টানা দশ ম্যাচে দশ জয়; ব্যাটার, বোলারদের অবিশ্বাস্য ফর্ম তবু বিশ্বকাপ ফাইনাল জেতা হলে না ভারতের। কিন্তু কেন এমন হয়েছে, অস্ট্রেলিয়ার কাছে এই পরাজয়ের কারণ কি? টস না জেতা? শিশির বাধা নাকি কোহলি-রাহুলের অসময়ে আউট হয়ে যাওয়া?
এসব কিছুই আসলে মুখ্য নয়, ভারত হেরে গিয়েছে ব্যাটিং ইনিংসের শেষ ৪০ ওভারে। এসময় মাত্র চারটি বাউন্ডারি মারতে পেরেছেন সুরিয়াকুমার যাদবরা; এতেই পিছিয়ে পড়েছে দল, এরপর আর ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব হয়নি।
এই চারটি চারের মধ্যে আবার দুইটি এসেছে মোহাম্মদ শামি আর মোহাম্মদ সিরাজের ব্যাট থেকে। ফলে স্পষ্ট যে, মাঝের ওভারগুলোতে অতি-রক্ষণাত্বক হয়ে গিয়েছিল স্বাগতিক ব্যাটাররা; অথচ অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং ইনিংসে এই সময়টাতে ট্রাভিস হেড নিয়মিত বাউন্ডারি বের করেছিলেন আর এটিই ভারতকে পিছিয়ে দিয়েছিল যোজন যোজন।
মার্নাস লাবুশানে আর লোকেশ রাহুলের পারফরম্যান্স প্রায় একই, দুজনেই খেলেছেন টেস্ট মেজাজে। কিন্তু অজি তারকা যখন ইচ্ছে ডট বল দিয়েছেন আবার যখন চেয়েছেন তখনি স্ট্রাইক রোটেট করেছেন। ভারতীয় উইকেটকিপার কিন্তু সেটা পারেননি, রানের চেষ্টা করেও ফিল্ডারদের ফাঁকি দিতে পারেননি তিনি। এক রানেরও জন্যও তাঁকে ‘এজ’ এর অপেক্ষা করতে হয়েছিল।
এখানেই আসলে ম্যাচ শেষ হয়ে গিয়েছিল। অস্ট্রেলিয়ার মত দলের বিপক্ষে এত অল্প পুঁজিতে লড়াই করা প্রায় অসম্ভব, ভারতীয় বোলাররাও পারেননি অকল্পনীয় কিছু করতে।
প্রশ্ন উঠেছে, কেন এই অতি সতর্ক এপ্রোচ? মূলত ভারতের ব্যাটিং লাইনআপ তেমন বড় নয়; আবার সুরিয়াকুমারও ওয়ানডেতে পুরোপুরি মানিয়ে নিতে পারেননি। এছাড়া জাদেজাকে মানসম্পন্ন স্পিন এবং রিভার্স সুইংয়ের বিরুদ্ধে ধুঁকতে দেখা গিয়েছে। সর্বোপরি হার্দিক পান্ডিয়ার যে শূণ্যতা সৃষ্টি হয়েছিল সেটা পূরণ করতে পারেনি টিম ম্যানেজম্যান্ট।
সেজন্যই পুরো পঞ্চাশ ওভার খেলতে চেয়েছেন রাহুল। কিন্তু দিনশেষে সেটিই ভারতের ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। হয়তো আরেকটু ইতিবাচক থাকতে পারলে বিশ-ত্রিশ রানের আক্ষেপ করতে হতো না রোহিত শর্মাকে।
ব্যাটিং ভারতের মূল শক্তি, লাইনআপের প্রায় সবাই রান পেয়েছেন এবার। তবু ফাইনালের জন্য কেন ধীরগতির পিচ বেছে নেয়া হলো সেটার কারণ এখনও অস্পষ্ট রয়ে গেছে; আর কখনোও জানা যাবে না।