বিশ্বকাপে বাংলাদেশের লক্ষ্য ছিল আকাশ ছোঁয়ার, উড়তে থাকা ওয়ানডে দল অসম্ভবকে সম্ভব করবে এমনটাই ছিল প্রত্যাশা। কিন্তু প্রথম ম্যাচে জয়ের পরই পতন ঘটে টাইগারদের; টানা ছয় ম্যাচ হেরে ভক্ত-সমর্থকদের চরম হতাশা উপহার দেন সাকিব, মুশফিকরা।
অথচ উল্টো চিত্র নারী দলের; একের পর এক সাফল্য যুক্ত হচ্ছে তাঁদের অর্জনের খাতায়। সম্প্রতি পাকিস্তান নারী দলকে প্রথমবারের মত ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টি সিরিজে পরাজয়ের স্বাদ দিয়েছে টাইগ্রিসরা। নিগার সুলতানা জ্যোতির নেতৃত্বে নাহিদা, ফাহিমরা বারবার উদযাপনের উপলক্ষ এনে দিচ্ছেন।
পাকিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের শুরুটা হয়েছিল পাঁচ উইকেটের জয় দিয়ে। পরের ম্যাচেও দাপট ধরে রেখেছে বাংলাদেশ দল; জিতেছে ২০ রানের ব্যবধানে। যদিও তৃতীয় টি-টোয়েন্টি জিতে হোয়াইটওয়াশের লজ্জা থেকে রক্ষা পায় নিদা দার বাহিনী।
ওয়ানডে সংস্করণে অবশ্য প্রত্যাবর্তনের গল্প লিখতে হয়েছে জ্যোতির দলকে। সাদিয়া ইকবাল, উম্মে হানীর ঘূর্ণিতে প্রথম ম্যাচে মাত্র ৮১ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ; স্বাভাবিকভাবেই হারতে হয় বিশাল ব্যবধানে। কিন্তু স্বাগতিকরা তাতে দমে যায়নি একবিন্দুও, আহত বাঘিনীর মতই লড়াই করেছে।
দ্বিতীয় ম্যাচে পরাজয়ের দ্বারপ্রান্তে থেকেও ড্র করেছেন তাঁরা, এরপর স্নায়ুক্ষয়ী সুপার ওভারের যুদ্ধে হেসেছে শেষ হাসি। শেষ ম্যাচে তো সফরকারী দাঁড়াতেই পারেনি; সাত উইকেটে হারিয়ে সিরিজ জয় নিশ্চিত করেছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা।
জেতার প্রতি তীব্র আকাঙ্খা, মাঠে নিজের সর্বস্ব দিয়ে লড়াই করার জেদ – সবকিছু রয়েছে বাংলাদেশ নারী দলের মাঝে। প্রমীলা ক্রিকেটারদের ডেডিকেশন নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই, তাঁদের গেম সেন্স কিংবা গেম অ্যাওয়ারনেসে ঘাটতি নেই। তাঁরা হারতে হারতেও জিতে যান শুধু হার না মানার মানসিকতার কারণেই।
এই দলে একজন ক্যাপ্টেন আছেন; তিনি শুধু নেতৃত্বই দেন না, পারফর্ম করেন, সামনে থেকে অনুপ্রেরণা দেন সতীর্থদের। পুরো দলের মাঝে একতা রয়েছে, রয়েছে পরষ্পরের প্রতি বিশ্বাস আর ভরসা। সবমিলিয়ে টাইগ্রিস শিবির এখন আগের তুলনায় অনেক বেশি সমৃদ্ধ আর আত্মবিশ্বাসী।
জাতীয় পর্যায়ে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অর্জন এশিয়া কাপ শিরোপা নিজেদের করে নেয়া। সেটাও এসেছে নারী দলের কল্যাণে, সাম্প্রতিক সময়ে যেভাবে তাঁরা আরো উন্নতি করছেন তাতে আগামী দিনগুলোতেও নিশ্চয়ই অর্জনের পালক যুক্ত হবে বাংলাদেশ ক্রিকেটের মুকুটে।