ফ্রেমটা বড্ড অপ্রত্যাশিত ভারতীয় সমর্থকদের জন্য। দুই পাশে দুই অস্ট্রেলিয়ান। একজন বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক প্যাট কামিন্স, অন্যজন অস্ট্রেলিয়ার ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী রিচার্ড মার্লস। আর মাঝে আছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। যার নামের স্টেডিয়ামেই এবারের বিশ্বকাপ ফাইনাল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মাঠ, প্রধান অতিথি কিংবা অগণিত দর্শক- সবটাই ছিল ভারতের দখলে। কিন্তু যাদের জন্য এতো আয়োজন সেই বিরাট-রোহিতরাই শেষ পর্যন্ত বিজয়োল্লাস করতে পারেননি। বরং অজিদের কাছে বিশ্বকাপ খুইয়ে পুরো স্টেডিয়ামে বিরাজ করেছিল নিস্তব্ধতা। মোদি নিজেও হয়তো রোহিতের হাতে বিশ্বকাপ ট্রফিটা দেখতে চেয়েছিলেন।
তবে ভারত ফাইনালে হারলেও রাজনৈতিকভাবে তেমন ক্ষতিগ্রস্ত হননি ভারতের প্রধানমন্ত্রী। বরং ভারতের মাটিতে এবারের বিশ্বকাপ আয়োজনের সফলতাস্বরূপ অনেকটা উপকৃতই হলেন নরেন্দ্র মোদি। চলতি বছরেই ভারতে বসেই জি-২০ সম্মেলন। আর সেখানেই তিনি বিশ্বকাপকে আয়োজনকে গুরুত্ব সহকারে উপস্থাপন করেছিলেন।
অবশ্য ভারতের ক্রিকেটে নরেন্দ্র মোদির দল বিজেপির আধিপত্য আছে বহুকাল আগে থেকেই। বিসিসিআই-এর বর্তমান সেক্রেটারি জয় শাহ হচ্ছেন ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর ছেলে। আর এখানেই নির্বাচনী প্রচারণায় রাজনীতি মিশে গিয়েছে ক্রিকেট। বিশ্বকাপের প্রায় সব ভেন্যুতেই মিলেছে মোদির বিলবোর্ড।
মজার ব্যাপার, বিজেপি সরকারের বিরোধী দলের অঞ্চলগুলোতে এবারের বিশ্বকাপে কোনো ভেন্যুই বরাদ্দ দেওয়া হয়নি। ১৯৮৭ আর ২০১১, দুই বিশ্বকাপেই গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ আয়োজন করেছিল মোহালি। অথচ এবার সেখানে ম্যাচই রাখা হয়নি। কারণটা হলো, এই অঞ্চলগুলো মোদির ততটা নিয়ন্ত্রণে নেই।
সব মিলিয়ে বিশ্বকাপের ফাইনালে ভারত হারলেও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি রাজনৈতিকভাবে উপকৃতই হয়েছেন বলা চলে। বরং, ভারত জিতলে বিজেপি সরকারের মেয়াদকালের ৬ মাস আগেই নির্বাচনের আয়োজন করতে হতো মোদিকে।
তবে আপাতত সেটি করতে হচ্ছে না তাঁকে। অস্ট্রেলিয়া জেতায় বৈশ্বিক মঞ্চে বেশ ইতিবাচক ভাবেই ফুটে উঠেছেন নরেন্দ্র মোদি। যেটা আপাতদৃষ্টিতে আহামরি কিছু না মনে হলেও, নির্বাচনের আগে দারুণ এক গ্রহণযোগ্য আদায় করে নিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী।