দারুণ খেলতে থাকা ড্যারিল মিশেলকে অন্তত ফেরানো গেল। তাইজুল ইসলাম এনে দিলেন সেই কাঙ্ক্ষিত ব্রেকথ্রু। লেন্থটা খানিকটা খাটো করে দিলেন। একটু সামনের দিকে ঝুকে ফরোয়ার্ড ডিফেন্স করতে চাইলেন মিশেল। তবে বিধিবাম! বেশ সূক্ষ্ম এক টার্নে বল গিয়ে জমা পড়ে উইকেটরক্ষকের হাতে।
পপিং ক্রিজে ফেরার সময়টুকু আর দেননি নুরুল হাসান সোহান। দারুণ দক্ষতায় মিশেলের আউটটি নিশ্চিত করেন সোহান, স্ট্যাম্পের বেলস উড়িয়ে। ৪১ রানে ফিরে যান ড্যারিল মিশেল। অথচ এত রান তার করবারই কথা ছিল না। তিনি আউট হয়ে যেতে পারতেন আরও বহু আগেই।
তখন সবেমাত্র মিশেলের রান ৪। সেই সময়ে বলে একেবারে হালকা একটা ছোঁয়ায় বল গিয়ে জমা পড়ে উইকেটরক্ষকের হাতে। সোহান সে দফা খানিক ইতস্তত আবেদন করেছেন। বোলার শরিফুল ইসলাম তো বেশ খানিকটা পরে গিয়ে আবেদন করেন। তবে এমন ইতস্তত আবেদনের সাড়া দেনননি আম্পায়ার।
সবার ধারণা ছিল ব্যাটের ছোঁয়া লাগেনি। কিন্তু খানিক বাদেই মাঠে থাকা বড়পর্দায় ভেসে ওঠে ভিন্ন চিত্র। একেবারে আলতো এক ছোঁয়া লেগেছিল ব্যাটের বাহিরের দিকটার। সেখানেই সমাপ্তি ঘটতে পারত মিশেলের ইনিংসে। তখন আরও বেশি চাপে ফেলা যেতে পারত নিউজিল্যান্ডকে।
এই জায়গায় উইকেটের পেছনে থাকা নুরুল হাসান সোহানেরই দায়িত্ব ছিল সবচেয়ে বেশি। মাঠের দর্শকদের তেমন একটা উপস্থিতি নেই। জনসমুদ্রের কোলাহল নেই। এমন এক পরিস্থিতিতে এই সামান্য আওয়াজটুকুতে আত্মবিশ্বাস থাকা প্রয়োজন ছিল। উইকেট রক্ষকের দক্ষতার প্রশ্ন সেখানে তোলাই যায়।
তিনি চাইলেই অধিনায়ককে আবেদন পুন:রায় বিবেচনার আবেদন করতে পরামর্শ দিতে পারতেন। তবে নুরুল হাসান সোহান সেখানে দিয়েছেন ব্যর্থতার পরিচয়। অবশ্য এই ঘটনাকে খেলার এক বিচ্ছিন্ন অংশ হিসেবে চাইলেই আখ্যায়িত করা যায়।
তবে সমস্যা হচ্ছে এই বিচ্ছিন্ন ঘটনাগুলোই পরবর্তীতে ধারণ করে বিশাল আকার। ড্যারিল মিশেল সেবারের মত বেঁচে গিয়ে কেন উইলিয়ামসনের সাথে ৬৬ রানের গুরুত্বপূর্ণ এক জুটি গড়ে তোলেন। অথচ হেনরি নিকলসের বিদায়ের পর মিশেলকে ফেরানো গেলে ভীষণ চাপে পড়ে যেত নিউজিল্যান্ডের।
সেই চাপকে দ্বিগুণ বাড়িয়ে দিতে পারতেন বাংলাদেশের স্পিনাররা। কেননা সময় যত গড়িয়েছে, বল পুরনো হয়েছে। সেই সাথে উইকেটেরও বয়স বেড়েছে। স্পিনাররা সুবিধা পেতে শুরু করেছিলেন। সূক্ষ্ম সব টার্ন আদায় করে নিচ্ছিলেন নাঈম হাসান, তাইজুল ইসলামরা।
মিশেল সে সময় আউট হয়ে ফিরল ভিন্ন এক চিত্র হলেও হতে পারত। মিশেল সেবারের মত বেঁচে যাওয়ার পর বেশ সাবলীল ধারায় রান করে যাচ্ছিলেন। সেই ধারার সৃষ্টিও হয়ত হতো না। নিছক এক বিচ্ছিন্ন ঘটনাই বদলে দিয়েছেন পুরনো ম্যাচের দৃশ্যপট।