কেমন হবে বাংলাদেশের একাদশ?

টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপে বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ। সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে নিউজিল্যান্ডকে আতিথিয়েতা দিচ্ছে টাইগাররা। দলের নিয়মিত খেলোয়াড়দের অনেকেই নেই স্কোয়াডে। বিভিন্ন কারণে অনুপস্থিত সিনিয়র সব ক্রিকেটাররা।

ওপেনিংয়ে তামিম ইকবাল খান নেই। ইনজুরির কারণে স্কোয়াডে নেই সাকিব আল হাসানও। তাছাড়া লিটন দাস ব্যক্তিগত কারণে ছুটিতে রয়েছেন। তাসকিন আহমেদ ও এবাদত হোসেনও ইনজুরির কারণে থাকছেন মাঠের বাইরে। তাইতো পূর্ণ শক্তির নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে একাদশ সাঁজাতে খানিকটা হিমশিমই খেতে হচ্ছে বাংলাদেশকে।

ওপেনিংয়ে মাহমুদুল হাসান জয়ের খেলা প্রায় নিশ্চিত। দ্বিধা সৃষ্টি করেছেন বরং দুই বা-হাতি। জাকির হাসান ও সাদমান ইসলাম দু’জনই সদ্য শেষ হওয়া জাতীয় ক্রিকেট লিগে ৪০০ এর বেশি রান করেছেন। জাকির ৪২২ রান করেছেন। অন্যদিকে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান এসেছে সাদমানের ব্যাট থেকে, ৪৫৩।

তাইতো সৃষ্টি হয়েছে দ্বিধার। তবে জাকির হাসানকে একাদশে দেখতে পাওয়ার সম্ভাবনা বেশ প্রবল। শেষ টেস্টেও আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৭১ রানের একটি ইনিংস উপহার দিয়েছিলেন জাকির। সেই বিবেচনায় তিনি একাদশে সুযোগটা পাওয়ার দাবিদার।

এরপরে ৩-৭ নম্বর ব্যাটিং পজিশনে খুব একটা রদবদল আসার সুযোগ নেই। নাজমুল হোসেন শান্ত টানা তৃতীয় টেস্ট সেঞ্চুরির দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে আছেন। তাছাড়া মুমিনুল হককে ছাড়া বাংলাদেশের সাদা পোশাকের একাদশ যেন ধূসর। তাছাড়া এবারের জাতীয় ক্রিকেট লিগেও যে তিনি রানের ফোয়ারা ফুটিয়েছেন। হয়েছেন সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক।

অন্যদিকে দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ ক্রিকেটার এই মুহূর্তে মুশফিকুর রহিম। দলের ব্যাটিংয়ের স্তম্ভও তিনি। সুতরাং একাদশের বাইরে তাকে রাখা দুষ্কর। বয়সটা হয়েছে বিধায় লংগার ফরম্যাটে উইকেট কিপিংটা করবেন না মুশফিক, সেটাও অনুমিত।

তাইতো একাদশে নুরুল হাসান সোহানের অন্তর্ভুক্তি অবধারিত। তাছাড়া লিটন কুমার দাস না থাকায় উইকেটরক্ষণের গুরুদায়িত্বটা তাকেই কাঁধে তুলে নিতে হচ্ছে। মেহেদী হাসান মিরাজ দলে থাকা একমাত্র স্বীকৃত অলরাউন্ডার। দলের ভারসাম্য অন্তত রক্ষায় মিরাজ একাদশে সুযোগটা পেয়ে যাচ্ছেন। অবশ্য তাকে ডাগআউটে রেখে দেওয়ার বিশেষ কোন কারণও নেই।

বোলিং আক্রমণেই এসেই আবার খানিকটা বিড়ম্বনার সৃষ্টি হয়েছে। অভিজ্ঞ ক্রিকেটারদের অনুপস্থিতি সেই বিড়ম্বনার কারণ বটে। তাছাড়া উইকেট ঠিকঠাক পড়তে না পারার একটা জটিলতাও রয়েছে। সেদিক বিবেচনায় বোলিং কম্বিনেশন নিয়েও খানিকটা দুশ্চিন্তাগ্রস্থ বাংলাদেশের টিম ম্যানেজমেন্ট।

যেহেতু বা-হাতি স্পিনার হিসেবে সাকিবের সার্ভিস পাচ্ছে না দল। সেহেতু একাদশে একজন বা-হাতি স্পিনার থাকছেন সেটা প্রায় নিশ্চিত। সেক্ষেত্রে আবার বিকল্প রয়েছে দুইজন। অভিজ্ঞ তাইজুল ইসলামের সাথে প্রথমবারের মত জাতীয় দলে ডাক পাওয়া হাসান মুরাদ রয়েছেন।

অভিজ্ঞতা বিচারে তাইজুল ইসলামই হতে পারেন যথাযথ পছন্দ। যেহেতু টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপের ম্যাচ, সেহেতু বাড়তি ঝুঁকি হয়ত নিতে চাইবে না বাংলাদেশের টিম ম্যানেজমেন্ট। তবে কোন রকম ঝুঁকি নিয়ে মুরাদের অভিষেক ঘটানোর সম্ভাবনা একেবারেই উড়িয়ে দেওয়া যায় না।

অন্যদিকে নাঈম হাসান দলে থাকছেন সেটাও প্রায় নিশ্চিত। সদ্য শেষ হওয়া এনসিএলে চট্টগ্রাম বিভাগের হয়ে ৩৬টি উইকেট শিকার করেছনে নাঈম হাসান। তাকে বাদ দেওয়াটা রীতিমত হতে পারে অন্যায়। সামগ্রিক চিত্র বলছে একাদশে দুই পেসারের অন্তর্ভূক্তি। সেদিক থেকে খালেদ আহমেদ থাকছেন একাদশে। তার সঙ্গী হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে শরিফুল ইসলাম।

বৈচিত্র্যের কথা মাথায় রেখে শরিফুলকেই হয়ত প্রাধান্য দেওয়া হবে হাসান মাহমুদের পরিবর্তে। তাছাড়া হাসানের টেস্ট খেলার পূর্ব অভিজ্ঞতা না থাকাই বাঁধ সাধতে পারে। মোটামুটি এমন এক একাদশ নিয়েই মাঠে নামতে পারে বাংলাদেশ দল। জয়ের আশা নিয়েই মাঠে নামছে দল। তবে সেজন্যে ১৫টি সেশনেই দেখাতে হবে দাপট।

বাংলাদেশের সম্ভাব্য একাদশ: মাহমুদুল হাসান জয়, জাকির হাসান, নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), মুমিনুল হক, মুশফিকুর রহিম, নুরুল হাসান সোহান (উইকেট রক্ষক), মেহেদী হাসান মিরাজ, নাঈম হাসান, তাইজুল ইসলাম, শরিফুল ইসলাম, খালেদ আহমেদ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link