কী নি:সঙ্গ এক লড়াই!

আবারো নক আউট ম্যাচ, আবারো দক্ষিণ আফ্রিকার ছন্দপতন – ইনফর্ম ব্যাটিং লাইনআপ নিয়েও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ব্যাটিং ধ্বস দেখতে হয়েছে প্রোটিয়া সমর্থকদের। কুইন্টন ডি কক, রসি ভ্যান ডার ডুসেনরা দুই অঙ্কের ঘরেও যেতে পারেননি; তবে একজন ঠিকই স্রোতের বিপরীতে দাঁড়িয়ে হাল ধরেছিলেন, তিনি ডেভিড মিলার।

১১৬ বলে ১০১ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস এসেছে মিলারের ব্যাট থেকে, বিশ্বকাপে এটিই তাঁর প্রথম সেঞ্চুরি। সতীর্থদের ব্যর্থতার দিনে এই ইনিংসের কল্যাণেই চ্যালেঞ্জিং পুজি পেয়েছে টেম্বা বাভুমার দল। দল জিতুক কিংবা না জিতুক একক বীরত্বে সমর্থকদের হৃদয় জিতে নিয়েছেন তিনি

মিলার যখন বাইশ গজে এসেছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকা তখন ২৪ রানে চার উইকেট হারিয়ে ধুঁকছিল; মাথায় তখন ১০০ এর আগেই অলআউট হয়ে যাওয়ার শঙ্কা। কিন্তু চাপের মুখে ভেঙে পড়েননি এই ব্যাটার, খেলেছেন ম্যাচের পরিস্থিতি অনুযায়ী। ভাল বলগুলোকে সামলেছেন সতর্কতার সাথে আর বাজে বলকে মেরেছেন সরাসরি বাউন্ডারিতে।

হেনরিখ ক্ল্যাসেনের সাথে তাঁর ৯৫ রানের জুটিতে ম্যাচে ফেরে প্রোটিয়ারা। যদিও ৪৭ রানের মাথায় ক্ল্যাসেন প্যাভিলিয়নে ফেরার পর মার্কো ইয়ানসেনও পারেননি ক্রিজে থাকতে। নিজের প্রথম বলেই আউট হয়েছেন এই তরুণ, ফলে ১১৯ রানে ছয় উইকেট হারিয়ে আবারো বিপর্যয়ের মুখে পড়ে দলটি।

কিন্তু একপ্রান্তে লড়াই চালিয়ে যান মিলার; ৭০ বলে তুলে নেন টুর্নামেন্টে ব্যক্তিগত দ্বিতীয় ফিফটি। সেখান থেকে ধীরে ধীরে রান তোলার গতি বাড়ান, জেরাল্ড কোয়েটজির সঙ্গে মিলে স্কোরবোর্ডে যোগ করেন আরো ৫৩ রান, যার বড় অংশ এসেছে তাঁর ব্যাট থেকেই।

মাঝে কোয়েটজি, মহারাজ আউট হলেও নিজের সেঞ্চুরি পূর্ণ করেছেন এই ব্যাটার। ৫০ থেকে ১০০ – এইটুকু পথ পাড়ি দিতে তাঁর প্রয়োজন হয়েছে ৪৫ বল; অবশ্য তখনি তাঁকে থামিয়ে দেন প্যাট কামিন্স, তা নাহলে দলের রান হয়তো আরেকটু বাড়িয়ে নিতে পারতেন তিনি।

এই বিশ্বকাপে টপ অর্ডারের দুর্দান্ত ফর্মের কারণে তেমন একটা সময় ব্যাটিংয়ের সুযোগ পাননি এই বাঁ-হাতি; অধিকাংশ ম্যাচেই শেষদিকে ফিনিশারের দায়িত্ব পালন করতে হয়েছে। তবে সেমির গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচেই ইনিংস গড়ে তোলার কাজটা করতে হতো তাঁকে, আর সেটাই সবচেয়ে সুন্দর উপায়ে করলেন ‘কিলার’ মিলার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link