মোটে ১৩৫ রানের টার্গেট, ইতিহাস তখন হাতছানি দিয়ে ডাকছিল বাংলাদেশকে। কিন্তু একের পর এক ব্যাটার ইনিংস বড় করতে ব্যর্থ হওয়ায় ক্রমাগত দূরে সরে যায় বহুল আকাঙ্ক্ষিত জয়; একটা সময় তো পরাজয়ের শঙ্কা জমা হয়েছিল লাল-সবুজ আকাশে। কিন্তু সতীর্থদের ব্যর্থতার মাঝেও দৃঢ় ছিলেন লিটন দাস, এক ঝটকায় সব শঙ্কা সরিয়ে তিনি উড়িয়েছেন বিজয়ের পতাকা।
দলীয় ৯৮ রানের মাথায় যখন আফিফ হোসেন আউট হন তখনি চাপে পড়ে গিয়েছিল টাইগাররা, দুই বল পরেই লিটনের বিরুদ্ধে এলবিডব্লুর সিদ্ধান্ত দিয়ে বসেন আম্পায়ার। শেষ ভরসা হিসেবে রিভিউ নেন তিনি, তাতেই বেঁচে যান অল্পের জন্য, এরপর আর পিছনে ফিরে তাঁকাতে হয়নি তাঁকে, স্বাগতিক বোলারদের কোন সুযোগ দেননি চেপে বসার। শেষ পর্যন্ত দলের জয় নিশ্চিত করেই মাঠ ছেড়েছেন এই ডানহাতি।
সবমিলিয়ে এই ম্যাচে ৩৬ বলে ৪২ রান করেছেন তিনি, দুই চার আর এক ছয়ে সাজানো এই ইনিংস সংখ্যাতত্ত্বে খুব বড় না হলেও প্রেক্ষাপট বিবেচনায় নি:সন্দেহে বছরের অন্যতম সেরা নক। সংক্ষিপ্ততম ফরম্যাটে নিউজিল্যান্ড জয়ের পেছনে অবিস্মরণীয় অবদান রয়েছে এটির; শরিফুল-মেহেদীদের পাশাপাশি তাই তাঁকেও জয়ের নায়ক বলতেই হচ্ছে।
এদিন মূলত অ্যাঙ্কর রোল পালন করেছেন এই উইকেটকিপার ব্যাটার। শুরু থেকেই রয়ে সয়ে খেলেছেন তিনি; শান্ত-সৌম্যরা একপাশ থেকে ঝড় তুললেও ঝুঁকি নেননি। প্রথম ২৭ বলে মাত্র ২২ রান এসেছিল তাঁর ব্যাট থেকে, সে সময় আউট হলে হয়তো পরাজয়ের কারণ হয়েই থাকতে হতো তাঁকে।
তবে খানিকটা ভাগ্যের ছোঁয়া আর নিজের উপর বিশ্বাসের জোরে জয় উদযাপনের উপলক্ষ এনে দিতে সক্ষম হলেন লিটন। মারকাটারি এই যুগেও যে হিসেবী ব্যাটিং করে দলকে জেতানো সম্ভব সেটাই আরেক বার প্রমাণ করলেন তিনি। যতদিন কিউইদের বিপক্ষে তাঁদের মাটিতে প্রথম টি-টোয়েন্টি জয়ের কথা ক্রিকেটপ্রেমীরা মনে রাখবে ততদিনই আসলে মনে রাখতে হবে তাঁকে।
চলতি বছর বিশ ওভারের ফরম্যাটে দারুণ ধারাবাহিক এই তারকা। নয় ম্যাচ খেলে ৪০ এর বেশি গড়ে করেছেন ৩২৪ রান, আর স্ট্রাইক রেট ১৩৮! ব্ল্যাকক্যাপসদের দেশে প্রথমবারের মত সিরিজ জয়ের স্বপ্নে বিভোর বাংলাদেশ আগামী ম্যাচগুলোতেও তাঁর এমন ইনফর্ম রূপ দেখতে চাইবে নিশ্চয়ই।