হুট করেই সরগরম হয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের করিডর। বিশ্বকাপে দলের ভরাডুবির পর এক প্রকার নিরব মরভূমি হয়ে উঠেছিল বিসিবি প্রাঙ্গণ। তবে সেই মরুভূমি আড়মোড়া ভেঙেছে। হুট করেই বিসিবির উঠোন জুড়ে সাকিব আল হাসান, হেড কোচ চান্ডিকা হাতুরুসিংহে সহ দল সংশ্লিষ্ট অনেকেই হাজির হয়েছেন।
স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে তবে কি তারা বিশ্বকাপের রিপোর্ট জমা দিতেই এসেছিলেন? একটা বিষয় অবশ্য সত্য, হেড কোচ চান্ডিকা হাতুরুসিংহে ও বিশ্বকাপে বাংলাদেশের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান দু’জনই নিজ নিজ রিপোর্ট বিসিবিকে প্রদান করেছেন।
তবে তা স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে জমা দেওয়ার কোন বাধ্যবাধকতা ছিল না। তারা বরং ই-মেইল যোগে রিপোর্ট পাঠিয়েছেন নির্দিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে। তেমনটি জানিয়েছেন জালান ইউনুস। বিসিবি পরিচালনা বিভাগের প্রধান আরও জানিয়েছেন যে বিসিবির আগামী সভায় সেই রিপোর্ট উপস্থাপন করা হবে।
এরপরই সে নিয়ে আলোচনা হবে বিসিবিতে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ব্যর্থতার সমাধান খুঁজে নেওয়ার চেষ্টা চালাবেন বলেই ধারণা করে নেওয়া যায়। তবে খানিকটা কৌতুহল নিশ্চয়ই হবার কথা সেই রিপোর্ট নিয়ে। তবে তা দলের একান্ত অভ্যন্তরীণ বিষয় বলেই কোন মহল থেকেই এসব তথ্য বাইরে আসেনি। সেটা আসা উচিতও নয়।
তবে যে বিষয়টি উচিত, তা হচ্ছে একটা সঠিক সমাধান খুঁজে বের করা। বিশ্বকাপের কয়েক মাস আগে থেকে বাংলাদেশের ড্রেসিং রুম ছিল অস্থিতিশীল। এর ব্যপ্তিকাল সম্ভবত আরও খানিকটা দীর্ঘসময় ধরেই। তবে বিসিবি সেসব সম্ভবত এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছে। অথবা তারা সমাধানের চেষ্টা করেও হয়েছে ব্যর্থ। দ্বিতীয়টাই সম্ভবত ঘটেছে।
একটা গোটা দলের মানসিকতা স্থিতিশীল বা উৎফুল্ল না থাকলে তাদের দ্বারা বিশ্বজয় সম্ভব নয়। সেটা আর নতুন করে বলবার নয়। বাংলাদেশ দলের ভেতরকার পরিস্থিতিতে বদল আনা প্রয়োজন। রিপোর্টে অন্দরমহলের মানসিকতা আর আবহাওয়াও নিশ্চয়ই উল্লেখ রয়েছে। সেসবের প্রতিও সমান নজর দেওয়া প্রয়োজন।
ক্রিকেটের বিকাশে যেমন বয়সভিত্তিক দল থেকে শুরু করে অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রয়োজন। ঠিক তেমনি খেলোয়াড়দের মানসিকভাবে স্থির থাকার, নিজের গেমপ্ল্যান নিয়ে ভাববান প্রশান্তিময় সময় দেওয়া প্রয়োজন। পাশাপাশি দলের প্রতিটা খেলোয়াড়ের প্রতি আস্থা ও ভরসা থাকাও প্রয়োজন।
এসব কিছুই বাংলাদেশ দলকে আবার ঘুরে দাঁড়াবার জ্বালানি জোগাবে। আর তেমনটি করতে দলের অন্দরমহলে যত বিচ্যুতি রয়েছে সেসবের একটা সমাধান করে সুস্থ পরিবেশ সৃষ্টি করবার দায় নিশ্চয়ই বিসিবির। পরিকল্পনার ভুলত্রুটি, মাঠে খেলোয়াড়দের বাস্তবায়নে গড়মিল, এসব কিছুর কেন্দ্রবিন্দু মানসিক অস্থিরতা। সেটার সমাধান হলেই বরং হতে পারে অনেক কিছুর সমাধান।