এর আগেও ২০১৭ সালে একবার বিপিএল খেলতে এসেছিলেন বাবর আজম। তবে তখনও বাবরের নিজস্ব সাম্রাজ্য তৈরি হয়নি। ৬ বছরের ব্যবধানে বাবর পরিণত হয়েছেন। ছুটেছেন শুধু সেরাদের কাতারে সামিল হওয়ার লড়াইয়ে। হয়েছেনও বটে। ৬ বছর পর তাই যখন আবারো বাবর বিপিএলের মঞ্চে পা রাখলেন, তখন চলতি আসরের সবচেয়ে বড় তারকা তিনিই।
নামের পাশে বড় তারকার মানও রেখেছেন ঠিকভাবে। ৪ ম্যাচের ২ টিতে ফিফটি পেয়েছেন। সেই দুই ম্যাচেই আবার জুটেছে ম্যাচসেরার পুরস্কার। সব মিলিয়ে এবারের বিপিএলে দারুণ সময় কাটাচ্ছেন পাকিস্তানি এ ব্যাটার। বাবর আজমের সামনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের আইএলটি-২০ তে বড় অঙ্কের প্রস্তাব ছিল। তারপরও কেন তিনি বিপিএলকেই বেছে নিলেন?
জনপ্রিয় ক্রিকেট গণমাধ্যম ক্রিকবাজকে শুনিয়েছেন এর অন্তরালের গল্প। মূলত, বাংলাদেশের কন্ডিশনে নিজেকে মানিয়ে নেওয়ার কারণেই বিপিএল বেছে নেওয়া বাবরের। এ নিয়ে তিনি বলেন, ‘এখানকার কন্ডিশনে রান করা বেশ কঠিন। তাছাড়া কোয়ালিটি স্পিনারদের বিপক্ষে খেলতে হয়। আমি এই কঠিন উইকেটেই মূলত খেলতে চেয়েছিলাম। বলা যেতে পারে, প্রতিকূল কন্ডিশনে কীভাবে খেলতে হয় সেই অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করতেই বিপিএল বেছে নিয়েছি।’
২১ জানুয়ারি নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেই বিপিএল খেলার জন্য বাংলাদেশ পাড়ি দেন বাবর। এরপর ২৩ জানুয়ারিই নেমে পড়েন নিজের প্রথম ম্যাচ খেলতে। শুধু নামলেনই না। ৩৯ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ফেলা দলটার জয় এনে দিলেন সময়োপযোগী ফিফটিতে। সেভাবে বিশ্রাম না পেয়েও কীভাবে এমন সব ইনিংস খেলতে পারেন বাবর? এর পিছনে রহস্যই বা কী?
এ প্রশ্নের উত্তরে বাবর জানান, ‘আমার আগে থেকেই বাংলাদেশের উইকেট সম্পর্কে ধারণা ছিল। আর আমরা ক্রিকেটার। ক্রিকেটটাই খেলতে চাই সব সময়। ঐ ম্যাচে আমাদের দ্রুত উইকেট পড়ে গিয়েছিল। আমি কিন্তু তখনই শেষের চিন্তা করিনি। শুধু খেলে গিয়েছি। একটা জুটির দরকার ছিল। যেহেতু লক্ষ্য বড় ছিল না। সেই অনুযায়ী খেলেছি। তাই জয়টাও এসেছে।’
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটকে বলা হয় তারুণ্যের খেলা। তবে বাবর আজম মনে করেন, এই ফরম্যাটে ভাল করার জন্য অভিজ্ঞতাও প্রয়োজন। কারণ তাঁর মতে, ২০ ওভারের ক্রিকেটে এমন কিছু পরিস্থিতি তৈরি হয়, যেখানে শুধু অভিজ্ঞতাই ম্যাচ বের করে দিতে পারে। এ নিয়ে তিনি বলেন, ‘এটা অবশ্যই তরুণদের ফরম্যাট। তবে কোন সময়ে কোন অ্যাপ্রোচে খেলতে হবে, সেই অভিজ্ঞতাটাও প্রয়োজন হয়।’
উপমহাদেশের ক্রিকেটাদের সিংহভাগই ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়ার কন্ডিশনে ঠিকঠাক মানিয়ে নিতে পারেন না। সর্বশেষ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজেও বাবর ছিলেন অফফর্মে। এর মূল কারণ কী? বাবর মনে করেন, ‘এখানে অজুহাত দেওয়ার কোনো কারণ নেই। ওই সব কন্ডিশনে ভাল করতে হলে, অবশ্যই পূর্ণ প্রস্তুতি প্রয়োজন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সেটির অভাবেই মূলত এমন কন্ডিশনে ভাল করতে পারে না উপমহাদেশের ক্রিকেটাররা।’