গত কয়েকদিন বিপিএলে বিদেশি ব্যাটারদের আধিপত্য ছিল বেশি, তবে অপেক্ষার অবসান ঘটিয়েছেন নাঈম শেখরা। খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষে ওপেনিংয়ে নেমে নাঈম খেলেছেন দারুণ এক ঝড়ো ইনিংস। সিলেটের ব্যাটিং স্বর্গে স্থানীয় তারকাদের ব্যাটিং পারফরম্যান্স দেখার জন্য মুখিয়ে ছিল দর্শক-সমর্থেকরা; তাঁদের স্বপ্নই পূরণ করেছেন তিনি।
এদিন মাত্র ২১ বলে ৪১ রান করেছেন নাঈম, পাওয়ার-প্লের সুবিধা পুরোটা কাজে লাগিয়ে দ্রুত গতিতে রান তুলেছেন তিনি। সবমিলিয়ে দুইটি চার আর চারটি ছয়ে সাজিয়েছেন এই ইনিংস, যেখানে তাঁর স্ট্রাইকরেট প্রায় ২০০ ছুঁই ছুঁই।
নাহিদুল ইসলামকে পরপর দুই বলে দুই বাউন্ডারি হাঁকিয়ে শুরু থেকেই আগ্রাসী হওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন এই বাঁ-হাতি। সেই আগ্রাসন মাঝে অবশ্য স্তিমিত হয়ে গিয়েছিল, কিন্তু আফিফ হোসেন, মুকিদুল ইসলামদের উপর চড়াও হন তিনি। তাতেই ঢাকা পেয়ে গিয়েছিল উড়ন্ত সূচনা।
আউট হওয়ার আগের তিন বলে এই ওপেনার দুইটি ছক্কা আর একটি চার মেরেছিলেন। আর যে বলে আউট হয়েছেন সেটাও মাঠ ছাড়া করতে চেয়েছিলেন। তাই বলাই যায়, আউট না হলে নিশ্চিতভাবেই দ্রুত রান তোলার ধারা অব্যাহত রাখতেন নাঈম।
অবশ্য রান পেলেও এই ব্যাটার কিন্তু নিজের সমস্যা কাটিয়ে উঠতে পারেননি এখনো। জাতীয় দলে অভিষেকের পরে লম্বা একটা সময় নিয়মিত ওপেন করতেন তিনি। কিন্তু অতিরিক্ত ডট বল আর বাউন্ডারির প্রতি অতি-নির্ভরতা তাঁকে সীমাবদ্ধ করে তুলেছিল; এবং সেজন্য দল থেকে বাদও পড়েন।
খুলনার বিপক্ষে ৪১ রানের ইনিংসেও ছিল একই চিত্র, বাউন্ডারি থেকেই ৩২ রান নিয়েছেন নাঈম। বাকি নয় রান করতে তাঁর লেগেছে ১৫ বল। আবার সেট হয়ে বড় রান করতে না পারার ব্যাপারটিও ফুটে উঠেছে, মূলত স্ট্রাইক রোটেশনে পারদর্শী না হওয়ায় পাওয়ার প্লে শেষ হতেই মিইয়ে আসে তাঁর ব্যাট।
এসবের মাঝেও তিনি একটা বার্তা দিয়ে রেখেছেন যে টি-টোয়েন্টি ঘরানার ব্যাটিং জানেন। দলকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেয়ার ক্ষেত্রে দারুণ কার্যকরী তিনি। কিন্তু একাধিক সীমাবদ্ধতা তাঁকে একটা গন্ডির মাঝে আবদ্ধ করে রেখেছে, এসব সমস্যার সমাধান করতে পারলে এই তরুণ নিঃসন্দেহে আরো দুর্দান্ত হয়ে উঠতে পারবেন।