্ষেপের মাঝে এই ব্যক্তিগত অর্জনটুকুই বা কম কীসে!

 

 

লেখক পরিচিতি

বাইশ গজ ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্ত অঙ্কন করার চেষ্টা করি...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link