বিপিএলে কতটা সফল পাকিস্তানিরা?

বিপিএলে পাকিস্তানি ক্রিকেটাররা বরাবরই হটকেক। তবে এবারের বিপিএলের মাঝপথেই দেশে ফিরে যেতে হচ্ছে সিংহভাগ পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের। আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে পাকিস্তান সুপার লিগ (পিএসএল) শুরু হওয়ার কারণে ৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্তই অনাপত্তিপত্র পেয়েছিলেন বাবর-রিজওয়ানরা। তবে যতটুকু খেললেন, তাতে তাঁরা প্রত্যাশা মেটাতে পারলেন কতটুকু? খেলা ৭১ এর অনুসন্ধানে চলুন সেটিই খুঁজে বের করা যাক।

এর আগেও একবার বিপিএল খেলতে এসেছিলেন বাবর আজম। ২০১৭ সালে বিপিএলে সিলেট স্ট্রাইকার্সের হয়ে বাবর অবশ্য তখন উঠতি তারকা হওয়ার পথে ছিলেন। এবার যখন বিপিএলের মঞ্চে পা রাখলেন, তখন তিনিই বিপিএলের সবচেয়ে বড় তারকা। অবশ্য এবারের আসরে নিজের শ্রেষ্ঠত্বের ছাপ রেখেই ফিরে যাচ্ছেন তিনি।

৬ ইনিংসে ৫০.২০ গড়ে রান করেছেন ২৫১। আর তাতেই বিপিএলে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকদের তালিকায় এই মুহূর্তে শীর্ষে অবস্থান করছেন তিনি। নিজের খেলা ৬ ম্যাচের মধ্যে দুইবার ম্যাচসেরা হয়েছেন তিনি। তবুও কোথায় যেন আক্ষেপ রেখে যাচ্ছেন তিনি।

১১৪.৬১ স্ট্রাইকরেটে ব্যাট করা বাবর এই ৬ ম্যাচের কোনোটিতেই সেভাবে ব্যাট হাতে ঝড় তুলতে পারেননি। ২৭ চারের বিপরীতে ওভার বাউন্ডারি হাঁকিয়েছেন মাত্র ২ টা। তারপরও রংপুর রাইডার্সের টপ অর্ডার শক্তহাতে সামলেছিলেন তিনিই।

বাবর যেমন রংপুরের বড় তারকা হয়ে উঠেছিলেন, তার ঠিক উল্টো চিত্র চিত্রায়িত হয়েছে মোহাম্মদ রিজওয়ানের বেলায়। টুর্নামেন্টে নিজের ছায়া হয়েই থেকেছেন এ উইকেটরক্ষক ব্যাটার।

টুর্নামেন্টে সবমিলিয়ে ৫ ম্যাচ খেলে করেছেন মোটে ৮৫ রান। স্ট্রাইকরেটও যাচ্ছেতাই অবস্থা। মোটে ৮২.৫২। যদিও গত আসরে কুমিল্লাকে ফাইনালে তোলার পিছনে রেখেছিলেন ভূমিকা। তবে এবার কড়া পারিশ্রমিকে বিপিএলে আসলেও প্রত্যাশা মেটাতে পারেননি এ ক্রিকেটার।

কুমিল্লার আরেক পাকিস্তানি ক্রিকেটার খুশদিল শাহও সেভাবে এবারের আসর রাঙাতে পারেননি। ৬১ রানের পাশাপাশি ৫ ম্যাচে ৩ উইকেট প্রাপ্তি তাঁর। তবে দলে নবাগত মুখ হিসেবে রীতিমত তাক লাগিয়ে দিয়েছেন আমির জামাল। এখন পর্যন্ত টুর্নামেন্টের একমাত্র ফাইফার এসেছে তাঁর সৌজন্যেই। সব মিলিয়ে ৩ ম্যাচে ৬ উইকেট পেয়েছেন এ পেসার।

এ দিকে দুর্দান্ত ঢাকার হয়ে খেলতে আসা তরুণ পাকিস্তানি ব্যাটার সায়িম আইয়ুবও টুর্নামেন্ট জুড়ে হতাশ করেছেন। ৫ ম্যাচে করেছেন মাত্র ৮০ রান। যার মধ্যে একটি ৩৫ রানের ইনিংস ব্যতিত বলার মতো কোনো ইনিংস খেলতে পারেননি তিনি। একই দলের আরেক পাকিস্তানি স্পিনার উসমান কাদিরও সেভাবে নিজেকে রাঙাতে পারেননি। ৫ ম্যাচে এ লেগির উইকেট শিকার ৫ টি।

এবারের বিপিএলে খুলনা টাইগার্সের হয়ে খেলেছেন দুই পাকিস্তানি মোহাম্মদ ওয়াসিম জুনিয়র আর মোহাম্মদ নওয়াজ। মোহাম্মদ ওয়াসিম ৪ ম্যাচে ৫ টি আর নওয়াজ ৫ ম্যাচে ৫ টি উইকেট নিয়েছেন। তবে ব্যাট হাতে একটি পঞ্চাশোর্ধ রানের ইনিংস খেলেছিলেন এ অলরাউন্ডার। সব মিলিয়ে ব্যাট হাতে ৩ ইনিংসে ১০০ রান করেছেন তিনি।

তবে সিংহভাগ পাকিস্তানি ক্রিকেটার ফিরে গেলেও পিসিবির সঙ্গে চুক্তি না থাকায় শোয়েব মালিক ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত থাকতে পারছেন। তিনি খেলছেন ফরচুন বরিশালের হয়ে। একই দলে খেলছেন আহমেদ শেহজাদও। পিএসএলে দল না পাওয়ায় এই পাকিস্তানি ওপেনারকে টুর্নামেন্টের শেষ অবধিই পাচ্ছে দলটি।

বিপিএলের প্রতি আসরেই আলাদা করে নজর কাড়ে পাকিস্তানি ক্রিকেটাররা। টুর্নামেন্টের মাঝপথে তাঁরা ফিরে যাওয়াতে বিপিএলের ক্যানভাসে রঙ হারাবে ঠিকই, তবে আগের আসরগুলোর মতো এবারে তাঁরা পারফর্মও করতে পারেননি।

এখন পর্যন্ত সেরা দশ ব্যাটার, কিংবা বোলার তালিকায় সব মিলিয়ে রয়েছেন শুধুই বাবর। বাকিদের মধ্যে কেউ ব্যর্থতার গ্লানি মেখেছেন, কেউ গড়পড়তা পারফর্ম করেছেন। মোদ্দাকথা, এবারের আসরে সেভাবে নিজেদের মেলে ধরতে পারেনি পাকিস্তানিরা।

লেখক পরিচিতি

বাইশ গজ ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্ত অঙ্কন করার চেষ্টা করি...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link