দিল্লীর ছেলে কোহলিকে সন্তানতুল্যই ভাবে গোটা ব্যাঙ্গালুরু। ব্যাঙ্গালুরুতে ভারতের ম্যাচ মানেই যেন ‘কোহলি কোহলি’ স্লোগানে গোটা স্টেডিয়াম আন্দোলিত, মুখরিত। তবে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ম্যাচে এ দিন অন্য এক আবদারই করেছিল এম চিন্বাস্বামী স্টেডিয়ামের গ্যালারি। ‘কোহলিকে বোলিং দাও, কোহলিকে বোলিং দাও’ — এমন স্লোগানে ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত শর্মার কাছে আকুতি জানাতে থাকেন সমর্থকরা।
মাঠে আসা দর্শকদের সেই অনুরোধ ফেলতে পারেন নি রোহিত শর্মা। একে তো প্রতিপক্ষ খর্বশক্তির নেদারল্যান্ডস, তার উপর আগে ব্যাট করে ভারত ছুঁড়ে দিয়েছে ৪১০ রানের পাহাড়সম সংগ্রহ। পার্ট টাইমার হিসেব বোলারদের ব্যবহার করতে তাই দ্বিধাই পড়তে হয়নি ভারতীয় এ অধিনায়ককে। ইনিংসের ২৩তম ওভারে বিরাট কোহলির হাতে বল তুলে দেন তিনি।
চলতি বিশ্বকাপেই বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচে বোলিং করেছিলেন কোহলি। তবে সেবার মাত্র ৩ বল আর উইকেটশূন্যতাতেই আটকে ছিল বিরাটের বোলিং ফিগার। কিন্তু এবার আর তা হয়নি। ডাচদের বিপক্ষে গুণে গুণে করেছেন তিন ওভার। আর বোলিং করার পাশাপাশি পেয়েছেন উইকেটের দেখাও।
ডাচ অধিনায়ক স্কট এডওয়ার্ড কোহলির বলে লেগে গ্লান্স করতে গিয়ে ধরা পড়েন উইকেটরক্ষক লোকেশ রাহুলের গ্লাভসে। আর এমন অপ্রত্যাশিত উইকেটে কোহলি তো উদযাপন করেছিলেন, এর সাথে উল্লাসে ফেটে পড়ে গোটা স্টেডিয়াম। আর উল্লাসে সামিল হন তাঁর স্ত্রী আনুশকা শর্মাও।
এডওয়ার্ডসের এ উইকেট তুলে নেওয়ার মধ্য দিয়ে দীর্ঘ এক প্রতীক্ষার অবসান ঘটলো কোহলির। ৩৫৭২ দিন, সময়ের হিসেবে প্রায় ৯ বছর পর আবারো ওয়ানডে ক্রিকেটে উইকেটের দেখা পেলেন ভারতীয় এ ব্যাটিং সেনসেশন। মজার ব্যাপার হলো, ডাচদের বিপক্ষে ১৩ রানে ১ উইকেট নেওয়া বোলিং ফিগারটাই এখন হয়ে গেল কোহলির ক্যারিয়ার সেরা বোলিং।
তবে ডাচদের বিপক্ষে এ দিন বোলিং এক্সপেরিমেন্টের এক রকম পসরা সাজিয়েছিলেন রোহিত শর্মা। বিরাট কোহলির পর এ দিন তিনি বল হাতে তুলে দিয়েছিলেন শুভমান গিল আর সুরিয়াকুমার যাদবকেও। বলাই বাহুল্য, রোহিতের হাত দিয়েই এ দুই ব্যাটারের ওয়ানডে ক্রিকেটে বোলার হিসেবে অভিষেক ঘটলো। যদিও এর আগে টেস্ট ম্যাচে বল বোলিং করেছিলেন শুভমান গিল।
তবে কোহলি উইকেট পেলেও উইকেট পাননি গিল আর সুরিয়া কুমার যাদব। দু’জনই দুই ওভার করে বল করে গিল ১১ আর সুরিয়া কুমার যাদব দেন ১৭ রান। অবশ্য ডাচদের বিপক্ষে পার্ট টাইমার দিয়ে বোলিং করালেও তা ভারতের বড় জয়ের পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি।
বোলিং করেছেন অধিনায়ক রোহিত নিজেও। যদিও, একটা ওভারও শেষ করতে পারেননি। পঞ্চম বলেই নেদারল্যান্ডসের শেষ উইকেট নিয়ে দলের জয় নিশ্চিত করেন তিনি।
১৬০ রানের জয় পেয়েছে রোহিতের দল। আর এ জয়ে রাউন্ড রবিন লিগের ৯ ম্যাচের ৯ টিতেই জিতল ভারত। বিশ্বকাপের এই মহাযজ্ঞে অপ্রতিরোধ্য ভারতকে রুখবে কে, সেটিই এখন দেখার বিষয়।