তামিম পরবর্তী যুগে জাকির বনাম সাদমান

একটা পিঠের চোট। এরপর ঘটে গেছে নানামুখী কাণ্ড। বাংলাদেশ ক্রিকেটের অন্যতম সেরা ওপেনার তামিম ইকবালকে পার করতে হয়েছে দুর্বিষহ এক সময়। তবে সেসব গত হয়েছে। খানিকটা স্থিতিশীলতা যেন চারিদিকে। এর মাঝেই নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট ম্যাচ খেলতে নামছে বাংলাদেশ দল।

এই টেস্টের একাদশ সাঁজাতে গিয়ে খানিকটা মধুর সমস্যা হচ্ছে বৈকি। বিশেষ করে ওপেনিং পজিশনে। দলে রয়েছেন তিনজন ওপেনার। মাহমুদুল হাসান জয়, জাকির হাসান ও সাদমান ইসলাম। এই তিনজনকে ঘিরেই হয়েছে দ্বিধার জন্ম।

মূল লড়াইটা হচ্ছে অবশ্য সাদমান ইসলাম ও জাকির হাসানে মাঝেই। দুই বাঁ-হাতি ব্যাটার রয়েছেন রানের ধারায়। সদ্য শেষ হওয়া জাতীয় ক্রিকেট লিগে দুইজনের ব্যাট থেকেই এসেছে বড় রান। এক সেঞ্চুরি ও দুই হাফ সেঞ্চুরিতে ৪৫৩ রান করেছেন সাদমান। গড়টা তার ৫০.৫৫।

অন্যদিকে জাকিরের গড় খানিকটা বেশি। ৫২.৮১ গড়ে তিনি রান করেছেন ৪২২। একটি শতক এসেছে তার ব্যাট থেকেও, পঞ্চাশও করেছেন তিনি সাদমানের সমপরিমাণ। তাইতো একাদশে কাকে রেখে কাকে বাদ দেওয়া হবে সে নিয়ে সংশয়।

মাহমুদুল হাসান জয় একাদশে নিশ্চিতরুপেই থাকছেন। ওপেনিংয়ে ডান-বাম সমন্বয় করতেই জয়ের অন্তর্ভূক্তি নিশ্চিত। তবে তার সঙ্গী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে কঠিন সিদ্ধান্তই নিতে হবে বাংলাদেশের টিম ম্যানেজমেন্টকে। সাদমান অবশ্য খানিকটা পিছিয়েই থাকছেন।

টেস্ট টেম্পারমেন্ট প্রদর্শন করেই সাদমানের আগমন ঘটেছিল। তবে পথচলায় হুট করেই ছন্দপতন হয় তার। এক ফরম্যাট খেলা সাদমান তাই চলে যান দলের বাইরে। শেষ টেস্ট তিনি খেলেছেন ২০২২ সালে। এরপর অবশ্য ঘরোয়া ক্রিকেটে নিজেকে প্রমাণ করে আবার জাতীয় দলে ফিরেছেন।

অন্যদিকে জাকির হাসানও একই মশাল হাতে এসেছেন জাতীয় দলে। তিন ম্যাচের মধ্যে তিনি তিনটি পঞ্চাশোর্ধ ইনিংস ইতোমধ্যেই খেলে ফেলেছেন। অভিষেক টেস্টেই ভারতের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিলেন জাকির হাসান। এমনকি নিজের খেলা শেষ টেস্ট ইনিংসে ৭১ রানের ইনিংস খেলেছেন তিনি।

অতএব সাম্প্রতিক পারফেমেন্স ও জাতীয় দলের জার্সিতে ধারাবাহিকতা, এই দুইয়ের মিশেলে জাকির হাসানই এগিয়ে থাকছেন একাদশে সুযোগ পাওয়ার ক্ষেত্রে। তবে এসব আলোচনার মাঝে কেন শুরতেই তামিমকে জুড়ে দেওয়া হল, সে প্রশ্ন জাগতেই পারে মনে।

সহজ উত্তর হচ্ছে, উত্তরসূরী খুঁজে পাওয়ার স্বস্তি। দীর্ঘদিন ধরেই তামিমের অবর্তমানে কে সামলাবেন দলের ওপেনিংয়ের দায়িত্ব তা নিয়ে ছিল দুশ্চিন্তা। সেই চিন্তা খানিকটা হলেও স্তিমিত হল বোধহয়। অন্তত টেস্ট ক্রিকেটে। তামিম লম্বা সময় ধরে সুযোগ পেয়েছেন। সেই সুযোগের সদ্ব্যবহার করেছেন তিনি।

জাকির আর সাদমানদের দৃশ্যপট ভিন্ন। তারা দুইজন রয়েছেন এক সুস্থ প্রতিযোগিতার মধ্যে। তাতে দুইজনের মাঝেই পারফরমেন্সের ক্ষুধা বাড়বে নিশ্চিতরুপেই। যা তাদের নিজেদেরকে ছাপিয়ে যেতে উদ্বুদ্ধ করবে অনেকটাই। সেটা আখেরে বাংলাদেশকেই করবে লাভবান। শত হতাশার মাঝে এতটুকুই যেন স্বস্তি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link