ঘোষণাটা আগেই দিয়ে রেখেছিলেন ডেভিড ওয়ার্নার, পাকিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টেস্ট সিরিজ দিয়ে লাল বলের ক্যারিয়ারকে বিদায় জানাবেন। সাম্প্রতিক সময়টা ভাল যাচ্ছিলো না তাঁর, পুরনো কীর্তি তাই ভুলতে বসেছিল অনেকে। বর্নাঢ্য এক ক্যারিয়ারের গল্প আবার মনে করিয়ে দিতে বিদায় লগ্নে তাই দারুণ কিছু করতেই হতো তাঁকে, আর প্রথম সুযোগে সেটাই করলেন তিনি।
পাকিস্তানের বিপক্ষে পার্থ টেস্টের প্রথম ইনিংসে এই ওপেনার হাঁকিয়েছেন দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি। নতুন বলে শাহীন শাহ আফ্রিদিদের সুইং সামলে দারুণ ব্যাটিং করেছেন তিনি, দেখিয়েছেন নিজের সামর্থ্য। সাদা পোশাকে এখনো সেরা ব্যাটারদের একজন, সেটাই প্রমাণ করেছে তাঁর এই পারফরম্যান্স।
শুরু থেকেই ইতিবাচক ব্যাটিং করেছেন এই বাঁ-হাতি, অতি-রক্ষণাত্বক না হয়ে শাসন করেছেন পাক বোলারদের। সেজন্যই মাত্র ৪১ বলে হাফসেঞ্চুরি করতে পেরেছিলেন তিনি, আর শতক পূর্ণ করেছেন ১২৫ বলে – অস্ট্রেলিয়া মাঝে অল্প সময়ের ব্যবধানে দুই উইকেট না হারালে হয়তো আরো দ্রুত তিন অঙ্কের ঘরে পৌঁছে যেতেন।
পাকিস্তানের বিপক্ষে অবশ্য বরাবরই পারফরম করতে ভালবাসেন এই অজি তারকা। আগের ১৬ ইনিংসে দলটির বিপক্ষে ১২৫৩ রান করেছেন তিনি। ব্যাটিং গড় প্রায় ৮৪ আর স্ট্রাইক রেট ৭৬.২৬! পরিসংখ্যানই সাক্ষ্য দেয়, এশিয়ান প্রতিনিধিদের বিপক্ষে কতটা সাবলীল তাঁর ব্যাট।
যদিও গত দুই বছরে ওয়ার্নারের পারফরম্যান্স মোটেই সন্তোষজনক ছিল না। ২০২২ সালে ব্যাটিং গড় ছিল মাত্র ৩০, চলতি বছর পাকিস্তান সিরিজের আগে ব্যাটিং করেছেন স্রেফ ২২ গড়ে। ফলে সমালোচনার তীব্র স্রোত ধেয়ে এসেছে তাঁর দিকে, মিচেল জনসন তো ব্যক্তিগত আক্রমণই করে বসেছেন। কিন্তু এই ব্যাটার মুখে কিছুই বলেননি, জবাবটা দিয়েছেন উইলো হাতে, পারফরম্যান্স দিয়ে।
বিধ্বংসী এই ওপেনারের এমন মূর্তি দেখে আক্ষেপ জাগে ক্রিকেটপ্রেমীদের হৃদয়ে। ক্যারিয়ারের শেষ সিরিজেও কি অনায়াসে রাজত্ব করছেন বাইশ গজে, কি অনায়াসে বাড়িয়ে নিচ্ছেন রান সংখ্যা। ক্রিকেটের দীর্ঘতম সংস্করণে দেয়ার হয়তো আরো অনেক কিছুই ছিল, কিন্তু অজানা অভিমানে তিনি তুলে রাখছেন সাদা পোশাক খানা।